শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

২৭ দিনে ৩০২ ও ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যু

ঢামেকের করোনা ইউনিট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০২০, ১২:১৪ এএম

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) করোনা ইউনিট চালু হওয়ারর পর থেকে (গত ২মে) গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ২৭দিনে মোট নারী ও পুরুষ মিলে ৩০২জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৭০জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান এবং অন্যরা করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ঢামেকের করোনা ইউনিটে ১৪জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২জন মহিলাসহ অন্যান্যরা করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। শুরু থেকে গতকাল ঢামেকের করোনা ইউনিটে ২৫০০ চিকিৎসা নিয়েছেন। শিশুসহ বর্তমানে ৩৫৫জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সংগ্রহ করা প্লাজমা রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কোভিড ১৯-এ রোগে আক্রান্ত শ্বাসকষ্টে ভোগা ৬ জন রোগীকে সংগ্রহ করা প্লাজমা থেরাপি দেয়া হয়েছে। হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ও প্লাজমা থেরাপির সাব কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ খান এ সব তথ্য জানান।

তিনি জানান , ঈদের আগে থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬ জন রোগীকে প্লাজমা থেরাপি দেয়া হয়েছে। যারা শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। পরীক্ষামূলক চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হয়েছে। রোগীদের শরীরে প্লাজমা থেরাপি দেয়ার পর তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। প্লাজমা সংগ্রহ শুরু হওয়ার কার্যক্রম থেকে বুধবার পর্যন্ত ১৯জন করোনা জয়ীর কাছ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়েছে। ডোনার পেলেই হাসপাতালে প্রতিদিন প্লাজমার সংগ্রহ কার্যক্রম চলতে থাকে। বুধবার তিনজন করোনা জয়ী প্লাজমা দিয়েছেন। তারা হলেন- মাশরুফ তাহমিম মল্লিক ও তার বোন মাহফারা তাসমিম এবং স্বাস্থ্যকর্মী কামরুজ্জামান তৌফিক।

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মজিবুর রহমান জানান, হাসপাতালের নতুন ভবন কোভিড ইউনিট -২ এ ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ৪শত রোগী ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে অনেক রোগী আছে করোনার পাশাপাশি তাদের ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। এছাড়া বেশ কয়েকজন রোগী আইসিইউতে আছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, করোনা ইউনিটে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী ছাড়া উপসর্গ আছে এমন রোগী, নিউরো সার্জারি, অর্থোপেডিক্স, শিশু বিভাগের রোগীরাও চিকিৎসা পাচ্ছেন। এমনকি করোনা আক্রান্ত অন্তঃসত্ত¡া নারীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই অনেক সাধারণ রোগী আছে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে শেষ মুহুর্তে ঢামেকে আসেন। যখন আসে তখন চিকিৎসকদের আর কিছু করার থাকে না। এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমন দাবি করলেও করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী, রোগীর স্বজন, মৃত রোগীর স্বজনরা ভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এখানে আসা গুরুত্বর অসুস্থ অনেক রোগী সময়মতো সেবা পাননা বলেও কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ও প্লাজমা থেরাপির জন্য গঠিত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ খান বলেন, যারা প্লাজমা দিচ্ছেন তাদের ভয়ের কোনও কারণ নেই, তারা নিরাপদ থাকবেন। কোনও ধরনের রি-ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের প্রতি অনুরোধ, আপনার দেয়া প্লাজমাতে সুস্থ হতে পারেন আরেকজন মানুষ। তাই সবাইকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি।

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমকেএম নাছির উদ্দীন বলেন, করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা সবাই করোনা আক্রান্ত নন। তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এখানে ভর্তি হয়েছেন। পাশাপাশি তাদের শ্বাসকষ্ট ও কাশির মতো করোনার উপসর্গ ছিল। যাদের রেজাল্ট পাওয়া গেছে তাদের বাইরে যারা আমাদের এখানে মারা গেছেন, তাদেরও করোনা সাসপেক্ট হিসেবে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার রেজাল্ট পেলে তারা আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন