দেশের প্রায় সব সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার করোনা চিকিৎসার আওতায় আসতে যাচ্ছে। তবে সেগুলো কমপক্ষে ৫০ শয্যার হতে হবে। এরপরই সেখানকার কভিড ও নন কভিড রোগীদের আলাদা করে চিকিসাৎসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এতে বিদ্যমান হাসপাতালগুলোর ওপর রোগীর চাপ কমবে বলে মনে হলেও, সংক্রমণ ঝুঁকি ও ব্যবস্থাপনাগত জটিলতার শংকা রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সার্বিক বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। রাজধানীতে এ হার সর্বোচ্চ। এসব আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে, সরকারি হাসপাতাল নির্ধারণের পর তা কম সংখ্যক হওয়ায়, কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালও এগিয়ে আসে।
বর্তমানে ঢাকায় ৬টি সরকারি ও আরো ৬টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা চলছে। এসব হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। এরমধ্যে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল বাদে প্রায় প্রতিটিরই ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগী বেশি। সমন্বয় করে তাদের চিকিৎসাসেবা চালাতে হচ্ছে।
করোনায় আক্রান্ত বিপদাপন্ন রোগীর জন্য আইসিইউ অপরিহার্য হলেও এর সংখ্যা খুবই কম। বাবুবাজারের মহানগর জেনারেল হাসপাতাল এবং মিরপুরের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য হাসপাতালে ৫ শয্যার আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের কাজও শেষ হয়নি। রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপনের মতো অবস্থাই নেই। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও আইসিইউতে চাহিদার চেয়ে আসন সংখ্যা সীমিত।
এমন বাস্তবতায় ৫০ শয্যার বেশি, সরকারি-বেসরকারি দেশের এমন সব হাসপাতালগুলোকে করোনা হাসপাতাল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে সরকার। তবে প্রশ্ন উঠেছে, সংক্রমণ ঠেকানোর ব্যবস্থা নিয়ে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, করোনায় আক্রান্ত্রদের যদি অন্যান্য রোগী থেকে আলাদ করে চিকিৎসা দেয়া হয় তাহলে কিন্তু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না। এছাড়া যারা তাদের চিকিৎসা দিবে তাদেরকেও যথাযথ নিরাপত্তা মেনে থাকতে হবে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলোর ব্যবস্থাপনায় মনোযোগী হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্টরা।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, যে ব্যবস্থাপনা দরকার সেই ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো সম্পর্কে আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিতে হবে। এই নির্দেশনা দেয়ার পরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র বাস্তবায়ন করা উচিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক প্রফেসর ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, এটি বাস্তবায়ন করা জটিল কিছু নয়। আমরা যদি কোথাও কোথাও সামান্য অবকাঠামোগত কিছুটা পরিবর্তন করি, তাহলেই সম্ভব।
পরিপত্রের মাঝে সীমাবদ্ধ না থেকে দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদও দেন তারা।
বিদ্যমান হাসপাতালগুলোর মধ্যে মহাখালীতে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাসেবা শুরু হয়নি। তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতাল পুলিশ প্রশাসন দুইমাসের জন্য ভাড়া নিয়েছে। আইসোলেশন কেন্দ্র হিসেবে কুড়িলে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার ও মহাখালীর ঢাকা উত্তর সিটির মার্কেটের কাজ শিগগিরই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন