প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীতে ১৪৪১ হিজরীতে প্রত্যেক দেশের মাত্র ২০ শতাংশ হজযাত্রীকে হজ করার সুযোগ দিবে সউদী সরকার। বাকি ৮০শতাংশ হজযাত্রী এবার হজে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছেন না। এছাড়া বয়স্ক হজযাত্রীদেরও এবার হজে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে না। বয়স্ক যাত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সাথে সম্পৃক্ত অনেক কম বয়স্ক নিবন্ধিত যাত্রীরাও হজে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। খবর আল জাজিরা, খালিজ টাইমস ও রয়টার্সের।
প্রতি বছর হজ ও ওমরাহ থেকে সউদী আরব ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে থাকে। এবার সেটা নিঃসন্দেহে কমে যাবে উল্লেখযোগ্য হারে। অল্প সংখ্যক হজযাত্রীকে হজের সুযোগ দেয়ায় দেশটির অনেক আর্থিক ক্ষতি হবে। এছাড়া হজ ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হজ এজেন্সিগুলো কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে প্রায় ৬৫ হাজার হজযাত্রী চলতি বছর হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।
করোনা মহামারীর লকডাউনের কারণে প্রায় ১৩শতাধিক হজ এজেন্সি ও ৪শতাধিক ওমরাহ এজেন্সি গত ৩ মাস যাবত অফিস খুলতে পারছে না। হজ ও ওমরাহ কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় এসব এজেন্সিগুলো অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়ার পথে। কর্মকর্তা কর্মচারিদের বেতন ভাতা পরিশোধ করতে পারছে না এজেন্সিগুলো। এছাড়া সউদী আরবে ওমরাহ বন্ধ হওয়ায় দেশটির ব্যাংকে অনলাইনে পাঠানো কোটি কোটি টাকা এবং বিভিন্ন বাজেট ক্যারিয়ারে অব্যবহ্রত টিকিটের কোটি কোটি টাকা এখনো ফেরত পাচ্ছে না। এ নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হাব যথাযথ উদ্যোগ না নেয়ায় এজেন্সির মালিকরা চরমভাবে ক্ষুদ্ধ। আসন্ন জাতীয় বাজেটে ক্ষতিগ্রস্ত হজ, ওমরাহ ও ট্রাভেলস এজেন্সিগুলোকে প্রণোদনা দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জোর দাবি জানিয়েছেন একাধিক বৈধ হজ ও ওমরাহ এজেন্সির মালিক। এদিকে, এবার হজযাত্রায় অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় লকডাউনের মাঝেই বিভিন্ন হজ এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রী হজের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য হজ এজেন্সির মালিকদের দফায় দফায় চাপ দিচ্ছেন। কিন্ত নিবন্ধিত হজযাত্রীর হজে টাকা সরকারি ব্যাংকে জমা থাকায় টাকা ফেরত দেয়ার কোনো সুযোগ হচ্ছে না।
সউদীতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৫ হাজার ২৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৭৪৬ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৭৪ হাজার ৫২৪ জন।
এমন সময় দেশটি পরিকল্পনা করেছে এবার কম সংখ্যক হজযাত্রীকে হজের সুযোগ দেয়ার। হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত সউদীর দু’টি সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছর ২.৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ২৫ লাখ হজযাত্রীকে হজ করার সুযোগ দেয়া হয়। এবার সেই সংখ্যা মাত্র ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। অর্থাৎ ২৫ লাখের জায়গায় মাত্র ৫ লাখ হজযাত্রী হজ করার সুযোগ পাবেন। বাকি ২০ লাখ হজযাত্রী হজে গমনের সুযোগ পাবেন না। এছাড়া বয়স্ক হজযাত্রীদেরও হজে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে না। যারা হজের সুযোগ পাবেন তাদের কঠোর নিয়ম নীতি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হজ পালন করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন