বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভালো কলেজে ভর্তিই এখন চ্যালেঞ্জ

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০২০, ১২:১১ এএম

এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে গত রোববার। এবার এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮জন। গুরুত্বপূর্ণ এই পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফল করায় উল্লোসিত হয়েছেন শিক্ষর্থী ও অভিভাবকরা। তবে নির্ভার হতে পারছেন না। ভালো ফলের পর এখন চ্যালেঞ্জ এসেছে ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া। যদিও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকলেই কলেজে ভর্তি হতে পারবেন কিন্তু পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হিমশিম খেতে হবে ভালো ফলাফল করা ভর্তিচ্ছুদের। প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকা মহানগরীর শীর্ষ তালিকায় থাকা কলেজগুলোতে নজর থাকবে তাদের।
৬ জুন থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পরিকল্পনা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন সেটি পিছিয়ে দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা নিয়ে শঙ্কার কারণেই চলতি মাসে ভর্তি কার্যক্রম শুরু নাও হতে পারে। এজন্য এখনো ভর্তির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। তবে শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে যেনো বিড়ম্বনা না থাকে এজন্য গতবছর সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলোকে শিক্ষার্থী সংখ্যা ও এইচএসসি ফলাফলের ভিত্তিতে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ এই তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে দিয়েছিল ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ৮২টি, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৪৫টি এবং ৮৯৩টি কলেজের বাকিগুলো ‘সি’ ক্যাটাগরিভুক্ত কলেজের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এবার এই সংখ্যা বাড়তেও পারে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যাতে বিভ্রান্তি ও প্রতারণার শিকার না হয় সে জন্য কোন কলেজ কোন শ্রেণিতে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় ‘এ’ ক্যাটাগরির কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা রয়েছে ৫৭ হাজার এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির কলেজে রয়েছে ৫২ হাজার। অন্যদিকে চলতি বছর সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন। আবার নিজ নিজ কলেজ থেকে কম জিপিএ পেলেও ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন এসএসসিতে উত্তীর্ণরা। সে হিসেবে রাজধানীর নামিদামি কলেজগুলোতে এবারও ভর্তির ক্ষেত্রে ভিড় থাকবে দেশ সেরা মেধাবীদের।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর হারুন-অর-রশিদ জানান, সাধারণত ঢাকা মহানগরের কলেজে ভর্তিতে বেশি সঙ্কট তৈরি হয়। মেধাবীরা নির্দিষ্ট কিছু কলেজে ভর্তির আবেদন করে। এতে অনেকেই ভর্তি বঞ্চিত হয়। কিন্তু এসব কলেজের বাইরেও অনেক ভালো কলেজ আছে তা বোঝাতেই এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকায় ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’ নামে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, যেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ন্যূনতম ৬শ’ এবং পাসের হার ন্যূনতম ৭০ শতাংশ, সেসব প্রতিষ্ঠান ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত। যেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ৬শ’ এবং পাসের হার ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ সেগুলো ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত এবং অবশিষ্ট কলেজ ‘সি’ ক্যাটাগরিভুক্ত।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, দেশে একাদশ শ্রেণিতে পড়ানোর মতো কলেজ ও মাদরাসা আছে ৭ হাজার ৩৬৩টি। এর মধ্যে কলেজ ৪ হাজার ৬০০টি। গত বছর এসব কলেজ ও মাদরাসায় একাদশে আসন ছিল ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৬০৫টি। এবারও প্রায় একই থাকছে। অন্যদিকে এবার এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে প্রায় ১৭ লাখ। ফলে প্রায় ১২ লাখ আসন খালি থাকবে। এর ফলে গ্রামাঞ্চলের অনেক কলেজ শিক্ষার্থী পাবে না।
তবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে সবসময় সঙ্কট তৈরি হয় ঢাকা মহানগরির কলেজগুলোতে। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের টার্গেট থাকে এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া। তাই হাতেগোনা কিছু কলেজেই প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তবে ভর্তিচ্ছুদের কাছে প্রতিবছর বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরের আরও শতাধিক কলেজ আকর্ষণীয় থাকে। এগুলোর মধ্যে- রংপুর বিভাগে ৩২টি, বরিশাল বিভাগে ১৪টি, রাজশাহীতে ৭, চট্টগ্রামে ১৯, খুলনায় ১৩ এবং সিলেট বিভাগে ২৩টি। এ ছাড়া সারা দেশে অর্ধশত মাদরাসা শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে আছে। এসব কলেজ-মাদরাসায় স্ব স্ব বিভাগের জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা ভিড় করলে সবার সংস্থান হবে না। শিক্ষার্থীদের অতীতের ভর্তির আবেদন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের বাইরে মাদরাসা এবং কারিগরি বোর্ড থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরাও ভর্তির আবেদন করবেন।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেন, জুন মাসে কলেজে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। ভর্তি প্রক্রিয়াটা আরেকটু পরে শুরু করা হবে। পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ভর্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরের কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য সকলের আগ্রহ থাকে। হাতেগোনা কয়েকটি কলেজে শিক্ষার্থীরা ভিড় করে। তবে ঢাকা মহানগর ও ঢাকার বাইরে অনেক ভালো কলেজ আছে। গতবছর আমরা এটি চিহ্নিত করে দিয়েছি। #

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন