শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

বাজেটের প্রভাব বাজারে

বেড়েছে সবজির দাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

জাতীয় সংসদে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও কোনো পণ্যের দাম কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু বাজেট ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজেট ঘোষণার পর পরই রাজধানীতে বেড়েই চলেছে সবজিসহ সব ধরণের পণ্যের দাম।

সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের শাক-সবজি, মাছ-মুরগির দাম বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, কাজলা, রায়েরবাজার, দনিয়া, স্বামীবাগ, ফকিরাপুল, মতিঝিল, গুলিস্তানের কাপ্তানবাজার ও কমলাপুর এলাকার বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারী মার্কেটেও অভিন্ন চিত্র।

ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, সবকিছুর দাম বেড়েছে। বাজেটে সরকার ট্যাক্স বাড়িয়েছে, এ অজুহাতে কিছু ব্যবসায়ী পণ্য মজুত করছে। যে কারণে পণ্যের দাম বেড়েছে। নতুন করে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। তারা বলছেন, এমনিতেই করোনায় অনেক খরচ বেড়ে গেছে। এখন বাজেটের নামে দাম বাড়লে খেয়েপড়ে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে।

জানতে চাইলে ইউনুস আলী নামে এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে সবজির বাজার অনেক চড়া। কিছু কিছু জেলায় আম্পানের কারণে বন্যা হয়েছে। বাজারে সবজির সরবরাহ কম। বাজেট ঘোষণায় সবকিছুর দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে। তাই দাম বেশি। মুদি দোকানদার মো. নেছার উদ্দিন বলেন, করোনার কারণে ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে। এখনো ব্যবসা ভালো না। বাজেটের কারণে বড় ব্যবসায়ীরা মাল স্টক করছেন। ফলে এমনিতেই পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এক সবজি বিক্রেতা বলেন, যে দামে সবজি কিনে আনি তার থেকে কম দামে বিক্রি করতে হয়। তারপরও পরিবারের কথা চিন্তা করে ব্যবসা করছি।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সবকিছুর দামই বেড়েছে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ঢেঁড়শ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা, কাকরোল ৭০ টাকা, পেঁপে, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, কচুর ছড়া ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, লতি ৫০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, কাঁচ কলার হালি ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শসা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লেবুর হালি ২৫ থেকে ৪০ টাকা। করলার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, মরিচ ৬০ টাকা, ধনিয়া পাতার দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। আলু, কচু, লাউ, জালি, কুমড়া, পুদিনা পাতার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

পোল্ট্রি মুরগির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। অপরিবর্তিত আছে দেশি, লেয়ার মুরগি, গরু ও খাসির গোশতের দাম। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, লেয়ার ২৪০ টাকা, গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৫৮০টাকা, খাসির গোশত ৮০০ টাকা।বাজার ঘুরে দেখা গেল, এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯২ থেকে ৯৬ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, হাঁসের ডিম ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, কাতল ১৭০ থেকে ২৫০ টাকা, প্রতি কেজি শিং বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, মৃগেল ২০০ থেকে ৩২০ টাকা, পাঙ্গাস ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকা, পুটি ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

আদা, রসুনের দাম কমলেও কিছুটা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে প্রতি কেজি আদা, রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আদা, রসুন, পেঁয়াজ বিক্রেতা মহসিন হোসাইন বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়তি। আগে যে পেঁয়াজ ৪০ টাকা বিক্রি করতাম এখন তা ৪৫ টাকা। যাত্রাবাড়ীতে বাজার করতে আসা আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজেট ঘোষণার পরদিনই সবকিছুর দামই বাড়ছে। এটা ফ্যাশন হয়ে গেছে। সরকার শক্ত হাতে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মানুষকে আরো বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন