রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

মাকে বাঁচানোর আকুতি ফুটবল তারকার

আতাউর রহমান, ঈশ্বরগঞ্জ ময়মনসিংহ থেকে | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০২০, ৩:৫৭ পিএম

মা আমার পৃথিবী। মা-ই আমার সব। মায়ের দেওয়া উৎসাহে আমি ফুটবল খেলায় প্রাণ পেয়েছি। আমার মা বাঁচতে চায়। প্লীজ আমার মাকে বাঁচান। কথাগুলো বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে ওঠছিল তরুন ফুটবলার বাঁধন(২০)। বাঁধনের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের এনায়েত নগর গ্রামে। মা বিলকিছ বেগম দীর্ঘদিন যাবৎ কিডনি রোগে ভুগছেন। দুটো কিডনি-ই নষ্ট হয়ে গেছে তার। এতোদিন ফুটবল খেলার আয় থেকে মায়ের চিকিৎসা চালিয়ে গেলেও করোনা মহামারি সেই পথ বন্ধ করে দেওয়ায় বন্ধ হওয়ার পথে মায়ের চিকিৎসাও। ইতিমধ্যে ফুটবল খেলায় সংশ্লিষ্টদের নজর কাঁড়লেও মায়ের চিকিৎসায় তেমন কোন সহযোগিতা পাচ্ছেনা বাঁধন।
মুঠোফোনে বাঁধনের মায়ের সাথে কথা বললে বাঁচার আকুতি নিয়ে করুণ কণ্ঠে বলতে শুরু করেন "আমি বাঁচতে চাই। দেশবাসীর কাছে অনুরোধ, আমাকে আপনারা বাঁচান। আমার তিনটা সন্তান। আমি না থাকলে ওদের দেখার কেও নেই। আমার খুব আশা ছিলো স্টেডিয়ামে গিয়ে আমার ছেলের ফুটবল খেলা দেখবো। আমি আমার ছেলের খেলা দেখতে চাই।"
ফুটবলার বাঁধন জানায়, ছোট বেলা থেকেই ফুটবলের পিছনে দৌঁড়ঝাপ করেছে অনেক। তার মায়ের স্বপ্ন পূরনের জন্যই ফুটবল খেলাকে খুব আপন করে নিয়েছে। সবসময়ই চেষ্টা করেছে কিভাবে ভালো ফুটবলার হওয়া যায়। তার মায়ের দোয়া আর চেষ্টার ফসল হিসেবে সে ময়মনসিংহ জেলা টিমে এবং ১ম বিভাগে বেশ কয়েকটি ক্লাবে খেলেছে। ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অনুর্ধ ১৮ টিম ও সিটি ক্লাবে খেলেছে বাঁধন। এভাবেই সে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করে। বর্তমানে ঢাকার প্রথম বিভাগের একটি দলে ডাক পেয়েও করোনায় স্তব্ধ হয়ে পড়া খেলা আর মায়ের চিকিৎসার ব্যস্ততায় খেলার অনুশীলন বন্ধ রয়েছে।
বাঁধনের এ পর্যন্ত আসার পেছনে রয়েছে মায়ের সহযোগিতার গল্প। তাই মায়ের এমন অসুস্থতায় তাকে বাঁচানোর আকুতি নিয়ে ঘুরছে বিত্তবানদের দাঁড়ে দাঁড়ে। বাঁধনের ব্যক্তিগত মোবাইলে (বিকাশ ০১৬১৬৭৬৭৬৮৯) অল্পস্বপ্ল সহযোগিতাও পেয়েছে, তবে সেটা মায়ের চিকিৎসার জন্যে যথেষ্ট নয়।
বাঁধনের পরিবারে রয়েছে ছোট এক ভাই ও ছোট এক বোন। সংসারে সহযোগিতা করার মতো আর কেউ না থাকায় তার ফুটবল খেলার আয় থেকেই চলে তাদের সংসার। প্রায় ৩ বৎসর যাবৎ বাঁধন তার মাকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়াচ্ছে। বর্তমানে তার মায়ের ২টি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের কারণে সকল কার্যক্রম স্থবির হওয়ার পাশাপশি খেলাধুলা বন্ধ হয়ে পরায় বন্ধ হয়ে গেছে বাঁধনের আয়। এতোদিন ফুটবল খেলার আয় থেকে মায়ের চিকিৎসা খরচ চালিয়ে গেলেও করোনা মহামারীর কারণে তা আর পারছেনা বাঁধন। ফলে তার মায়ের অবস্থা আরোও দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিস করাতে খরচের খাতায় যোগ হয় ১০হাজার টাকা। এ টাকা জোগাড় করা এখন তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাঁধনের মাকে একেবারে সুস্থ করে তুলতে চাইলে প্রয়োজন নতুন কিডনী সংযোজনের। কিডনী প্রতিস্থাপনের ব্যয় বাঁধনের পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাই মাকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের দিকে তাকিয়ে আছে তরুন এই ফুটবলার। বাঁধনের মা গাজীপুরের চৌরাস্তায় অবস্থিত কেয়ারহোম ডায়ালাইসিস সেন্টারের অধিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন