বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

প্রথম আরব দেশ হিসেবে মঙ্গলগ্রহ মিশনে আরব আমিরাত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০২০, ৩:০৩ পিএম

আরব দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে মঙ্গলগ্রহে মহাকাশযান পাঠাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, পাঁচ বছর ধরে একটি মহাকাশযান তৈরি করেছে দেশটি। এতে আগামী সপ্তাহে তেল ভরানো হবে। মানবহীন এই মহাকাশযানটির নাম দেয়া হয়েছে 'আমাল'। আরবিতে যার অর্থ 'আশা'।
সবকিছু ঠিক থাকলে ৪৯৩ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত মঙ্গলগ্রহে পৌঁছাতে মহাকাশযানটির সময় লাগবে আনুমানিক সাত মাস। মঙ্গলগ্রহের এক বছর ৬৮৭ দিনে। এই পুরো সময় ধরে মহাকাশযানটি মঙ্গলগ্রহেরে কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করবে। মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথ একবার ঘুরতে সময় লাগবে ৫৫ ঘণ্টা।
গ্রহের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে গোলাপি রঙের এই গ্রহটি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবে আমাল। এই প্রকল্পের পরিচালক সারাহ আল আমিরি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, দেশটির তরুণ বিজ্ঞানীদের জন্য এই মিশন 'স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং' পেশায় যুক্ত হওয়ার দ্বার উন্মুক্ত করবে।
আসছে ১৪ই জুলাই জাপানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত দ্বিপ তানেগাশিমা থেকে মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করার কথা রয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রকৌশলীদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়েছে তাই এই যাত্রা ইতিমধ্যেই একবার পিছিয়েছে।
জাপানিজ 'রকেট' দ্বারা চালিত মহাকাশযানটিতে তিন ধরনের 'সেন্সর' থাকবে। যার কাজ হবে মঙ্গলগ্রহের জটিল বায়ুমণ্ডল পরিমাপ করা। মহাকাশযানটিতে খুব শক্তিশালী 'রেজুলুশন' সম্বলিত একটি 'মাল্টিব্যান্ড' ক্যামেরা থাকবে। যা সূক্ষ্ম বস্তুর ছবি তুলতে সক্ষম।
গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগ ও নিম্নভাগ পরিমাপ করার জন্য থাকবে একটি 'ইনফ্রারেড স্পেকটোমিটার'। যা তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি। তৃতীয় আরেকটি সেন্সর গ্রহটির অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের মাত্রা পরিমাপ করবে।
সারাহ আল আমিরি বলেছেন, এই মিশনের অন্যতম কাজ হল পানি তৈরিতে দরকার এই দুটি গুরুত্বপূর্ন উপাদান কেন মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে থাকতে পারছে না তা বোঝার চেষ্টা করা।
যুক্তরাজ্যের সায়েন্স মিউজিয়াম গ্রুপের পরিচালক স্যার ইয়ান ব্ল্যাচফোর্ড বলেছেন, 'এর আগে যত মহাকাশযান মঙ্গলগ্রহে পাঠানো হয়েছে সেগুলো ভূতত্ত্বের দিকে মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছে। কিন্তু এবার মঙ্গলগ্রহের জলবায়ু সম্পর্কে একটি সামগ্রিক চিত্র পাওয়া যাবে।'
মহাকাশবিজ্ঞানে আরব আমিরাতের যোগসূত্র নতুন নয়। এর আগে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার জন্য একটি রকেট পাঠিয়েছিল দেশটি। গত বছর রাশিয়ান একটি মহাকাশযানে করে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে গিয়েছিলেন আমিরাতের প্রথম কোন নাগরিক। তবে প্রথম আরব হিসেবে মহাকাশে গেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ সুলতান বিন সালমান আল-সউদ। ১৯৮৫ সালে মার্কিন একটি মহাকাশযানে করে গিয়েছিলেন তিনি।
আরব আমিরাতের মঙ্গলগ্রহে মহাকাশযান পাঠানোর এই চেষ্টা যেকোনো আরব দেশের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চাকাক্সক্ষী। ব্রিটেনের ওপেন ইউনিভার্সিটির মহাকাশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক মনিকা গ্রেডি বলেন, এই মিশন মহাকাশ যাত্রার ক্ষেত্রে একটি বিশাল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এর আগে বিশ্বের বড় শক্তিশালী দেশগুলোই মহাকাশ বিজ্ঞানে প্রাধান্য বজায় রেখেছে।
তিনি বলেন, 'মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কে একটি অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে এই মিশন একটি সত্যিকার সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার মতো পদক্ষেপ। কারণ এতে বোঝা যায় ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং মার্কিন নাসা ছাড়া অন্য কোনো দেশও মঙ্গলগ্রহে যেতে পারে। আশা করি তারা যেন সেখানে পৌঁছাতে পারবে। মঙ্গলগ্রহে পাঠানো মিশন ব্যর্থ হওয়ার একটি লম্বা ইতিহাস রয়েছে।'
এই প্রকল্পের নেতৃবৃন্দ বিশ্বকে জানান দিচ্ছেন যে সেই আট শতাব্দী আগে, এখনকার সময়ের অনেক উন্নত দেশের চেয়েও আরব বিজ্ঞানীরা অনেক অগ্রসর ছিলেন। সেসময় বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের দিক থেকে তারা ছিলেন সামনের সারিতে। আজকের দিনে দুবাইয়ের শাসক উচ্চাকাক্সক্ষী এই মিশনের মাধ্যমে সেই সাংস্কৃতিক অহংকারকে আবারও উদ্দীপ্ত করতে চান।
সেই সঙ্গে জ্বালানি তেলের উপরে যে নির্ভরশীলতা তা থেকে নতুন কিছুতে সরে আসতে চান। যদি এই মিশন সফল হয় তবে দেশটি প্রতিষ্ঠার ঠিক ৫০ বছরে এসে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেবে। সূত্র: বিবিসি

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Great! ৯ জুন, ২০২০, ৭:৪৫ পিএম says : 0
Mohammed Bin Rashid Space Center (MBRSC), is starting mission across the universe, Mar smission is one of them.
Total Reply(0)
Great! ৯ জুন, ২০২০, ৭:৪৭ পিএম says : 0
Mohammed Bin Rashid Space Center (MBRSC), is starting mission across the universe, Mars mission is one of them.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন