গার্মেন্টস কারখানায় প্রবেশের সময় শ্রমিকদের লাইন ধরে প্রবেশ করতে হচ্ছে। ব্যবহার করতে হচ্ছে মাস্ক, মাপা হচ্ছে তাপমাত্রাও। ভেতরেও বেশ কিছু কারখানায় লাইনগুলো ফাঁকা রাখা হয়েছে। কাজ শেষে শ্রমিকরাও বের হচ্ছেন লাইন ধরে। তবে কারখানায় আসা-যাওয়ার পথে স্বাস্থ্যবিধির কোনোটাই শ্রমিকদের পক্ষে মানা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কারখানার এসব স্বাস্থ্যবিধি কোনো কাজে আসবে না বলে শঙ্কা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের বক্তব্য স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব রক্ষার নামে যা করা হচ্ছে সবই লোক দেখানো।
শ্রমিক নেতারা জানান, কারখানার প্রবেশমুখে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। শ্রমিকদের সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে পড়তে হচ্ছে মাস্ক। কিন্তু কারখানার ভেতরে সারাদিন কাজের সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। আর ছুটির সময় অধিকাংশ শ্রমিকই দলে দলে বের হচ্ছে। বাসায় ফেরার পথেও মানা হয় না সামাজিক দূরত্ব। ছোট ছোট রুমে বসবাসের ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।
শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রসঙ্গে বিজিএমইএ‘র সভাপতি রুবানা হক বলেন, শ্রমিকরা আসা-যাওয়া করে বাসা বাড়ি থেকে। পথে তারা কী করে তা তো আমাদের দ্বারা বলা মুশকিল। সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, আমরা সতর্কতা অবলম্বন করে ফ্যাক্টরি চালাচ্ছি। এখানে কোন শর্ট ফর্মুলা নেই। পুরোটা মেনেই কারখানা চলছে। এখানে সবাই সতর্ক। শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হওয়ার সময় স্বাস্থ্যবিধি মানছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন সবাই বুঝে গেছে। আগে শ্রমিকরা দলবেঁধে বের হতো। এখন আর দলবেঁধে বের হয় না। তবে বিকেএমইএ’র প্রথম সহ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম স্বীকার করেছেন, কারখানায় নয় বরং শ্রমিকরা দলবেঁধে গা ঘেঁষে বাসায় ফিরছে। একই বাসায় একই বিছানায় কয়েকজন অবস্থান করছে, করোনা মোকাবিলায় এই বিষয়টি তাদের ভাবিয়ে তুলছে।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, গার্মেন্টস খোলা নিয়ে সরকার প্রথম থেকেই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তৈরি পোশাকের ফ্যাক্টরিগুলো খোলার মধ্য দিয়ে শ্রমিক ও দেশের মানুষকে সরকার করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছে। শিল্প পুলিশের তথ্যমতে ২৮ মে পর্যন্ত ৯০টি কারখানায় ১৯১ শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো হাজারের বেশি শ্রমিকের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা এখন জ্বরে আক্রান্ত। তাদের টেস্ট করানো যাচ্ছে না। সংখ্যাটি হাজারের কম হবে না।
বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি পুরো মানা হচ্ছে না। গাজীপুর-আশুলিয়ার বেশ কিছু কারখানায় তা দেখা গেছে। শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশের সময় লাইন ধরে প্রবেশ করলেও বের হওয়ার সময় একসঙ্গে বের হচ্ছে। রাস্তায় দলেদলে একসঙ্গে চলাফেরা করছে। শুধু মাস্ক ব্যবহার করলে তো আর হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন