শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নেপালের সাথে ভারতের সম্পর্ক আর সহজে ঠিক হবে না, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০২০, ৬:৩২ পিএম

গত এক মাস ধরে মানচিত্র নিয়ে ভারত আর নেপালের টানাপোড়েন চলছিলো। নেপাল আলেচনায় বসতে চাইলেও ভারতের অনাগ্রহে তা সম্ভব হয়নি। ভারতের যুক্তি ছিলো, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আলোচনায় বসা সম্ভব নয়। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে নেপাল নতুন মানচিত্র অনুমোদন দিয়ে সীমা অতিক্রম করেছে এবং এজন্য ভারতের সাথে নেপালের সম্পর্ক আর সহজে ঠিক হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। -বিবিসি, দ্য প্রিন্ট

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি বলেছেন, নেপাল সরকার ভারতের দখলে থাকা ভূমি যে করেই হোক উদ্ধার করতে চায়। এটি ভালোভাবে নেয়নি নয়াদিল্লি। দেশটির সেনা প্রশাসনকেও কিছুটা শক্তি প্রদর্শনের জন্য পরামর্শ দিয়ে রেখেছে।

লিপুলেখ গিরিপথে যে রাস্তা নিয়ে দু দেশের সমস্যার শুরু , ভারতের দাবি ১৯৪৭ এর পরও নেপাল কখনই তা দাবি করেনি। হুট করে তাই এই দাবি করা অবশ্যই অবান্তর। নয়াদিল্লি কোনও অবান্তর দাবি নিয়ে আলোচনার টেবিলে যেতে রাজি নয় । ভারতের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একটি সূত্র বলছে , শনিবার রাতেই ইতিহাসবিদদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারাও বলছেন , সুগাওলি চুক্তির পর নেপাল কখনই এই ভূমি নিয়ে আপত্তি জানায়নি। মহাকালী নদীর উৎস নিয়ে যে আলোচনা , তা বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে সহজেই সমাধান করা যেতো ।

তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই বিষয়ে এখনও বক্তব্য দেননি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বিবৃতি দেননি । মনে করা হচ্ছে পারস্পরিক আলোচনার পরই এই নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

নেপালের মানচিত্র এবং প্রতীক সংশোধন নিয়ে সংসদে বিতর্ক চলার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গাওয়ালি দিল্লির অসহযোগিতা নিয়ে উদ্বেগ এবং হতাশা প্রকাশ করেন যে, নেপাল ওই ভূখণ্ডের দাবি নিয়ে কূটনীতিক আলোচনার প্রস্তাব দিলেও ভারত তাতে সাড়া দেয়নি। তিনি বলেছেন, আমরা খানিকটা আশাহত হয়েছি, কারণ সীমান্ত বিরোধ নিয়ে আলোচনার প্রস্তাবে আমরা কোন সাড়া পাইনি। ভারত ও চীন যদি তাদের বিরোধ মেটাতে পারে, তাহলে নেপাল ও ভারত কেন সেটা করতে পারবে ন। আমি বিশ্বাস করি, কাঙ্ক্ষিত আলোচনাটি খুব তাড়াতাড়ি শুরু করা যাবে।

করোনাভাইরাস সংকট মেটার পর বিরোধপূর্ণ ভূখণ্ড নিয়ে আলোচনা হবে বলে দিল্লি কাঠমান্ডুকে জানিয়েছে বলে জানা গেছে। নেপালের স্থানীয় সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, পরস্পরের আস্থা অর্জনের জন্য পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করার জন্য কাঠমান্ডু দিল্লিকে অনুরোধ করেছে। তবে এই বিষয়ে দিল্লির অবস্থান এখনো পরিষ্কার নয়।

বিবিসি'র নেপালি সার্ভিস জানাচ্ছে, ভারতের দিক থেকে নেয়া সাম্প্রতিক তিনটি পদক্ষেপ নেপাল সরকারের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে ভূমিকা রেখেছে। গত বছর ভারত নতুন একটি রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করে যেখানে এই বিতর্কিত ভূমি দু'টি তাদের অংশে অন্তর্ভুক্ত হিসেবে দেখানো হয়। গত ৮ই মার্চ ভারতীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডের পিথাউরাগড়-লিপুলেখের মধ্যে একটি লিংক রোডের উদ্বোধন করেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।

পরবর্তীতে ভারতের চিফ অব আর্মি স্টাফ মনোজ নারাভানে মন্তব্য করেছিলেন যে, ওই লিংক রোডের ব্যাপারে নেপাল সরকারের আপত্তি এসেছে 'অন্য কারো নির্দেশে'। নেপাল ও ভারতের মধ্যে ১৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি খোলা সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।

বিরোধের কেন্দ্রে থাকা ভূখণ্ডগুলোর মধ্যে কালাপানি, লিপুলেখ এবং সুস্তা অন্যতম। বেশ অনেকদিন ধরে এসব ইস্যুতে আলোচনা করে যাচ্ছে নেপাল এবং ভারত। প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনায় দেশ দুটো সম্মত হয়েছে যে সীমান্তের এসব সমস্যা সচিবদের বৈঠকে সমাধান করা হবে - যদিও সে রকম কোন বৈঠক এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন