মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হাফেজ মোহাম্মদ মুরসির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার রূহের মাগফিরাত কামনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান।
গত বুধবার এক টুইটে এরদোগান বলেন, আমি আজ আমার প্রিয় ভাই মোহাম্মাদ মুরসিকে গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি এবং প্রথম শাহাদতবার্ষিকীতে তার রূহের মাগফিরাত কামনা করছি।
মুরসির সঙ্গে নিজের ছবি শেয়ার করে এরদোগান বলেন, পরবর্তী প্রজন্মকে আমাদের জানাতে হবে যে, আমাদের পূর্বসূরিরা এমন মহান ছিলেন যারা অন্যায়ের সঙ্গে কখনো আপস করেননি।
গত বছর ১৭ জুন আদালতে শুনানি চলাকালে মোহাম্মাদ মুরসি বিচারকের কাছে কথা বলার অনুমতি চাইলে তাকে অনুমতি দেয়া হয়। প্রায় ২০ মিনিট বক্তব্য রাখার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
মনে করা হয়, আদালতে মুরসির ওপর সিসি প্রশাসনের শারীরিক ও মানসিক চাপ প্রয়োগই তার মৃত্যুর একটি কারণ। মোহাম্মাদ মুরসির মৃত্যুর পর দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল সিসি ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সমালোচনা করেন এরদোগান।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট মুরসির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এরদোয়ানের। মুরসির মৃত্যুতে তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং তাকে ‘শহীদ’ বলে উল্লেখ করেন।
আনাদলু জানায়, ইস্তানবুলের হ্যালিক সেন্টারে দেওয়া এক বক্তৃতায় এরদোয়ান বলেন, “শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত মিসরের নাগরিকদের মুক্তির জন্য কাজ করে গেছেন মুরসি। মুসলমানদের মাঝে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি।”
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, “মোহাম্মদ মুরসি আমাদের কাছে শহীদ। সেই একনায়ককে (সিসি) ইতিহাস কখনো ক্ষমা করবে না। যে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে জেলে বন্দি রেখেছে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।”
কারাগারে বিনা চিকিৎসায় রেখে মুরসিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে মিসর সরকার- এমনটাই মত মানবাধিকার সংগঠনগুলোর। তার পরিবার ও সংগঠনও একই দাবি করেছে।
পরিবার ও মুসলিম ব্রাদারহুডের দাবি, বিনা চিকিৎসায় তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। কারাগারে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, কিডনি ও লিভারজনিত অসুখে ভুগছিলেন যার যথাযথ চিকিৎসা তিনি পাননি।
মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থিত ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (এফজেপি) নেতা মুরসি দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট।
২০১১ সালে আরব বসন্তের হাত ধরে আসা এক গণ-অভ্যুত্থানে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক হোসনি মোবারক পদচ্যুত হন। পরের বছরেই নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেন মুরসি।
‘তামারুদ’ নামের একটি গোষ্ঠীর মাধ্যমে সাজানো এক বিক্ষোভ আয়োজন করে ২০১৩ সালে সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। মুরসির হাতে সেনাপ্রধান হওয়া আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ক্ষমতায় বসেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন