বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বন্যার সাথে ভাঙন : নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ত্রাণ সহায়তা অপ্রতুল
ইনকিলাব ডেস্ক : দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির ধারাবাহিক অনবতি হচ্ছে। গতকাল উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পানিবৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ পর্যায়ে বন্যার সাথে সড়ক ও বাঁধে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। একই সাথে নদীর ভাঙ্গন ও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এদিকে ভুক্তভোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন অনেকে।
কুড়িগ্রামে ত্রাণের জন্য হাহাকার
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদাতা : গতকাল রোববার কুড়িগ্রাম জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। সাত দিন ধরে পানিবন্দি মানুষের হাতে কাজ নেই। ঘরে খাবার নেই। খাবার থাকলেও নেই জ¦ালানী, তরিতরকারি, লবণ,তেল, মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ফলে এখন ঘরে ঘরে খাদ্যের জন্য হাহাকার বিরাজ করছে। ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়া ২লক্ষাধিক মানুষের দিনকাটে অর্ধাহার-অনাহারে। এখন পর্যন্ত সরকারি ভাবে বন্যাুূর্গত মানুষের জন্য বরাদ্দ মিলেছে ১৯২টন চাল ও ৮লাখ ৭৫ হাজার টাকা। যা মাথাপিছু বরাদ্দ দাঁড়ায় ৯৬০গ্রাম চাল ও ৪টাকা ৩৭ পয়সা। ফলে প্রতিদিন জনপ্রতিনিধিদের বাড়িতে বাড়ছে ভুখা মানুষের ভিড়।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজার রহমান জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ও ধরলায় বিপদসীমার ৭০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ৯ উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নে বন্যার পানি হানা দিয়েছে।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বাবুর চরের সফিকুল ইসলাম(৪০),আব্দুর রশিদ (৫০), কমর উদ্দি (৬০), চর গুজিমারীর বাদশা মিয়া (৫৫),আব্দুস সালাম (৪৫) জানান, তাদের ভাগ্যে এখন পর্যন্ত সরকারি কিংবা বে-সরকারি কোন ত্রাণ জোটেনি। অর্ধাহার অনাহারে দিন কাটছে। এ ব্যাপারে ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের ৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি। এখন পর্যন্ত রিলিফ পেয়েছেন মাত্র ৪টন চাল। ১০ কেজি করে দিলে সর্বোচ্চ ৪শত মানুষকে দেয়া সম্ভব। বাকিদের ভাগ্যে জোটবে না ত্রাণ এটাই স্বাভাবিক। প্রতিদিন শত শত মানুষ বাড়িতে ভিড় করে ত্রাণের আশায়।
সারিয়াকান্দিতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি
বগুড়া অফিস ঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনায় পানি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল সকালে সারিয়াকান্দির কাছে পানি বিপদ সীমার ৩০সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের পূর্ব এলাকায় ৬টি ইউনিয়নে কমপক্ষে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি ও ৪২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে পানি উঠে পড়ায় শিক্ষার্থীরা আশা বন্ধ করে দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চালুয়াবাড়ী, হাটশেরপুর, কাজলা, কর্ণিবাড়ী, চন্দনবাইশা, বোহাইল, কামালপুর, সদর ও কুতুবপুর ইউনিয়ানের আংশিক এলাকায় যমুনা নদীর পানি ঢুকে পড়ায় নিচু এলাকার জনবসতি বাড়িঘরে ২/৩ ফুট করে পানি ঢুকে পড়েছে। এসব পানিবন্দি লোকেরা ঘরের মধ্য উচু মাচা তৈরি করেছেন আবার কেউ কেউ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উচু স্থানে কোনমতে মাথা গুঁজে আছে। গতকাল স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান আনুষ্ঠানিক ভাবে বোহাইল, কামালপুর, চন্দনবাইশা ও কুতুবপুর ইউনিয়নের জিআর এর চাল বিতরণ উদ্বোধন করেছেন। এসময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সরওয়ার আলম ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন। পানিবন্দি লোকেরা অভিযোগ করে বলেন, তাদের মধ্য বিশুদ্ধ পানি, রান্না করার অভাবে খাদ্যের অভাব ছাড়াও গরু ছাগল নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। যেটুকু ত্রাণের চাল বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। স্থানীয় ম্যানিজিং কমিটির ব্যবস্থাপনায় পাঠদান কার্যক্রম সচল রয়েছে।

শাহজাদপুরে পানিবন্দি ১০ হাজার পরিবারের দুর্ভোগ চরমে
সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা ঃ
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা এলাকার বন্যা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনোতি ঘটছে। গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টিপাত, উজান থেকে নেমে আসা পানিতে যমুনা, করতোয়া,বড়াল ও ইছামতি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার নি¤œাঞ্চল হিসেবে পরিচিত শাহজাদপুর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়রে ৪ শতাধিক গ্রামের চারিদিকে বন্যার পানি থৈ থৈ করছে। গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলোর নীচু ভিটে বাড়ীগুলো বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই গ্রামগুলোতে বসবাসকারী ৮৫ হাজার পরিবারের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামি কয়েক দিন ব্রক্ষপুত্র ও গঙ্গা অববাহিকার নদী গুলোতে পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায়, শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতনী, জালালপুর, কৈজুুরী ও গালা ইউনিয়নে চরাঞ্চলের অনেক গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। চরাঞ্চলে বসবাসকারী সিংহভাগ পরিবারগুলোর বাড়িঘড় পানিতে ডুবে যাওয়ায় ওইসব বন্যাদুর্গত এলাকায় দুর্যোগাবস্থা বিরাজ করছে।
তিস্তা পানি বিপদসীমার উপরে, পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ
নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা ঃ উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি আবারো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নতুন- পুরাতন মিলে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শনিবার রাতে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা তিস্তার চর ও চর গ্রামে বসবাসরত মানুষজনকে নিরাপদে স্থানে সরিয়ে নিয়েছে জনপ্রতিনিধিরা ।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, শনিবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। রবিবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সুত্রমতে গত দুদিন ধরে ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের জলপাইগুড়ি, কুচবিহার এলাকার বাংলাদেশ অংশে প্রবেশদ্বার মেখলিগঞ্জ পর্যন্ত তিস্তা অববাহিকায় রেড এ্যালার্ট জারী করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। উজানের ভারী বৃষ্টিপাত ও গজলডোবার জলকপাট খুলে দেয়ায় সেখানকার পানি যে কোন সময় বাংলাদেশে ধেয়ে আসার আশংকা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজের সবকটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে বলে জানান ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান। তিনি জানান কি পরিমান উজানের ঢল আসছে তা মনিটরিং করা হচ্ছে। সেই সাথে তিস্তা ব্যারেজ ও ফ্লাড ফিউজ এলাকায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। রবিবার রাতে তিস্তার পানি প্রবাহ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সুন্দরগঞ্জে ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতাঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। বন্যা কবলিতরা ত্রাণের জন্য হা-হা-কার করছেন। জানা গেছে, গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সুন্দরগঞ্জের ৬টি ইউনিয়নের ২০টি চর প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি মানুষরা দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন। ওই সকল এলাকায় খাদ্য, ওষুধপত্র, বিশুদ্ধ পানীয় জলসহ গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা দুর্গতরা ত্রাণের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নবী সরকার জানান, প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। বন্যার সাথে পাল্লা দিয়ে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এপর্যন্ত উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙ্গনে ৫৭০ পরিবার বিলীন হয়েছে। সে সাথে ভেসে গেছে হাজার-হাজার হেক্টর আবাদি জমি, গাছপালা ও বাঁশঝাড়। তিনি আরও জানান, নদী ভাঙ্গনের শিকার পরিবার গুলোর মাঝে ইতোমধ্যেই ১১ মেট্রিক টন চালসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত
সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : কখনও গুঁড়িগুঁড়ি আবার কখনও মুষলধারে বৃষ্টি। আবার কখনও সূর্যের দেখা মেলে। তাও খুব অল্প সময়ের জন্য। প্রায় প্রতিদিনই এ রকম অবস্থা বিরাজ করছে সুনামগঞ্জে। বৃষ্টিপাত বেশী হলে নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থায় বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে নদ-নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডুবছে বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট। মানুষের বাড়ী-ঘরেও পানি প্রবেশ করছে। গতকাল রবিবার সকালে পানির চাপ কিছুটা কম থাকলেও বিকেলে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। এতে জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। গতকাল রবিবার বিকেল ৩ টায় সুরমার পানি ষোলঘর পয়েন্টে বিপদ সীমার ৮৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
জামালপুরে ৬৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি
জামালপুর জেলা সংবাদদাতা : জামালপুরে যমুনার পানি বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জামালপুর জেলার যমুনা তীরবর্তী দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর ও মাদারগঞ্জ উপজেলা সমূহের ১৭টি ইউনিয়নের ১২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই জামালপুরের প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজপাঠক আব্দুল মান্নান জানান, বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বন্যার পনি যমুনা নদীতে পানি পরিমাপক স্কেলের ১৯.৯৭ সেন্টিমিটার পয়েন্টে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে।
ইসলামপুরে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
ইসলামপুর উপজেলা সংবাদদাতা : জামালপুরের ইসলামপুরে যমুনার পানি বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ইসলামপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৬০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ইসলামপুরের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজপাঠক আব্দুল মান্নান জানান, বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বন্যার পনি যমুনার ১৯.৯৭ সেন্টিমিটার পয়েন্টে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, চিনাডুলি ইউনিয়নের ১৬টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে ইউনিয়নটির আভ্যন্তরীণ সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এছাড়াও চিনাডুলি ইউনিয়নের দেলিরপাড় থেকে বানিয়াবাড়ী পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকার পাকা সড়ক বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে গুঠাইল বাজার থেকে ইসলামপুরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আত্রাইয়ে সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা ঃ এলাকায় উজান থেকে নেমে আসা পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নওগাঁ-আত্রাই আঞ্চলিক সড়কের মির্জাপুর সড়কে (বাঁধ) আবারও ফাটল দেখা দেয়ায় যে কোন সময় ভেঙ্গে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফাটলের সংবাদ পেয়ে শুক্রবার বিকেলে জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান ওই স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় জেলা প্রশাসন, রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন স্তারের সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সাথে এক মত বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিদর্শনের সময় সড়কের বেহাল অবস্থা দেখে রাস্তা রক্ষার জন্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। শনিবার সকাল থেকে ওই স্থানে মাটি ফেলে রক্ষার জন্যে চেষ্টা করছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সড়কে ফাটল দেখা দেয়ায় এলাকাবাসিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে গত শুক্রবার সকাল থেকে নওগাঁ-আত্রাই সড়ক পথে ভারি ও মাঝারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়েছে। এতে বিপাকে পরেছে আত্রাই উপজেলা প্রায় দুই লাখ মানুষ।

লালমনিরহাটে হাজার হাজার হেক্টর আমন তলিয়ে গেছে
লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা ঃ ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে লালমনিরহাট জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব চরাঞ্চলে ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে এসব এলাকার হাজার হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গবাদী পশু ও বানভাষি মানুষগুলোর দূর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
তিস্তা নদীর পানি গতকাল বিপদ সীমার ২৫ সেঃ মিঃ ও ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার ৭০ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বানভাষি ও পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জেলার চারটি উপজেলার প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে বানভাষি ও পানিবন্দি মানুষগুলোর শুকনো খাবারের জন্য সাড়ে সাত লক্ষ্য টাকা ও ৪০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। সরকারি এ সাহায্য প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বলে বানভাসি ও পানিবন্দি মানুষ দাবি করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন