লিবিয়ায় মানবপাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের দোর্দ-প্রতাপশালী একজন মহিলা কর্মচারি ও তার স্বামী শ্রীঘরে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তাই বিতর্কিত ঐ মহিলা কর্মচারির সাথে সখ্যতা ছিল। এতে খোঁদ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক প্রশাসন ও যুগ্ম সচিব সোয়েব আখতার খান আজ শুক্রবার ইনকিলাবকে জানান, লিবিয়ায় মানবপাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কম্পিউটার অপারেট বেগম নূর জাহানের বিরুদ্ধে শিগগিরই প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিদেশে মানবপাচারের মতো গর্হিত কাজে জড়িত নূর জাহানকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলেও যুগ্ম সচিব উল্লেখ করেন।
ঢাকার সিআইডি পুলিশ গত ২ জুন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কম্পিউটার অপারেটর বেগম নূর জাহান ও তার স্বামী রিক্রুটিং এজেন্সি এস এ এম ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সাত্তারকে লিবিয়ায় মানবপাচারের অভিযোগ গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে মানবপাচারের অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে আসে। আদালত গত ১৫ জুন বেগম নূর জাহান ও তার স্বামী আব্দুস সাত্তারকে কাশিমপুর কারাগারে প্রেরণ করেছে।
এছাড়া ঢাকার শহীদ তাজউদ্দিন সরণির ট্রাভেল এজেন্সি নাভীরা লিমিটেড এবং হাতির ঝিলের ফ্লাইওভার ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস লিমিটেডের মালিক দুই ভাই শেখ মো. মাহবুবুর রহমান ও শেখ সাহিদুর রহমান এবং পুরানা পল্টনের স্কাই ভিউ ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের মালিককে লিবিয়ায় মানবপাচার মামলায় আসামী করা হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তার আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে গ্রেফতারকৃত শেখ সাহিদুর রহমান কয়েক বছর আগে বর্হিগমন ছাড়পত্র ইস্যুতে নানা অনিয়মের সাথে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, ঢাকা কামরাঙ্গীরচরের কামাল হোসেন ও শাহাদাত হোসেনের নামও রয়েছে মামলার এজাহারে।
লিবিয়ার মিজদাহ শহরে গত ২৮ মে মানব পাচারকারীদের গুলিতে নৃশংসভাবে নিহত ২৬ জন বাংলাদেশিসহ আরও অনেক ভুক্তভোগীকে পাচারের অভিযোগে হাজী কামালসহ ৩৮ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রাজধানীর পল্টন থানায় সংস্থার উপ পরিদর্শক এএইচএম আবুল ফজল বাদী হয়ে মানবপাচার আইনে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে উচ্চ বেতনের প্রলোভন দিয়ে সহজ সরল নিরীহ মানুষকে লিবিয়ায় পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাটি হত্যা ও মানবপাচার আইনের ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে। লিবিয়ায় মানব পাচারের ঘটনায় বিভিন্ন জেলার চারটি থানায় পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। এরই মধ্যে মানব পাচারের এক হোতা কামাল উদ্দিন ওরফে হাজি কামালকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
র্যাব জানিয়েছে, গত মাসে লিবিয়ায় পাচার হয়ে নৃশংস হত্যাকা-ের শিকার হওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে বড় একটা অংশকেই এই কামাল পাচার করেছিল। ওই ব্যক্তিদের পাচারের পর অপহরণ করে বাংলাদেশে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকাও আদায় করে সে। এ পর্যন্ত সে ফাঁদে ফেলে অন্তত ৪০০ বাংলাদেশিকে লিবিয়া পাঠিয়েছে। লিবিয়া ছাড়াও সে কতিপয় ট্রাভেলস এজেন্সির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে লোক পাঠায়। কামালের বাড়ি কুষ্টিয়ায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন