সম্প্রতি ব্রিটেনের এক দম্পতি তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের আইরী লড়াই করতে গিয়ে আইনজীবীদের খরচ হিসেবে প্রায় সর্বস্ব খুইয়ে সংবাদ মাধ্যমের নজরে এসেছেন। বিচ্ছেদের রায় শেষে দেখা যায় যে, শেষ পর্যন্ত তারা নিজের জন্য কার্যত কিছুই রাখতে পারেননি।
গতকাল ব্রিটেনের সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রকাশিত এক খবরে জানা যায়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই দম্পতির আইনী যুদ্ধে তাদের আইনজীবীদের জন্য ৫ লাখ ৯৪ হাজার পাউন্ড ডলার ব্যয় করার পর তাদের সমুদয় সম্পদ থেকে প্রত্যেকের ভাগে ৫ হাজার পাউন্ড করে জোটে।
ব্রিটেনের উচ্চতর আদালতের বিচারক রবার্ট পিল কিউসি’র আদালত মন্তব্য করেন, ‘মধ্যবয়সী এই জুটি বিয়ের ২২ বছর পর ৩ সন্তানসহ আলাদা হয়ে যান এবং পরস্পরের কাছ থেকে বৈবাহিক সম্পদে বড় ধরনের ভাগ বসানোর চেষ্টা করতে গিয়ে গত ২ বছরে নিজেদের সর্বস্ব উজাড় করে বসেছেন।’
হাইকোর্টে মামলাটি নিষ্পত্তি হওয়ার পরে বিচারক বলেন, ‘এই স্ব-পরাজিত মামলাটি এখন শেষ।’ তিনি বলেন, ‘এটি বিশ্বাস করা অসম্ভব যে, পরিশেষে তারা প্রায় ৬ লাখ পাউন্ড ব্যয় করার বিনিময়ে নিজেদের জন্য ৫ হাজার পাউন্ড তরল সম্পদ রেখেছে। তবে এটাই বাস্তব।’
৫৩ বছর বয়সী স্বামী এবং তার ৫০ বছর বয়সী স্ত্রী একটি কেয়ার হোম ব্যবসায়ের অংশীদার ছিলেন এবং স্বামী হোমটি পরিচালনা করতেন। লন্ডনে তাদের একটি ৫ বেডরুমের বাড়ি ছিল, তারা নিয়মিত ছুটি কাটাতে যেতেন এবং খাওয়া-দাওয়া করতেন এবং তাদের বাচ্চাদের জন্য শিক্ষার ব্যয় বহন করতেন।
মামলা লড়তে গিয়ে কেয়ার হোমটি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর স্বামী বেকার হয়ে পড়েন এবং বর্তমানে একটি পাইপ সারার কোম্পানিতে কাজ করে বছরে ৩২ হাজার পাউন্ড উপার্জন করেন। ইতোমধ্যে তার ১ লাখ ২২ হাজার পাউন্ড ক্রেডিট কার্ড ঋণ জমেছে।
এদিকে, পরিবারিক বাসভবনটি বিক্রি হয়ে যাওয়ায় স্ত্রী এখন আর সেখানে থাকতে পারবেন না এবং ভবিষ্যতে তাকে বসবাসের জন্য তার পরিবারের ওপর নির্ভর করতে হবে। দম্পতির ঝগড়া বিবাদ থেকে এও প্রতীয়মান হয়েছে যে, বাবার সাথে তার বাচ্চাদের সম্পর্ক ভেঙে গেছে এবং বাচ্চাদের অভিভাবকত্ব নিয়ে পারিবারিক আদালতে শুনানি অব্যাহত রয়েছে।
পিল বলেছেন, বাড়ি বিক্রি করে পরিবারটি ৬ লাখ ৩০ হাজার পাউন্ড পেয়েছেন। তবে বর্তমানে আলাদাভাবে ভাড়া বাসায় বসবাস করা এই দম্পতিকে এই অর্থ থেকে তাদের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আইনী ব্যয় স্ত্রীর ২ লাখ ১৪ হাজার ৮শ’ ৩০ পাউন্ড এবং স্বামীর ২ লাখ ৫১ হাজার ৫১ পাউন্ড।’
বিচারক বলেন, ‘স্বামী ও স্ত্রী উভয়ই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন, যদিও আমি সন্দেহ করি যে, পরস্পরের সুস্থতার ওপর এই সঙ্ঘাতের প্রভাবটি তারা পুরোপুরি আমলে নেন না।’ বিচারক আরো বলেন, ‘এটি যে সম্পদের কী নিদারুণ অপচয় ও বিপর্যয় ছিল তা প্রকাশ করা শক্ত।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন