বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যে কোন অপকর্মের বিরুদ্ধে সতর্ক হোন : ভারতকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২০, ১:০৯ পিএম

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি ভারতকে যে কোনও অপকর্মের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ পাকিস্তানের তরফ থেকে দ্রুত প্রতিশোধের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলবে।

সিনেটে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, ‘সাবধান, সাবধান, ফেব্রুয়ারির (২০১৮) কথা মনে রাখুন এবং আমাদের প্রতি খারাপ দৃষ্টি দেয়ার সময় দ্রুত প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুত থাকুন’।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করকে সম্বোধন করে তিনি বলেন, পাকিস্তানি জাতি ভারতীয়দের ভয়ে ভীত নয়। তিনি বলেন, কাশ্মীর ইস্যু এবং দেশের সার্বভৌমত্ব, অখ-তা এবং প্রতিপত্তি সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে দেশে সম্পূর্ণ ঐক্যমত রয়েছে। লাদাখ পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতীয় সেনারা সেখানে হতাহতের শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলে নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে। চীন খোলাখুলিভাবে ভারতের বিপক্ষে ময়দানে নেমেছে এবং এই সংঘাতের ফলে রক্ত ঝরেছে’।
একদিন আগে চীনা প্রতিপক্ষের সাথে তার ফোনালাপের কথা উল্লেখ করে বলেন, তিনি চীনা মনোভাব বিষয়ে সচেতন। তিনি বলেন, পুরোপুরি ভারতের বশে বলে মনে করা নেপাল এখন ভারতের সাথে কিছু বিতর্কিত ক্ষেত্রের ওপর দাবি তুলছে, শ্রীলঙ্কা এবং ভুটানেরও ভারতের ব্যাপারে আপত্তি রয়েছে। কুরেশি দাবি করেন, ‘আফগানিস্তানও মনে করে ভারত সেখানে পুনর্মিলন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করছে’।
তিনি বলেন, ‘ভারত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে এবং রয়েছে চাপে’। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারী পরবর্তী সময়ে ভারত অর্থনৈতিক পতনের কাছাকাছি ছিল। তিনি বলেন, পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বড় অর্থনীতি হওয়ার কারণে ভারত আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারের সাথে বেশি সংযুক্ত ছিল এবং পাকিস্তানের তুলনায় অর্থনৈতিক দিক থেকে লোকসানের মুখোমুখি হয়। তিনি বলেন, এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে ভারত একটি মিথ্যা-ফ্লাগ অপারেশন চালাতে পারে।
বিরোধী সিনেটর মুশাহিদ হুসেন সৈয়দের বক্তব্যের জবাবে কুরেশি দৃঢ়ভাবে বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার জন্য পাকিস্তান ভারতকে ওয়াকওভার দেয়নি। তিনি বলেন, পাকিস্তান বিরত হয়নি, তবে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ বিরোধিতা করেছে। ‘যদিও এটি একটি গোপন ব্যালটিং ছিল, পাকিস্তান প্রকাশ্যে বলেছিল যে, তারা গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতের অধীনে জম্মু ও কাশ্মীরের অসাংবিধানিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এবং জাতিসংঘের সনদ, ইউএনএসসি প্রস্তাব এবং আন্তর্জাতিক মানদ- লঙ্ঘনের জন্য ভোট দিয়েছিল’।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি বুঝতে হবে যে, নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া রয়েছে। পাকিস্তান ও ভারত উভয়ই এই আসন প্রত্যেকে সাতবার ধরে ছিল-একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, দুই বছর আবর্তনের ভিত্তিতে এই সদস্যপদ দেয়া হয়। তিনি বলেন, কাশ্মীর বিরোধের বিষয়ে ভারতের অস্থায়ী সদস্যপদ জাতিসংঘের অবস্থান পরিবর্তন করবে না, কারণ বিশ্ব সংস্থা এটিকে একটি বিতর্কিত অঞ্চলের স্বীকৃতি দিয়েছে।
তিনি বলেন, ভারত ২০১৩ সাল থেকে অস্থায়ী সদস্য হওয়ার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পাকিস্তানও ২০২৫-২৬ সালের অস্থায়ী সদস্য হওয়ার প্রচার শুরু করেছে। তিনি বলেন, ভারত ইতিমধ্যে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছে এবং পাকিস্তান যদি শেষ মুহূর্তে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত তবে তা হতে পারত কূটনৈতিক নিয়মের বিরুদ্ধে।
এর আগে, পিএমএল-এন সিনেটর মুশাহিদ হুসেন সৈয়দ লাদাখের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন যে, চীন ভারতকে এমন একটি শিক্ষা দিয়েছে যা পরবর্তীকালে চিরকালের জন্য মনে থাকবে। তিনি বলেন, ভারতীয় পক্ষ পাকিস্তানের ওপর অবিচ্ছিন্ন চাপ সৃষ্টি করে আসছে এবং এখন তারা কৌশলগত স্থান এবং একটি রাজনৈতিক দম পেয়েছে। তিনি পিটিআই সরকারকে ইউএনএসসির অস্থায়ী সদস্য হওয়ার জন্য ভারতকে ওয়াকওভার দেয়ার অভিযোগ করেন।
তিনি মানবাধিকার মন্ত্রী ডা. শিরীন মাজারীর একটি টুইটকে উল্লেখ করে বলেন, বিশৃঙ্খলাবদ্ধ উন্নয়ন নিয়ে সরকারের অভ্যন্তর থেকে এখন আওয়াজ উঠছে। বৃহস্পতিবার মাজারি টুইট করেন, ‘পাকিস্তানের জন্য প্রশ্ন কেন আমরা নিশ্চিত করেছিলাম যে, এই অঞ্চল থেকে অন্য কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে না? আফ্রিকান আসনে প্রতিযোগিতা হয়েছে। আমরা কেন অনেক আগে ভারতীয় মনোনয়নের সাথে একমত হয়েছি? ভারত যে পরিমাণ ভোট পেয়েছে তা হ’ল অত্যন্ত বিরক্তিকর বিষয়। অন্য একটি টুইটে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতকে ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়’ বিজয়ী করা তার পদক্ষেপকে রাজনৈতিক বৈধতা দিয়েছে।
সৈয়দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মোদিকে করোনাভাইরাস নিয়ে লড়াই করার জন্য সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু করাচী সফরকালে তিনি সিন্ধু মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহকে দেখতে পছন্দ করেননি। তিনি বলেন যে, পিটিআই সরকারের সময়ে আরও বেশি পরিমাণে মাফিয়ার উদ্ভব হচ্ছে এবং তেল মাফিয়ারা তাতে নতুন যোগ হয়েছে। তারা তাদের নাকের ডগায় ক্ষমতার করিডোরে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সূত্র : ডন অনলাইন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Tofayel Ahmed ২০ জুন, ২০২০, ৬:২৪ পিএম says : 0
বিশ্বের মধ্যে সব চাইতে বিপদজনক হল ভারতের মিড়িয়া।এই মিড়িয়ার কর্মীরা সামান্য তুচ্ছ ঘটনাকে ও যেভাবে উপস্হাপন করে তার প্রতিটা বাক্যই উস্কানিমূলক।ভারতের মিড়িয়া কয়েকদিন আগে চীন কে নিয়ে যেভাবে মাতামাতি করলো,আমার মনে হল মিড়িয়া কর্মীরাই যুদ্ধ করছে। আর তাদের লাফালাফির মূল্য দিতে হল 20 ভারতীয় আর্মির।তাদের কে অস্ত্র দিয়ে নয়,কুংফু ফুটবলের মত লাফিয়ে লাফিয়ে মেরে ফেলেছে চীনা সৈন্যরা।ভারতীয় মিড়িয়া কর্মীরা ভুলে গেছিলো,বাপতো বাপই হয়।এখন ভারতীয় মিড়িয়া একদম চুপ।
Total Reply(0)
Md Towhidul Haqe Towhid ২০ জুন, ২০২০, ৬:২৪ পিএম says : 0
একদিকে নেপালের হুমকি। একদিকে চীনের হুমকি। একদিকে পাকিস্তানের হুমকি। আমরাও হুমকি দিতে পারতাম, কিন্তু দুর্ভাগ্য আমরা....
Total Reply(0)
Anthony Remond Quiah ২০ জুন, ২০২০, ৬:২৫ পিএম says : 1
ভারত ও চীন দুটই ক্ষমতাধর দেশ কাজই কাওকে ছোট করে দেখার উপায় নেই, যুদ্ধ যদি বেধেই যায় প্রতিবেশী দেশ আমরা কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হব সেটাই চিন্তার বিষয়।
Total Reply(0)
Jakir Al Faruki ২০ জুন, ২০২০, ৬:২৫ পিএম says : 0
মোদির ইন্ডিয়ার অদ্ভুত রাজনীতি, পাকিস্তানের হামলা চালাতে গিয়ে ধরা খেল, বিমান হারালো পাইলট বন্দি হলো আর গলাবাজি করলো তারা জিতে গেছে। আর এখন চায়নার সাথে একই ঘটনা, কর্নেলের মতো একজন সিনিয়র অফিসার হারানোর পরও স্পিক টী নট, মোদির গলাবাজি নেই, অমিত শাহ এর সর্দি জ্বর, গরকরির গলা ব্যাথা। একেই বলে, ঠেলার... আর চিন তো এটাই চাচ্ছিল।
Total Reply(0)
Fatema Sultana Fatema ২০ জুন, ২০২০, ৬:২৬ পিএম says : 0
ভারতের জন্য আমাদের নদী গুলো মরে গেছে , সীমান্তে হাজার হাজার মানুষ বিনা বিচারে হত্যা করছে। চীন চাইলে এই দেশের সবচেয়ে বড় বুঝা ভবিষ্যত ইসরাইল হতে যাওয়া আমাদের গলার কাঁটা রোহিঙ্গা এক দিনের মধ্যেই বিদায় করা যেত । এরা দুইটার কোন টাই আমাদের আপন নয় । নিজের স্বার্থ টা এই দুই কাছে অনেক বড় । আমরা এদের পক্ষ নিয়ে কথা বলে লাভ নেই।যা করে করতে থাক । আমরা দেখতে থাকি।
Total Reply(0)
Qaium Sheikh ২০ জুন, ২০২০, ৬:২৬ পিএম says : 1
আজ যদি ভারত কর্তৃক বাংলাদেশী জনগন নিগৃহীত না হতো, বর্ডারে নির্বিচারে না হত্যা করে বিচারের আওতায় আনতো, বাংলাদেশের প্রাপ্য তাদের বুঝিয়ে দেয়া হতো তাহলে ভারতের জনগনের প্রতি এতো ঘৃনা উল্টো ভালবাসায় রুপ নিতো।
Total Reply(0)
Himu Talukdar ২০ জুন, ২০২০, ৬:২৮ পিএম says : 0
আমি মনে করি ভারতকে একটু চাপে রাখায় ভালো, দেশটা অনেকটা সুবিধাবাদী। যেমন,,তিস্তার চুক্তি জল চাইলে অপারকতা জানায় আবার অসময়ে বাধের পানি ছেড়ে বাংলাদেশে বন্যার সৃষ্টি করিয়ে দেয়। বানিজ্যিক ভাবেও একি অবস্থা তো কিসের বন্ধু রাস্ট্র? প্রতি বছর বিএসএফ সীমান্তে ডজন ডজন বাংলাদেশি হত্যা করে।। কালে কালে স্মরণ থাকবে ফেলানি হত্যার দৃশ্য।
Total Reply(0)
MK Rony ২০ জুন, ২০২০, ৬:২৯ পিএম says : 0
আমরা ভারতের কাছে যতোটা অসহায় তার চেয়ে বেশি অসহায় তারা পাকিস্তান ও চীনের কাছে, তারা পায়ে পাড়া দিয়ে ভারতের সাথে যুদ্ধ করতে চাইছে, যেমন টা ভারত আমাদের সাথে করতে চায়, এটাই উপরওয়ালার বিচার।
Total Reply(0)
J S Roy ২০ জুন, ২০২০, ৭:০৩ পিএম says : 1
China kichu korte parbe na india ke, aar roilo nepal, Pakistan aar tora mane Bangladesh, ......
Total Reply(0)
Jayanta ২১ জুন, ২০২০, ১০:০৮ পিএম says : 0
Bartoman projanmer Bangladesh e Bhai jara freete sadhinata upovog korcho tomra India China bartoman paristhiti samandhe swachcha dharona rakhte chaile International news channel gulo follow karo. Bujhte parbe. Chin ekhan nijer proyojane Bangladesh a khub Dan ....korche. Pore bujhbe eader swarup
Total Reply(0)
Mr mamun ১ জুলাই, ২০২০, ৪:২২ পিএম says : 0
J s Roy tumi hindu tumi India support korbe China ki Korte pare tumi eye diye dekhe Jane.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন