ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনার পুর্বধলা উপজেলার সীমান্তবর্তী কাপাশিয়া গ্রামবাসী ও পাশ্ববর্তী ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার পুড়াকান্দুলিয়া গ্রামবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় দুই গ্রামবাসীর মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কাপাশিয়া স্কুল মাঠে পূর্বধলার বোলিয়াকান্দা গ্রাম বনাম ধোবাউড়ার পুড়াকান্দুলিয়া গ্রামের মধ্যে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়। খেলা চলাকালে একাধিক ফাউল করাকে কেন্দ্র দু পক্ষের খেলোয়ারদের মাঝে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এই উত্তেজনা মূহুর্তে খেলার মাঠের বাইরে সমর্থক গ্রামবাসীর মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুড়াকান্দুলিয়া গ্রামবাসী কাপাশিয়া ঈদগাঁহ্ মাঠে সংলগ্ন মসজিদ ও বেশ কয়েকটি দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। কাপাশিয়া গ্রামবাসী তাদেরকে বাঁধা দিলে দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় সন্ধ্যার পর পুড়াকান্দুলিয়া গ্রামের দোলোয়ার, বাবলু, মিয়া হোসেনের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে কাপাশিয়া ব্রীজ অতিক্রম করে পূনরায় বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।
এ ঘটনার জের ধরে বুধবার সকাল থেকেই কংশ নদীর দুই পাড়ের দুই উপজেলার দুই গ্রামের মানুষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা কংশ নদীর উপর ব্রীজটিতে গাছের ডালপালা ও বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে ব্রীজের দুই পাশে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। ব্যারিকেট দিয়ে ব্রীজটি বন্ধ করে দেয়ায় সকল প্রকার যানবাহনসহ দুই উপজেলার সাধারণ মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা কার্যকর কোন উদ্যোগ না নেয়ায় যে কোন সময় বড় ধরণের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে এলাকাবাসী।
কাপাশিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ আহসান, ব্যবসায়ী লিজন মিয়াসহ এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুড়াকান্দুলিয়া গ্রামের সন্ত্রাসীরা কাপাশিয়া ঈদগাহ্ মাঠ সংলগ্ন টিনের তৈরী মসজিদসহ অসংখ্য দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। ক্ষতিপুরণ সহ সন্ত্রাসী হামলার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত ধোবাউড়ার (ময়মনসিংহ) সাথে ও পূর্বধলা (নেত্রকোনা) উপজেলার সকল যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকবে। এ ব্যাপারে কাপাশিয়াবাসী বুধবার সন্ধ্যায় পূর্বধলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তাওহীদূর রহমান প্রীতি ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত থানায় কোন পক্ষই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। বিকালের দিকে দুই গ্রামবাসীর সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার আবারও দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন