বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

‘লিভিং ঈগল’ খ্যাত সাইফুল আজমের মৃত্যুতে নেটিজেনদের শোক

শাহেদ নুর | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০২০, ৯:২২ এএম

‘লিভিং ঈগল’ খ্যাত বিমান বাহিনীর সাবেক পাইলট ও পাবনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল আজম ইন্তেকাল করেছেন। রোববার দুপুরে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে শোক জানানো হয়েছে। ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই কীর্তিমানের মুত্যুতে শোক জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

সাংবাদিক ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ তার ফেইসবুকে লিখেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ বীর সন্তান লিভিং ঈগল খ্যাত গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম মারা গেলেন। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।’ আরেক স্টাট্যাসে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লিখেন, ‘যে জাতি নিজ পিতামাতার লাশের জানাজা প্রত্যাখ্যান করেছে, অসুস্থ পিতা-মাতাকে জঙ্গলে ছেড়ে এসেছে; সেই জাতি ভারতীয় অভিনেতা সুশান্ত রাজপুত-এর মৃত্যুর শোকে সোশ্যাল মিডিয়া ভাসিয়ে দিয়েছে। একই দিনে মৃত সেই জাতির সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ বীর লিভিং ঈগল খ্যাত সাইফুল আজম এর মৃত্যুর কথা তো বলার অবকাশই নেই। আত্মঘাতী বাঙালি।’

এএলএম ফজলুর রহমান লিখেন, ‘আমরা খুব ভালো জাতি। আমরা নিজের কথা চিন্তা করি না। আমরা অন্যকে বেশী ভালোবাসি। তাইতো আমরা তুরস্কের ভক্ত, ভারতের ভক্ত, পাকিস্তানের ভক্ত। দেশের কে মরলো আর কে বাঁচলো তা নিয়ে ভাববার সময় কোথায়? শুনতে চান সুলতান এরদোয়ানের কথা বলতে পারি। শুনতে চান সুলতান এমরান খানের কথা বলতে পারি। শুনতে চান বিগ বি'র কথা বলতে পারি। আমরা সাইফুল আযমকে চিনি না।’

শ্রদ্ধা নিবেদন করে সাদ্দাম মুজতবা রফিক লিখেন, ‘কিংবদন্তী পাইলট গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আযম স্যার আজ দুপুর ১ টায় ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।(ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাযিউন)। বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের প্রশিক্ষক এই পাইলট ১৯৬৭ এর আরব-ইজরায়েল যুদ্ধে ৩টি ইজরায়েলি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের রেকর্ডধারী। ২০০১ সালে মার্কিন সরকার হতে তিনি ২২ জন ‘লিভিং ঈগল’ এর একজন হিসাবে খেতাব লাভ করেন। বিশ্ব ইতিহাসে তিনিই এখন পর্যন্ত একমাত্র বৈমানিক, যিনি আকাশপথে লড়াই করেছেন তিনটি ভিন্ন দেশের হয়ে, একই সাথে মর্যাদা লাভ করেছেন নিজ মাতৃভূমিসহ আটটি ভিন্ন ভিন্ন দেশের হয়ে বিমান পরিচালনার। পেশাগত জীবনে ঈগলের মতোই সাহস, শৌর্য ও তীক্ষ্ণতার অধিকারী এই অকুতোভয় যোদ্ধার প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।’


সাংবাদিক ওয়াহিদ ফারুক লিখেন, ‘বিদায় মহা ঈগল! আরব-ইসরাইল যুদ্ধের মহানায়ক সাইফুল আজম (আমাদের খালিদ বিন ওয়ালিদ)।’

একটি ভিডিও শেয়ার করে সাইদুর রহমান লিখেন, ‘জাতীয় বীর'কে চিনুন। বিদেশীরা ঠিক'ই তাঁকে চিনে!’

উল্লেখ্য, সাইফুল আজম তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনে কিংবদন্তির ইতিহাস রচনা করেছিলেন। জর্ডান, ইরাক ও পাকিস্তানের হয়ে যুদ্ধে তিনি পাইলটের দায়িত্ব পালন করেছেন। ইরাক যুদ্ধে তিনি সবচেয়ে বেশি ইসরাইলি বিমান ভূপাতিত করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। এরপর ঢাকা বিমান ঘাঁটির কমান্ড লাভ করেন এবং ১৯৭৭ সালে গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান। বৈমানিক হিসেবে অসামান্য অবদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহিনী তাঁকে বিশ্বের ২২ জন লিভিং ইগলস এর একজন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৬১ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর মার্কিন বিমান বাহিনী সাইফুল আজমকে ‘টপ গান’ উপাধি দেয়। এছাড়াও ইরাক ও জর্ডান সরকার তাকে নানা সম্মাননায় ভূষিত করে। সাইফুল আজম ১৯৮২-১৯৮৪ এবং ১৯৮৭-১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (ক্যাব) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Mohammed Kowaj Ali khan ১৬ জুন, ২০২০, ১০:৪৬ এএম says : 0
ইন্না লিল্লাহি উয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আপনাকে আল্লাহ তা'আলা জান্নাতুল ফেরদাউস দান করিতেন। আপনাকে আমার সালাম নিরবধি, সালাম স্যার এম এম আলম, সালাম,বীর যুদ্বা মেজর জেনারেল জনাব ফজলুর রহমান, সালাম করনেল উসমানী, সালাম মেজর জলীল, সালাম জিয়াউর রহমান, সালাম আমাদের সকল বীর সেনানি জাতি আপনাদের ভূলিবেন না। বিশ্বে সেরা বাংলাদেশের বাংগালী। ইনশাআল্লাহ। আপনাদের বীরত্ব চির,স্বরণীয়। আপনারা সবাই আমাদের অত্যন্ত প্রিয়। ইনশাআল্লাহ। বুক ভরে যায় খুশিতে যখন আপনাদের নাম শুনি, আপনারা দোয়া করিবেন অতি সত্বর যেন ফেলানী হত্যার বদলা লইতে পারি এবং যত ভারতীয় দালাল আছে বাংলাদেশে এবং দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ওদের যেন লাত্তাইতে পারি। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
মোঃ আক্কাস ১৬ জুন, ২০২০, ১১:২৭ এএম says : 0
এই বীর বাঙালিকে সহস্রধ্য সালাম।একি সাথে আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করেন।
Total Reply(0)
Md. Younus biswas ১৬ জুন, ২০২০, ১১:২৯ এএম says : 0
Al bida biswa bir assalamu amikum jonab saful azam suza bir apnar kotha jara vuley jai tara o kritoggo arab israil war 1967, india pak war 1965 biman bahinir ai akutobhoy joddah allah apnakey behesto nosib korun apni amader gourob iraq,jordan,pakistan o bangladesh biman bahini o gourob apni biswa bir apni apnar kotha ki bhabey bholey jai ai jati apsos
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ৭ জুলাই, ২০২০, ১০:৪৮ পিএম says : 0
যুদ্ধের ময়দান বড় ভয়াবহ। আপনাদের রিণ জাতি কোনো দিন শুধ করিতে পারিবেন না। আপনারা যান নাই ভাগিয়া করেন নাই আত্বসমরপণ। আত্বসমরপণ আত্বহত্যার শামিল।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন