বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

হংকংয়ে হস্তক্ষেপের ফল ভালো হবে না : চীন

কয়েক লাখ ভিসা ও নাগরিকত্ব দেবে ব্রিটেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

হংকংয়ের বিষয়ে চীনের লাগাতার হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কড়া জবাব দিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। হংকংয়ের ওপর চীনের বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা বিল কার্যকর হলে ৩ লাখেরও বেশি হংকংবাসীর জন্য ব্রিটেনের দ্বার উন্মুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

গত বুধবার সংবাদমাধ্যম লন্ডন টাইমস ও সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে প্রকাশিত নিবন্ধে চীনকে সতর্ক করে দিয়ে জনসন বলেন, ‘চীন যদি জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করে, ব্রিটিশ সরকার আমাদের ইমিগ্রেশন আইন পরিবর্তন করবে।’ তিনি বলেন, ‘চীন যদি জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর করে, তবে কয়েক লাখ হংকংবাসীর জন্য ব্রিটেনের ভিসা ও এমনকি নাগরিকত্ব প্রদানেরো ব্যবস্থা করা হবে।’

গত ২৮ মে, চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার আধা স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের চলমান বিক্ষোভ দমনের জন্য চীনের পার্লামেন্টে বিতর্কিত হংকং জাতীয় নিরাপত্তা বিল অনুমোদন করে। চীনের এপদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম প্রস্তাবিত আইন সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য বুধবার সকালে বেইজিং পৌঁছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এপ্রেক্ষিতে বলেছেন, ‘হংকংকে বেইজিং যে প্রস্তাব দিচ্ছে সেটি এর স্বাধীনতাকে খর্ব করবে এবং নাটকীয়ভাবে এর স্বায়ত্ত¡শাসনের বিলোপ ঘটাবে।’

এ আইনের অধীনে হংকংয়ের আইন প্রণেতা ছাড়াই সেসব অপরাধে অভিযুক্তদের সরাসরি সাজা দেওয়ার সুযোগ পাবে চীনা কর্তৃপক্ষ। যদিও বেইজিং দাবি করে যে, হংকংয়ের বিচ্ছিন্নতা, সন্ত্রাসবাদ ও বৈদেশিক হস্তক্ষেপ মোকাবিলায় আইনটি ব্যবহার করা হবে, তবে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থিদের দাবি, এর মাধ্যমে তাদের বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছে চীন।

এর মধ্যেই গত সোমবার বিগত ৩০ বছরের মধ্যে প্রথমবার তিয়ানআনমেন স্কয়ারে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের বর্ষপূর্তি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে হংকং পুলিশ। নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলনকে দমাতে চীনের প্রতি অনুগত হংকং প্রশাসন এটি করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।

চীনের কার্যকলাপ সম্পর্কে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান যে, আন্তর্জাতিক ব্যবসা কেন্দ্র হংকংয়ের ওপর বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লন্ডন উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে লন্ডন হংকংবাসীদের থেকে দূরে সরে যাবে না।’ বরিস আরো বলেন, নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ হবে ‘যৌথ ঘোষণায় চীনের দেওয়া প্রতিশ্রæতির সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক, যা জাতিসংঘে নিবন্ধিত আইনি বাধ্যকতার চুক্তি ছিল।’

সাবেক উপনিবেশকে বেইজিংয়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার শর্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের শাসকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপ‚র্ণ ধারণা ছিল এক দেশ দুই ব্যবস্থা। এটি নগরীর মৌলিক আইন হিসেবে ব্রিটেন-চীন স্বাক্ষরিত যৌথ ঘোষণায় সন্নিবেশিত করা হয়।’

এদিকে, হংকং ইস্যুতে ব্রিটেনের হস্তক্ষেপের ফল ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, চীনের পার্লামেন্টে পাশ হওয়া হংকং জাতীয় নিরাপত্তা বিল নিয়ে ব্রিটিশ নেতাদের মন্তব্যের জবাবে এই হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘আমরা ব্রিটেনকে পরামর্শ দেব আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে সরে দাঁড়াতে। ঠান্ডা যুদ্ধের মানসিকতা ও ঔপনিবেশিক মনোভাব থেকে সরে দাঁড়ান। সত্যকে স্বীকার করে নিন যে, হংকং এখন (চীনে) ফিরে এসেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘লন্ডনের উচিত অবিলম্বে হংকং ও চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ করা। তা না হলে উল্টোটা ঘটতে পারে।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে হংকং হস্তান্তর করার বিষয়ে ব্রিটেন ও চীনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, হংকং একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসাবে প্রাধান্য পাবে। নিজেদের স্বায়ত্তশাসন আগের মতোই অক্ষুণœ থাকবে এবং সর্বোপরি ভবিষ্যতে এ নিয়ে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করা যাবে না।

কিন্তু চীন শর্ত লঙ্ঘন করে নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে হস্তক্ষেপ করে চলেছে। সেই সঙ্গে হংকংয়ের জনগণের অধিকার খর্ব করে চলেছে। সূত্র : দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স, এএফপি।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Taseen Babu ৫ জুন, ২০২০, ১:১৪ এএম says : 0
পারলে ইতিহাস জেনে আসুক। হংকং চীনেরই ছিলো। বরং আফিম যুদ্ধের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে ব্রিটেন হংকং দখল করে। আর তারাই এখন বড় কথা বলে।
Total Reply(0)
Ahasan Ullah ৫ জুন, ২০২০, ১:১৪ এএম says : 0
সৈরাশাসক নিপাত যাক,
Total Reply(0)
Abu Bhuiyan ৫ জুন, ২০২০, ১:১৪ এএম says : 0
China knows nothing but :1) Money and 2) Business
Total Reply(0)
আরণ্যক নিষাদ ৫ জুন, ২০২০, ১:১৫ এএম says : 0
বর্বর চীনা ওদের ঝাটা পিটা করা উচিৎ। এদের কারনে সারা পৃথিবীর মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে। পুরো বিশ্বটাকে নরকে পরিনত করেছে
Total Reply(0)
Robiul Hasan Rasel ৫ জুন, ২০২০, ১:১৬ এএম says : 0
চিন তো ভারতের কাশ্মীর দখলের কৌশল দেখে তাদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে হংকংয়ের সাথে এমন আচরণ করছে। যদি কিছু দেশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভারতকে মদদ না দিতো, তাহলে আজ হয়তোবা চিন এমনটি হংকংয়ের সাথে করতো না। আমার মতে ভারত এই পাপের পথে প্রথম পথিক যা সময়মতো দমন না করায় পৃথিবীতে এমন ঘটনা গুলো ঘটা অসম্ভব হবে না।
Total Reply(0)
Harun Miah ৫ জুন, ২০২০, ১:১৭ এএম says : 0
কাশ্মীর,রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গাধারা নিশ্চুপ প্রায়।হংকং নিয়ে উদ্বেগ।এটি চীনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুইনা।চীন এসব ইউনিয়ন টিউনিয়ন গনে না।এসব ইউনিয়ন মারতে করোনাকে শুধু আরেকবার সফর করতে দিলেই চীনকে বাবা ঠাকুর বলে সম্ভোধন করবে ইউনিয়ন।
Total Reply(0)
Badar Uddin ৫ জুন, ২০২০, ১:১৭ এএম says : 0
পশ্চিমা দেশগুলো গনতন্ত্র মারায় অথচ গনতন্ত্রের নাম করে মুসলিম দেশগুলো ধংস করে তখন গনতন্ত্র কোথায় থাকে?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন