বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

১৪ জনের মৃত্যু

করোনা উপসর্গ কোয়ারেন্টিনে ৫৭ হাজার ৩১৯

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনার উপসর্গ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়েছে সারা দেশে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে গত ১২ ঘণ্টায় চাঁদপুরে মারা গেছেন ৬ জন । এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও পটুয়াখালীতে দুইজন করে, চট্টগ্রাম, খুলনা, গাজীপুর ও নেত্রকোনায় একজন করে। তবে এদের কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩৬৫ জনকে। ছাড় পেয়েছেন ১৭৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ছয় হাজার ৯৪৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে দুই হাজার ২৪৫ জনকে। ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৪৯৫ জন। এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৯৭ হাজার ৪৩৩ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৭ হাজার ৩১৯ জন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস উপসর্গ নিয়ে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জেনারেল হাসপাতালে মারা যান কালিপদ দে (৬০)। তার বাসা নগরীর কোতোয়ালী থানার বলুয়ার দীঘির পাড়ে। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব বলেন, করোনা উপসর্গ ছাড়াও তার ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও কিডনি রোগ ছিলো। বৃহস্পতিবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, নোয়াখালীতে করোনা আক্রান্ত সংখ্যা আশঙ্কা জনকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও আক্রান্ত হয়েছে ৩৯ জন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৮০ জন। মৃতের সংখ্যা ২৪ জন। গতকাল নোয়াখালী সিভিল সার্জন মমিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ২ ও ৩ জুন এদের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজ ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে পাঠানোর পর ৪জুন পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, দক্ষিণাঞ্চলের হটস্পট বরিশালে করোনা সংক্রমন আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণাঞ্চলে আরো ১ জনের মৃত্যুসহ নতুন আক্রান্ত ৭০ জনের মধ্যে ৬৪ জনই বরিশালে। যার মধ্যে মহানগরীতে আক্রান্তের সংখ্যাই প্রায় ৬০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জসিম উদ্দিন সহ একাধিক ডাক্তার, নার্সসহ চিকিৎসা কর্মীও রয়েছেন। তবে এসময়ে আরো ১৫ জনসহ মোট সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৭৫ জন। গতকাল নতুন আক্রান্তদের তালিকায় আরো ২০ জন পুলিশ কর্মীও রয়েছেন। এনিয়ে বরিশালে প্রায় দেড়শ পুলিশ কর্মী করোনা সংক্রমনের শিকার হল।
দক্ষিণাঞ্চলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এযাবতকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছলেও তার মধ্যে বরিশালই শীর্ষে। বরিশাল মহানগরীসহ জেলার এ নাজুক পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্য বিধি মানার ক্ষেত্রে বেশির ভাগেরই এখন আর কোন গরজ নেই। নগর প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনেরও তেমন কোন পদক্ষেপ লক্ষনীয় নয়। বরিশাল মহানগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড ছাড়াও পাড়া-মহল্লায় ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমন ছড়িয়ে পেড়েছে। কিন্তু এর পরেও ন্যূনতম স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা ও মানানোর কোন গরজ নেই কারো মধ্যে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল ছাড়াও ভোলা ও বরগুনাতে আরো দু জন করে এবং পটুয়াখালীতে ১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭৬ জনে উন্নীত হল। মৃত্যুর সংখ্যাও ১৬।
বরিশাল মহানগরীতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত প্রায় ৬০ জনের মধ্যে পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০। এছাড়া আরো অন্তত ১০ জন চিকিৎসা কর্মী রয়েছেন। এমনকি বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার অফিসের একাধিক কর্মীও করোনা সংক্রমিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া জেলার বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, গৌরনদী, বানরীপাড়া ও বাকেরগঞ্জেও আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভোলার চরফ্যাশনে আমীর হোসেন নামে ৫০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু ঘটেছে করোনা সংক্রমনে।
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মুন্না আক্তার (৪০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মৃত মুন্না আক্তার নগরীর খালিশপুর ক্রিসেন্ট জুট মিল এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলে।
এদিকে, খুলনা মহানগরীতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। আর শনাক্ত হওয়া রোগীরা সবাই আলাদা আলাদা এলাকার বাসিন্দা। এতে জালের মত বিস্তৃত ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস।
খুলনায় এখন আর বহিরাগত বা তাদের সংস্পর্শে আসা রোগীরাই করোনা আক্রান্ত হচ্ছে না। শহরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে এ ভাইরাস। কোভিড চিকিৎসার জন্য একমাত্র হাসপাতালেও জায়গা শেষ পর্যায়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই মুহূর্তে কোন নির্দিষ্ট বাড়ি বা এলাকা নয় পুরো খুলনা কঠোরভাবে লকডাউন দেয়া প্রয়ো জন বলে মনে করছেন নগরবাসী।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার একদিনে শুধুমাত্র শহরে ৩০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯২ জন। রোগীরা পৃথক এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় ছোট শহরের কত জায়গায় লকডাউন করা যায় এমনি প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং খুলনা সিভিল সার্জন।
খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) পিসিআর ল্যাব ও খুলনা সিভিল সার্জনের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত জেলায় মোট ১৫২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মহানগরীর মধ্যে রয়েছে ৯২ জন, দিঘলিয়ায় ২৪ জন, রূপসায় ১৩ জন, ডুমুরিয়ায় ৭ জন, দাকোপে ৬ জন, বটিয়াঘাটা ৩ জন, তেরখাদায় ৩ জন, ফুলতলায় ২ জন পাইকগাছায় ১ জন ও কয়রায় ১ জন। আর করোনায় মারা গেছেন ৪ জন। যার মধ্যে রূপসায় ৩ ও দিঘলিয়ায় ১ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৩৭ জন। পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন ৩৩ জন। মারা গেছেন ৪ জন। তাদের মধ্যে রূপসায় ৩ জন ও দিঘলিয়ায় ১ জন।
খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত খুলনায় করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ১২২ জন। সন্ধ্যায় খুমেকের পিসিআর ল্যাব থেকে জানতে পেরেছি আরো ৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তারা সকলে খুলনা শহরের বাসিন্দা। এমনকি প্রত্যেকের বাড়ী পৃথক পৃথক এলাকায়। এখন চিন্তার বিষয় আসলে কত জনের বাড়ি লকডাউন করা যাবে। ছোট শহরের এ পর্যন্ত ৯২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এক জন শনাক্ত হলে তার আশে পাশের কয়েকটি বাড়ী, কখনো ছোট বা সড়ক ধরে লকডাউন করা হয়। তাহলে পৃথক এত জায়গায় লকডাউন করা কিভাবে সম্ভব।
আবার খুলনায় করোনার পরীক্ষার নমুনা দেওয়ার পর ফলাফল পেতে কোন কোন সয়য় ৫দিন পর্যন্ত বিলম্ব হচ্ছে। করোনা ছড়িয়ে পড়ার এটি একটি মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারন ফলাফল পাওয়ার আগ পর্যন্ত সময় পজিটিভ ব্যক্তিরা আশাপাশে ঘুরাঘুরি করে অনেককে সংক্রমিত করছেন।
স্টাফ রিপোর্টার, চাঁদপুর থেকে জানান, চাঁদপুর, হাজিগঞ্জ ও মতলব দক্ষিণ করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ১২ ঘণ্টায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের ১ জন চাঁদপুর সদরে, ৪ জন হাজীগঞ্জে এবং ১ জন মতলব দক্ষিণে।
জানা গেছে, হাজীগঞ্জ পৌর যুবদলের সাবেক আহবায়ক আবদুল আউয়াল সর্দার গতকাল সকাল ৮ টা ৫০ মিনিটে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে মারা যান। তিনি পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ সর্দার বাড়ীর বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার তার করোনা নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এছাড়া হাজিগঞ্জ উপজেলার ৬নং বড়কুল ইউনিয়নের এন্নাতলি গ্রামে শুক্রবার সকাল ৯টায় করোনা উপসর্গ জ্বর শ্বাসকষ্টে দুলাল মিয়াজী নামে এক ব্যক্তি মারা যায়। তার পিতার নাম জহিরুল ইসলাম মিয়াজী।
এদিকে, হাজীগঞ্জে করোনা উপসর্গে নিহত আবুল কালাম (৫৫) নামক এক ব্যক্তির মৃতদেহ বাড়ীর আঙ্গিনায় পড়ে ছিল দীর্ঘ সময়। নিহত আবুল কালাম উপজেলার ২নং ইউনিয়নের বাখরপাড়া গ্রামের পুরান বাড়ীর মৃতু আবদুল মতিনের ছেলে। সে করোনা উপসর্গে সকালে বসতঘরে মারা যায়।
হাজিগঞ্জ উপজেলার ২ নং বাকিলা ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার রাত ৯ টায় আব্দুর রশিদ আবু খলিফা(৬৫) নামে একলোক করোনা উপসর্গে মারা যায়। তার পিতার নাম মৃত আব্দুল মতিন। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার অনুরোধে গতকাল বিকেল ৫টায় ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা তার দাফন কাজ সম্পন্ন করবেন।
চাঁদপুর সদরে মাহবুবুল হক (৬০) নামে এক ব্যক্তি গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। তিনি উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বড় সুন্দর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ি বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে তার স্যাম্পল নেয়া হয়েছে। বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়।
মতলব দক্ষিণ উপজেলায় আব্দুল কুদ্দুছ (৫৫) নামে এক ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। উপাদী দক্ষিণ ইউনিয়নে তার বাড়িতেই মৃত্যু হলে রাতেই তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, নারায়ণগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে নতুন জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন কোন মৃত্যুর খবর নেই। জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৮৫। ২৪ ঘণ্টায় নতুন ২৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে নারায়ণগঞ্জে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াঁলো ৩ হাজার ৩’শ ১৭। গতকাল নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্টাফ রিপোর্টার কুষ্টিয়া থেকে জানান, কুষ্টিয়ায় পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ আরও আটজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে গত বৃহস্পতিবার তিন জেলার মোট ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার ৯২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার রিপোর্টে পূর্বের এক জন এবং নতুন আটজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে কর্মরত পাঁচ পুলিশ সদস্য রয়েছেন।
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ থেকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় গোপালগঞ্জে নতুন করে আরও ২০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এ জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪২ জনে। আক্রান্ত ২শ’ ৪২ জনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২০ জন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১২১ জন । মারা গেছেন ১ জন। গতকাল সকালে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ এ তথ্য জানান।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে গত ২৪ ঘণ্টায় নাগরপুরের এক নারী চিকিৎসক ও পুলিশসহ একদিনে সর্বোচ্চ ২৭ জন করোনাভাইরেসে আক্রন্ত হয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইল সদও উপজেলায় ৫ জন, নাগরপুর উপজেলায় ৪ জন, দেলদুয়ারে ১ জন, সখীপুরে ২ জন, মির্জাপুরে ৫ জন, কালিহাতী ৭ জন, ভূঞাপুরে ২ জন ও গোপালপুরে এক জন রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১৯ জন। গতকাল টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. সদর উদ্দিন জানান, হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে সর্বমোট ১৬ জন রোগী ভর্তি হয়। তাদের মধ্যে ১৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে দুই জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালী আব্দুল করিম মৃধা কলেজ (একেএম) কলেজের ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক হাফেজ মতিয়ার রহমান গত বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গিয়েছেন। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে তিনি জ্বর, হাচি-কাশিসহ করোনা উপসর্গে আক্রান্ত ছিলেন। হাসপাতালে তার নমুনা সংগ্রহ শেষে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক গোরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়াও জেলার মির্জাগঞ্জের কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কিসমতপুর গ্রামে মজিবুর রহমান (৪৬) নামে এক জন জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে মারা যায়। তিনি পেশায় ড্রাইভার ছিলেন। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, কোভিড প্রটোকলে অনুযায়ী দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. জাহাঙ্গীর আলম । এদিকে, পটুয়াখালীতে নতুন করে দুই জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ এসে পৌছাল ।
নেত্রকোনা : নেত্রকোনার মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার লক্ষণ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে একজনের (৬০) মৃত্যু হয়েছে। এর আগে আশপাশের সবার সন্দেহ থাকায় স্বাস্থ্য বিভাগ নমুনা সংগ্রহ করে রাখে। নিহতের স্ব জনরা জানান, কয়েক দিন ধরে তার জ্বর ছিল।
গাজীপুর : গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তির (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। পেশায় তিনি কৃষক ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সাংবাদিকসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সকালে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে করোনাভাইরাসের উপসর্গ (জ্বর-সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট) নিয়ে আবু বক্কর (৫০) নামে সাংবাদিকের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)’র ফটো সাংবাদিক হিসাবে ঢাকায় কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনায় ওই গ্রামের চারটি পরিবারকে লকডাউন করা হয়েছে। দুপুরে বিশেষ ব্যবস্থায় তার লাশ দাফন করা হয়েছে। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের ওই ব্যক্তি গত কয়েকদিন ধরে করোনার উপসর্গ জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। সকালে নিজ বাড়িতেই তিনি মারা যান।
স্থানীয় লোক জন বিষয়টি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়–য়াকে অবহিত করলে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবিএম মশিউজ্জামান এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল সকাল ১০টার দিকে ওই ব্যক্তির বাড়িতে যান। বিশেষ ব্যবস্থায় ওই ব্যক্তির লাশ দাফনের পর মৃতের পরিবারসহ চারটি পরিবারকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পরিবারের বাকী সদস্যদের নমুনাও সংগ্রহ করা হবে।
এদিকে সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়ায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে লতিফ (৬০) নামক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গত রবিরার থেকে জ্বর-সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গতরাতে ওই ব্যক্তির প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হয়। ফলে গতকাল শুক্রবার দুপুরে সদর হাসপাতালে ভর্তির ওই ব্যক্তি মারা যায়। সদর হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডাঃ শওকত হোসেন বলেন, মৃত ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ সন্দেহ হওয়ায়, বিশেষ ব্যবস্থায় ওই মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকার কেরানীগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও নতুন করে ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪২জনে। কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর মোবারক হোসাইন এ তথ্যটি নিশ্চিত করে জানান, নতুন করোনা শনাক্ত ১২জনের তালিকায় ি জনজিরা ইউনিয়নে ১ জন, কালিন্দী ইউনিয়নে ১ জন,কলাতিয়া ইউনিয়নে ১ জন, শাক্তা ইউনিয়নে ৪ জন, তেঘরিয়া ইউনিয়নে ৪ জন ও রোহিতপুর ইউনিয়নে ১ জন রয়েছে। ি জনজিরা মডেল টাউনে এক জন নারী, রোহিপুর ইউনিয়নে এক জন পুরুষ, কলাতিয়া ইউনিয়নে এক জন পুরুষ,কালিন্দী ইউনিয়নে এক জন নারী, তেঘরিয়া ইউনিয়নে চার জন পুরুষ, শাক্তা ইউনিয়নে তিন জন পুরুষ ও এ জন নারী রয়েছে।
ছাতক (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের ছাতকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধা পিয়ারা মিয়া (৭০) নামের আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টায় তিনি সিলেট নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। মুক্তিযোদ্ধা পিয়ারা মিয়া পৌরসভার বাগবাড়ী আবাসিক এলাকার মৃত হরমুজ আলীর পুত্র ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ১২ জনসহ এখানে মোট ৫১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন সনাক্ত করোনা পজেটিভ ১২ জনের মধ্যে ১১ জনই ছাতক পৌর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং অপর জন উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গনেশপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন