শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

কয়েকশ’ বছরের ধামাচাপা গল্প

মার্কিন ইতিহাস ও স্মৃতিস্তম্ভের পুনর্বিচার-১

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

ভার্জিনিয়া থেকে নিউ মেক্সিকো পর্যন্ত পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কয়েকশ’ বছরের পুরনো মার্কিন ইতিহাসকে সামনে নিয়ে এসেছে। জর্জ ফ্লয়েড তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার পর আফ্রিকান-আমেরিকানদের ওপর পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ ঘটা উত্তেজনাপূর্ণ বিক্ষোভ এখন মার্কিন বর্ণবাদ ও নিপীড়নের প্রতীকগুলিকে উৎখাত করার জন্য একটি জাতীয় আন্দোলনের সূচনা করেছে এবং আমেরিকান ইতিহাসের স্বচ্ছতর পর্যালোচনার দাবি উঠেছে। এ নিয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স’র প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ৩ পর্বে ভাগ করে প্রকাশ করা হ’লঃ
পোর্টল্যান্ডের ওরে’তে বিক্ষোভকারীরা পুলিশি হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে দেশটির প্রতিষ্ঠাতা পিতা থমাস জেফার্সন, যিনি ৬শ’রও বেশি মানুষকেও দাস করে রেখেছিলেন, তার ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন এবং তার মূর্তি উপড়ে ফেলেন। রিচমন্ডের ওয়া’তে ইতালীয় নৌ-চালক এবং উপনিবেশকারী ক্রিস্টোফার কলম্বাসের একটি মূর্তি স্প্রে-পেইন্ট করা হয় এবং আগুন লাগিয়ে একটি হ্রদে ফেলে দেয়া হয়। বিগত সপ্তাহগুলোর অসন্তোষ এবং আবেগ নাগরিক অধিকার যুগের প্রবীণদের মধ্যে চাঞ্চল্য ও আশার সঞ্চার করেছে এবং গত মঙ্গলবার আলবুকার্কে স্থানীয় আমেরিকানদের সাথে নিষ্ঠুর আচরণের জন্য নিউ মেক্সিকো থেকে নির্বাসিত ১৬শ’ শতাব্দীর ঔপনিবেশিক গভর্নর হুয়ান ডে নেট’র স্মৃতিস্তম্ভটি অপসারণের আগে রাস্তায় সংঘর্ষ এবং বন্দুক বিস্ফোরণ শুরু ঘটে।
সম্প্রতি দেশজুড়ে ঐতিহাসিক নিপীড়নের প্রতীক হিসাবে সমালোচিত মূূর্তিগুলি নষ্ট করে দেয়া হয় এবং দ্রুততার সাথে উৎখাত করা হয়। এই আন্দোলনটি প্রথমে আফ্রিকান-আমেরিকানদের প্রতি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কনফেডারেট’র প্রতীকের উপর নজর দেয়। তবে, তখন থেকে এটি একটি বিস্তৃত সাংস্কৃতিক আন্দোলন হিসেবে বিস্ফোরিত হয়ে ইউরোপীয় ঔনিবেশিকরণ এবং আদি আমেরিকানদের প্রতি অত্যাচারের মতো বিষয়গুলিও পুনর্বিচার করতে বাধ্য করেছে। নিউ মেক্সিকোতে এটি আদিবাসী, হিস্পানিক এবং অ্যাংলো বাসিন্দাদের মধ্যে বহু প্রজন্মের চেপে রাখা ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়েছে এবং ৪শ’ বছরের নিগ্রহের ইতিহাসকে সামনে তুলে ধরেছে।
নৃশংস স্পেনীয় ঔপনিবেশিক গভর্নর নেটে পরিচালিত ৮শ’ বা ততোধিক লোকের গণহত্যা সহ্যকারী আকোমা পুয়েবোর সদস্য কিগান কিং বলেছেন, ‘আমরা এই তীক্ষ্ন বাঁকে পৌঁছেছি।’ তিনি বলেন, যে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলন মানুষকে তাদের আশেপাশের ইতিহাস পরীক্ষা করতে উৎসাহিত করেছে এবং এর সবগুলি বইয়ে লেখা হয়নি।’ কিং বলেছেন, ‘এই পদ্ধতিগত বর্ণবাদের টুকরোগুলি স্মৃতিসৌধ এবং মূর্তি এবং পার্কে রূপ নিয়েছিল।’ আমেরিকান ইতিহাসের অস্বস্তিকর অংশগুলিকে কীভাবে উপস্থাপন করা যায় তা নিয়ে বিতর্ক কয়েক দশক ধরেই চলছে। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে স্মৃতিস্তম্ভগুলি ছুঁড়ে ফেলার ঝোঁক নতুন প্রজন্মকে শেখানো ইতিহাসে মৌলিক পরিবর্তন ঘটতে পারে কিনা, তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
রিচমন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ ও সহযোগী অধ্যাপক জুলিয়ান ম্যাক্সওয়েল হাইটার বলেছেন, ‘এটি এ অবধি ইতিহাসের জন্য একটি মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার মুহূর্ত। ইতিহাসবিদরা কয়েক দশক ধরে যে গল্পটিকে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিলেন, তা বলার জন্য এখন অনেক লোক আছেন।’ তিনি বলেন, মূর্তিগুলি সরিয়ে নথি এবং যুগের প্রথম ব্যক্তির সাথে পাশাপাশি জাদুঘরগুলিতে স্থাপন করা হলে পার্ক এবং রাস্তার মোড়গুলো-স্থানগুলো শিক্ষণীয় কাজে ব্যবহার করা যেত। (চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Nure Azam ২০ জুন, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
কালো আর ধলো, বাহিরে কেবল, ভেতরে সবাই সমান রাঙা.... ইসলামে নামাজের কাতারে কখনো কালো, ফর্সা, খাটো-বেটে, ধনী-গরিব বিবেচনা করা হয় না, তখন সমগ্র মুসলিমরা এক
Total Reply(0)
নীভৃতচারী সিরাজ ২০ জুন, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
মানুষ তার নিজের স্বাধীনতা নিয়ে বেঁচে থাকুক!! মানুষ কি জানে সে কেনো সাদা? কেনো সে কালো?? নিশ্চয় সকল জ্ঞানীর উপর আছে এক মহাজ্ঞানী
Total Reply(0)
G.m. Moni ২০ জুন, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
ভারতে মুসলিম ও দলিত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক " এদের থেকে গরুর মূল্য মর্যাদায় বেশি
Total Reply(0)
Md. Mojahedur Rahman ২০ জুন, ২০২০, ১:৪১ এএম says : 0
নিজের দেশের এতো সমস্যা রেখে অন্যর সমস্যায় মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই...সেটা ওই দেশের অভ্যন্তরিন ব্যাপার স্যাপার...
Total Reply(0)
Profsm Shajahan ২০ জুন, ২০২০, ১:৪১ এএম says : 0
আর কবে এই বৈষম্য শেষ হবে? আর কবে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ ভ্রতিত্বের একই ছাতার তলে দাড়াবে? এবার করোনা ভাইরাস যদি পুরো পৃথিবীর মানুষকে প্রেমের একই ছাতার তলে দাড় করাতে ব্যর্থ হয় তবে কেয়ামত পর্য্যনন্ত আর হবে না
Total Reply(0)
Sk Jahangir ২০ জুন, ২০২০, ১:৪২ এএম says : 0
জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু প্রমাণ করে যারা নিজেদের সভ্য বলে জাহির করে তারাই প্রকৃতপক্ষে অসভ্য শুধু টাই কোট বুট পরা শিক্ষিত হলে হবে না থাকতে হবে মানবতা মনুষ্যত্ব বিবেক!
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন