বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

করোনা চিকিৎসায় বিশ্বে প্রথমবারের মতো ওষুধ প্রয়োগ শুরু রাশিয়ায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০২০, ৫:০৪ পিএম

করোনা নিরাময়ে দেশে-বিদেশে নানা গবেষণা চলছে। পরীক্ষাধীন ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু করেছে কিছু দেশ। তবে রাশিয়াই প্রথম আগামী সপ্তাহ থেকে রোগীদের পরীক্ষাকৃত ওষুধ দিতে শুরু করবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদনও পেয়ে গিয়েছে তারা। পাশপাশি, জাপানও এই ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছে। এদিকে, থাইল্যান্ডের নিজস্ব ভ্যাকসিনও প্রাথমিক পরীক্ষায় সফল হয়েছে। এটি সম্পন্ন করা গেলে দেশটিতে চিকিৎসা সেবা নিতে আরও বেশি বিদেশী রোগি আসবে বলে আশাবাদী সরকার।

রাশিয়ার অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটির নাম রাখা হয়েছে ‘আভিফাভিয়ার’। ১১ জুন থেকে রোগীদের এই ওষুধ দেয়া যেতে পারে বলে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাসে ৬০ হাজার জনকে ওই ওষুধের জোগান দিতে পারবে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা।

‘আভিফাভিয়ার’ ওষুধটির জেনেরিক নাম ‘ফাভিপিরাভিয়ার’। ১৯৯০-এর শেষের দিকে সেটি তৈরি করে জাপানের একটি সংস্থা। আরএনএ ভাইরাস প্রতিরোধে ভাল কাজ দেয় ওষুধটি। ‘রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’-এর প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ জানিয়েছেন, ‘ফাভিপিরাভিয়ার’-এর ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে নতুন ওষুধটি তৈরি করা হয়েছে। এর গুণাগুণ কী বাড়ানো হয়েছে, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে তা প্রকাশ করবে মস্কো।

জাপানেও এই ওষুধটির প্রয়োগ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। সেখানে এর নাম ‘আভিগান’। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এক প্রকার অনুমোদনও দিয়ে ফেলেছেন। এবং এই খাতে ১২ কোটি ৮০ লাখ ডলার সরকারি তহবিল থেকেও দিয়েছেন। কিন্তু সেখানে রোগীদের উপর প্রয়োগের ছাড়পত্র এখনও মেলেনি।

এদিকে, গতমাস থেকে থাইল্যান্ড তাদের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন বানরের উপরে পরীক্ষা শুরু করেছে। দেশটির সরকার আশাবাদী যে, তারা আগামী বছরের মধ্যে একটি কার্যকর ভ্যাকসিন প্রস্তুত করে ফেলতে পারবে।

সরকার এবং ব্যাংককের একটি শীর্ষ ইউনিভার্সিটির সাথে কাজ করা স্থানীয় সংস্থা বিওনেট-এশিয়া এই ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়টি সমন্বয় করছে। তারা অন্যান্য সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ রেখে তাদের ২৫০ জন কর্মী, ল্যাব, প্রযুক্তি এবং কারখানাগুলো এ কাজে নিবেদিত করেছে। প্রতিষ্ঠানটির সিইও ফ্যাম হং থাই বলেন, ‘কোভিডের ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, তথ্য ভাগ করে নেয়া, ডায়াগনস্টিকস ভাগ করে নেয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টা রয়েছে এবং এ কারণেই আমরা খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার মতো অবস্থানে রয়েছি।’ তিনি জানান, প্রাণীদের উপর পরীক্ষায় এই পর্যন্ত উৎসাহজনক ফলাফল পাওয়া গেছে। পরবর্তী পদক্ষেপে মানুষের উপরে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য সরকারের অনুমোদন চাওয়া হবে।

জনস্বাস্থ্য মন্ত্রী অনুটিন চার্নভিরাকুল বলেছেন, ‘থাইল্যান্ডে একটি ভাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও ভাল চিকিৎসা অনুশীলন রয়েছে। এটি পর্যটক এবং বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রচুর আগ্রহ অর্জন করবে এবং একটি মেডিকেল হাব হিসাবে আমাদের গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলবে।

প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে কোভিড-১৯-এর কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। ‘গিলিড’-এর ওষুধ ‘রেমডেসিভিয়ার’ আশার আলো দেখাচ্ছে। কিন্তু সার্বিক ভাবে ব্যবহারের ছাড়পত্র পায়নি। সামান্য কিছু দেশে অল্পসংখ্যক রোগীকে ওষুধটি দেওয়া হয়েছিল। সবাই সমান ফলও পাননি। ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চ্যাডক্স১’ নামে একটি প্রতিষেধকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে। গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীদের দাবি, তাদের প্রতিষেধক সাফল্য পাবে। সূত্র: রয়টার্স, সিএনবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন