বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নতুন মানচিত্র পাশ, ভারতের সাথে বিতর্কিত এলাকা দখল নেপালের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২০, ৭:৫৩ পিএম | আপডেট : ৭:৫৪ পিএম, ১৩ জুন, ২০২০

ভারতের সাথে তিন বিতর্কিত এলাকার ‘দখল নিল’ নেপাল! শনিবার নেপালের হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভের (প্রতিনিধি সভা) নিম্নকক্ষে পাশ হয়েছে নতুন মানচিত্র অনুমোদনের সংবিধান সংশোধনী বিল। নয়াদিল্লির আপত্তি উড়িয়ে তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বিতর্কিত এলাকা লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখকে।

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ নেপাল প্রতিনিধিসভার সদস্যসংখ্যা ২৭৫। নতুন রাজনৈতিক মানচিত্রে অনুমোদন দেয়া সংবিধান সংশোধনী বিলটি পাশের জন্য প্রয়োজন ছিল দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন। শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস এমনকি, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয় নেপালি দলগুলোও বিল সমর্থন করেছে। বিলের পক্ষে পড়েছে ২৫৮টি ভোট। প্রতিনিধিসভার মুখপাত্র রোজনাথ পাণ্ডে বলেছেন, ‘বিতর্কের পর ভোটাভুটির মাধ্যমে স‌ংবিধান সংশোধনী বিলটি পাশ হয়েছে।’

শুক্রবার বিহারের সীতামঢ়ীতে নেপাল পুলিশের গুলিতে ভারতীয় কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সরকারের এমন পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এদিন কাঠমান্ডুর এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘কৃত্রিমভাবে এলাকা বাড়িয়ে নেয়ার এমন দাবি ভারতের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়।’ তার অভিযোগ, নেপালের এই আচরণ ‘একতরফা’ এবং ‘ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের পরিপন্থী’।

নেপাল পার্লামেন্টে ভোটাভুটির আগে এদিন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মানচিত্র বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নরবণে। তিনি বলেন, ‘ভারত এবং নেপালের সম্পর্ক অতীতেও ঘনিষ্ট ছিল। ভবিষ্যতেও থাকবে। কারণ আমাদের ভৌগলিক, ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় যোগসূত্র রয়েছে।’ পঞ্চাশের দশক থেকে ভারত এবং নেপাল সরকার পরস্পরের সেনাপ্রধানকে নিজের দেশের ‘সাম্মানিক সেনাপ্রধান’ পদে নিযুক্ত করে। গত বছর নেপালের সেনাপ্রধান পূর্ণচন্দ্র থাপাকে ভারতীয় ফৌজের ‘সাম্মানিক জেনারেল’ পদ প্রদান করা হয়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই প্রক্রিয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা।

চীন অধিকৃত তিব্বত লাগোয়া পিথোরাগড় জেলার ওই তিনটি অঞ্চল সামরিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বহু বছর ধরেই লিপুলেখ গিরিপথ কৈলাস ও মানস সরোবরের তীর্থযাত্রীরা ব্যবহার করেন। গত মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ নবনির্মীত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ তাওয়াঘাট-লিপুলেখ সড়কের উদ্বোধন করেছিলেন। বস্তুত, এর পরেই নেপালের তরফে ‘তৎপরতা’ শুরু হয়। ৩১ মে আইনমন্ত্রী শিবমায়া তুম্বাহাম্পি হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভে মানচিত্র-বদল বিলের খসড়া পেশ করেন। কয়েকদিন আগে হাউসের সদস্য সরিতা গিরি নয়া বিলের বিরুদ্ধে একটি সংশোধনী প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন। তাতে একতরফা ভাবে মানচিত্র বদলের পরিবর্তে উত্তরাখণ্ড সীমান্তের ওই তিনটি ‘বিতর্কিত’ অঞ্চল নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।

কিন্তু স্পিকার অগ্নিপ্রসাদ সাপকোটা সংবিধানের ১১২ ধারা অনুযায়ী নিজের বিশেষ অধিকার প্রয়োগ করে প্রস্তাবটি খারিজ করে দেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয় নেত্রী সরিতার বাড়িতেও নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কর্মীরা হামলা চালায়। পরিস্থিতির আঁচ পেয়ে সরিতার দল জনতা সমাজবাদী পার্টির নেতৃত্বও তাকে না-এগোনোর নির্দেশ দেন। গত ৯ জুন প্রতিনিধিসভা সবর্সম্মতিক্রমে বিলটি বিতর্ক ও ভোটাভুটির জন্য গ্রহণের প্রস্তাব অনুমোদন করে। সূত্র: এবিপি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
চীনের মধ্যে ভারতবিরোধী কাজগুলো চীনের মাধ্যমে নেপাল ভারত বিরোধী কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে তার জন্য চীনকে যোগ্য জবাব দেওয়া উচিত।
Total Reply(0)
Zerox ১৭ জুন, ২০২০, ১১:৫৮ পিএম says : 0
Nepali ra amader Moto sagol na
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন