বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

উপকূলবাসীর ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই

একযুগেও ফেরেনি স্বাভাবিকতা নানামুখী সমস্যায় লাখো মানুষ

আবু হেনা মুক্তি : | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

সিডর আইলা বুলবুল এবং সর্বশেষ আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত উপক‚লবাসী আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। গত এক যুগ ধরে এ যেন উপকূলবাসীর জীবন যুদ্ধের রুটিন ওয়ার্ক। সহজ সরল মানুষগুলো আজ প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করতে করতে পরিণত হয়েছে সাহসী যোদ্ধা হিসেবে।
লড়াকু উপকূলবাসী আজও ফিরে আসতে পারেনি স্বাভাবিক জীবনে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া রাস্তাঘাট আর বৃক্ষরাজি শূন্য গোটা জনপদ সিডর-আইলার একযুগ পরেও স্বাক্ষ্য দিচ্ছে এ অঞ্চলের উপর বয়ে যাওয়া প্রলয়ের।
এখনও সে নির্মম ভয়াল দিনগুলির দৃশ্য মনে পড়লেই স্বজন হারা পরিবারগুলো ডুকরে ডুকরে কেঁদে ওঠে। তারপরও বার বার তছনছ হয়ে যাওয়া উপকূলবাসী বেঁচে থাকার নিরন্তর প্রচেষ্টায় লড়াকু সৈনিকের মত প্রতিনিয়ত চলছে তাদের লড়াই।
এ লড়াইয়ের সাথে রয়েছে বিশুদ্ধ পানীর, জ্বালানীসহ কর্মসংস্থানের তীব্র সঙ্কট। বার বার দুর্যোগে সমগ্র এলাকাকে করে তুলছে বিচ্ছিন্ন কোন দুর্গম জনপদে। তাদের জিজ্ঞাসা এ লড়াইয়ের কি কোন শেষ নেই?
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরের আঘাতে তছনছ হয় দক্ষিণাঞ্চলের গোটা উপক‚লীয় এলাকা। ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলার তান্ডবে লন্ডভন্ড হয় এ অঞ্চলের জনপদ। গেল বছর বুলবুল উপক‚লবাসীকে কাঁদিয়ে তার ঘাঁ শুকাতে না শুকাতেই আম্পানে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেয় উপক‚লের জনবসতি। প্রকৃতি আর নিয়তির সাথে উপক‚লবাসীর এ যেন নিত্যদিনের বেঁচে থাকার লড়াই।
ঝড় আসে ঝড় যায়। বাঁধ ভাঙে বাঁধ মেরামত হয়। কিন্তু টেকসই বাঁধ নির্মাণের মেগা প্রকল্প কেবল লাল ফিতার দৌরাত্মেই বন্দি থেকে যায়।
প্রতিবছর প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ে বাঁধ ভেঙে কোটি কোটি টাকার ফসল, চিংড়ি, ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ভেসে যায়। উপক‚লের লাখ লাখ পরিবার পথে বসে যায়। তারপরও তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রানন্ত চেষ্টা চলে অবিরাম। শত প্রতিকূলতায়ও তারা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বার বার। তবে প্রতিনিয়ত দুর্যোগের আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করেন উপকূলবাসী। কিন্তু আজও তারা ভ‚লতে পারেনি সে সব দিনগুলোর ভয়াল স্মৃতি। দুর্বিষহ সে সব দিনের কথা মনে করে আজও কেঁদে ওঠে স্বজনহারা মানুষগুলো।
আম্পান ও আইলার মত দুর্যোগকে জয় করা অসম্ভব সাহসী মানুষেরগুলো বর্তমানের প্রাণের দাবি টেকসই বাঁধ নির্মাণ আর পুনর্বাসনে সরকারি সহায়তা। আজ প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করা মানুষগুলো বাঁধ নির্মাণে কারও অপেক্ষায় বসে নেই। নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে নারী পুরুষ মিলে দিন রাত পরিশ্রম করে বাঁধ আটকাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়রার সদরের বাঁধ আটকানো সম্ভব হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আরও কয়েকটি বাঁধ আটকানো সম্ভব হবে। এভাবেই প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে উপক‚লের বঞ্চিত মানুষগুলো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
* শওকত আকবর * ৪ জুন, ২০২০, ৯:২৭ পিএম says : 0
আমরা যারা দখ্খিনান্চলের উপকুলিয় জেলার সমুহের বাসিন্দা।আমরা জীবন মরন এই দুই নদীর মোহনায় দাড়িয়েই বেঁচে থাকি।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন