মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সরকারি যানবাহনেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০২০, ১২:১১ এএম

দুই মাস লকডাউনে থাকার পর চালু হয়েছে সরকারি অফিস। লকডাউন খোলার পর প্রথম দিনে রাজধানীতে অফিস-আদালত-ব্যাংকের কর্মচারীদের বহণকারী কিছু গণপরিবহনে শুধু শারীরিক দূরত্বে বসার মাধ্যমেই স্বাস্থ্যবিধি সীমাবদ্ধ ছিল। তবে বেশিরভাগ গণপরিবহনে সেটিও মানা হয়নি। বিশেষ করে পরিবহন পুলের (সরকারি) পরিবহনে সিট ফাঁকা রেখে বসতে দেখা যায়নি। বাসে ছিল না হ্যান্ডস্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশকের মতো কোনও সুরক্ষা সামগ্রী। তবে সতর্কতা ছিল যাত্রীদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে।

গতকাল রোববার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। সকালে পল্টন মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, একের পর এক সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টাফ বাস আসছে। বাসগুলোর অধিকাংশেই ছিল না সামাজিক দূরত্ব। পাশাপাশি দুটি করে আসন দেখা গেলেও প্রতিটি আসনেই যাত্রী বসানো হয়েছে। গাড়ির প্রবেশ মুখে হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক রাখার কথা থাকলেও অনেক গাড়িতে তা দেখা যায়নি।

পরিবহণপুলের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ১১-০৩০৬ নম্বর গাড়িটিতে দেখা গেছে প্রতিটি আসনেই যাত্রী বসেছেন। কোনও আসন ফাঁকা রাখা হয়নি। একই সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি স্টাফ বাসেও একই চিত্র দেখা যায়। তবে ব্যতিক্রমও দেখা গেছে কিছু গাড়িতে। সেগুলোতেও আসন ফাঁকা ছাড়া অন্য স্বাস্থ্যবিধির উপস্থিতি ছিল না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা দক্ষিণের পরিবহন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, এই গাড়িগুলোর অধিকাংশই লিজের মাধ্যমে নেওয়া। আর গাড়ির আসনগুলো একেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামে বরাদ্দ। তাই কেউ তার আসন ফাঁকা রাখতে চায় না। সবাই উঠে বসে যায়। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবেন। মোছা. বিলকিস আক্তার নামে একজন সরকারি কর্মচারী বলেন, অফিস খুলেছে। সচিবালয়ে যাবো। বাসগুলোতে আসন ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না। রিকশায় ভাড়া অনেক। স্বাস্থ্যবিধি বলতে একটা যে বিধান করা হয়েছে তা যেন কেউ জানেও না। সরকারের তদারকিও নেই।

অফিস খোলার প্রথম দিন মহানগরীর সড়কে গণপরিবহন সংখ্যা ছিল খুবই কম। গণপরিবহনে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি চিন্তা করে কর্মজীবী মানুষের অনেককেই রিকশা ও সিএনজিতে অফিসে যেতে দেখা যায়। তাদের দাবি বাসে মানুষের উপস্থিতি বেশি। রিকশায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হয়। তবে জীবাণুনাশক না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তারা নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে সরকারের পক্ষ থেকে জীবনাণুনাশক রাখার দাবি জানিয়েছেন।

বেসরকারি অফিসে কাজ করেন মো. গিয়াস উদ্দিন ফারুক নামে একজন রিকশা যাত্রী বলেন, বাসে অনেক গাদাগাদি হয়। রিকশায় সেটা একটু মুক্ত থাকে। কিন্তু আমার আগে যিনি এটি ব্যবহার করে গেছেন তিনি সুস্থ ছিলেন নাকি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন, সেটা তো আর আমি বলতে পারছি না। তাই উচিত প্রতিবারই রিকশা, সিএনজিসহ অন্যান্য পরিবহন জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করা।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ি মোড, ফকিরাপুল মোড় ও খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় দেখা যায় গণপরিবহনের সংখ্যা খুবই কম। তবে যে কয়টি ছিল সেগুলোর আসন ভর্তি। এই অবস্থায়ও পরিবহনগুলোর হেলপাররা যাত্রী ডাকতে থাকলেও সাধারণ মানুষকে বাসগুলোতে উঠতে কম দেখা যায়। তুলনামূলক অল্প দূরত্বে অনেকেই হেঁটে অফিসের উদ্দেশে যাত্রা করেন। আবার কেউ কেউ রিকশা কিংবা সিএনজিতে অফিসের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

বাসাবো-গুলিস্তান রুটে লেগুনা চলাচল করে। রাজারবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কর্মজীবীরা পরিবহনের জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করছেন। লেগুনা রাজারবাগ, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা হয়ে গুলিস্তান যায়। এই গাড়িগুলোতে কোনও জায়গা ফাঁকা নেই। যাত্রীরা গাদাগাদি করে বসেছেন। এমনকি পা দানিতেও যাত্রী দাঁড়িয়ে নেয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসন ফাঁকা রেখে অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার বিধান করা হলেও তা মানা হচ্ছে না। ভাড়াও আদায় করা হচ্ছে আগের থেকে দ্বিগুণ। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, প্রথম দিন অফিস খুলেছে। করোনার ভয়ের মধ্যেই বাধ্য হয়েই তাদের গাদাগাদি করে যেতে হচ্ছে। যাত্রাবাড়ি, ধোলাইপাড় এলাকায়ও দেখা গেছে অফিসমুখী গাড়িগুলোতে সবগুলো সিটে যাত্রী বসানো হয়েছে। ##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন