কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় আনা হয় আমভর্তি কার্টুন। সেই আম কুরিয়ার থেকে তোলেন দুজন। কিন্তু গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমের আড়ালে এসেছে হেরোইনের একটি বড় চালান। এজন্য এলিফেন্ট রোডে বসানো হয় তল্লাশি চৌকি। আমসহ গ্রেফতার করা হয় দম্পত্তিকে। উদ্ধার করা হয় আধা কেজি হেরোইন। দাম প্রায় ৫০ লাখ টাকা।তারা হলেন- হাবিবুর রহমান (২৯) ও দিলরুবা দিপা (২৯)। সোমবার সকালে মাদকের এমন একটি চালান উদ্ধার করে র্যাব-২।
র্যাব কর্মকর্তারা বলছে, গ্রেফতার দুজন সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। গত ৩/৪ বছর ধরে তারা মাদক ব্যবসায় জড়িত। অন্য কোনো পেশা নেই, মাদক ব্যবসাই তাদের একমাত্র পেশা। কুরিয়ারে প্রতিমাসে ৩ থেকে ৪টি করে হেরোইনের চালান আসে তাদের। যাতে করে প্রতিবার ৫০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকার হেরোইন আনা হতো।
র্যাব-২ এর স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মুহম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, গত ২৮ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা হেরোইনের একটি চালান আমরা আটক করেছিলাম। ওই চালানটি যারা পাঠিয়েছিলেন সোমবার জব্দ করা হেরোইনের চালানটিও তারাই পাঠিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, সোমবার সকালে আমাদের কাছে তথ্য আসে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে একটি হেরোইনের চালান ঢাকায় এসেছে। ওই খবরে আমরা সম্ভাব্যতা খুঁজে মিরপুরে একটি কুরিয়ার সার্ভিসে শাখায় নজরদারি করি। সেখান থেকে একজনকে সন্দেহ হলে র্যাব পিছু নেয়। দেখা যায় তিনি আমের বস্তা নিয়ে নিউমার্কেট এলাকায় যান। এরপর গাউসিয়া ইস্টার্ন মল্লিকা মার্কেটের সামনে হস্তান্তরের সময় হাতেনাতে আটক করা হয় হাবিবুর রহমান ও স্ত্রী দিলরুবা দিপাকে।
মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, আমরা তাদের আটক করলেও হেরোইন কোথায় সেটি বের করতে পারছিলাম না। পরে অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পর জব্দ করা একটি রাইস কুকারের যন্ত্রাংশ খুলে ভেতর থেকে আধা কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত হিরোইনের দাম প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যারা এই হেরোইনের চালান ঢাকায় পাঠিয়েছেন তাদের আমরা শনাক্ত করেছি। মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর নজরদারি এড়াতে আমের সাথে পাঠানো কুকারের ভেতরে করে ওই হেরোইনের চালান পাঠানো হয়েছিল। খুব শিগগিরই চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওই চক্রটিকেও আমরা গ্রেফতার করবো। গ্রেফতারকৃতদের বিশেষ কোনো পেশা নেই, মাদক ব্যবসাই তাদের ধ্যান-জ্ঞান। গত তিন বছর ধরে তারা সুকৌশলে ইয়াবা ও হেরোইনের ব্যবসা করে আসছিল। তারা মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর এবং রাজধানীর মাদক নিয়ন্ত্রণ করে। তারা কোন সহযোগীর মাধ্যমে এসব চালান আনে না। নিজেরাই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। হেরোইন উদ্ধারের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন