বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

টেস্ট ফিরুক, সাথে অনার্স বোর্ডও

তামীমের চাওয়া, তামীমের আক্ষেপ

প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : ইংল্যান্ডে খেলছে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভারত। শ্রীলঙ্কায় খেলছে টেস্টের শীর্ষ দল অস্ট্রেলিয়া। এমনকি জিম্বাবুয়েতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ। গোটা ক্রিকেট বিশ্বই এখন ব্যস্ত টেস্ট ক্রিকেটে। বাংলাদেশ সেখানে ব্যস্ত ¯্রফে ফিটনেস ক্যাম্পে। অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটিও নিয়েও অনিশ্চয়তা নিরাপত্তার শঙ্কায়। সিরিজটি হলেও বাংলাদেশ টেস্ট খেলবে ১৪ মাস পর। সবশেষ খেলেছে গত বছরের অগাস্টের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এই লম্বা খরায় বাংলাদেশের আক্ষেপের সীমা নেই। তবে জাতীয় দলের তারকা ওপেনার তামীম ইকবালের আক্ষেপটা যেন একটু বেশি শুধু টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি দুর্বলতার কারণেই নয়, নিজের দারুণ ফর্মের কারণেও।
বিরতির আগে ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে ছিলেন সাদা পোশাকে। দীর্ঘ বিরতি মানে আবার নতুন করে ছন্দে ফেরা। এর আগে ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরের পর এক অভিজ্ঞতা হয়েছিল তামিমের। টানা দুই টেস্টে অসাধারণ দুই শতক করেছিলেন; কিন্তু সেবারও এরপর টানা ১৪ মাস টেস্ট ছিল না বাংলাদেশের। গতকাল বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই আক্ষেপটা আবার তুলে ধরলেন তামীম, ‘একজন ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে টেস্ট ম্যাচ খেলবে। স্বপ্ন থাকে একশ’ টেস্ট ম্যাচ খেলবে দেশের হয়ে। আমার সঙ্গে অন্য দেশের যারা টেস্ট খেলতে শুরু করেছে, ওদের অনেকের আশি-নব্বইটা টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। যেখানে আমার চল্লিশটা (৪২)। এখানে একটু খারাপ লাগে যদি আমি আরও বেশি টেস্ট খেলতাম, তাহলে আমার রান আরও বেশি থাকতো। অন্যরা আমার যারা সতীর্থ আছে তাদেরও অনেক বেশি সাফল্য থাকত।’
এই সাফল্য যেন দীর্ঘদিন অক্ষুণœ থাকে তাই তামীমের ভাবনা, যদি শের-ই-বাংলাতেও থাকতো এমন অনার্স বোর্ড! এই তো, কদিন আগেই লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখালেন মিসবাহ-উল-হক, ইয়াসির শাহ, ক্রিস ওকস। তাদের সে কী উচ্ছ্বাস, চারপাশে কত স্তুতি! ইতিহাস, ঐতিহ্য, খ্যাতি, ওজন মিলিয়ে লর্ডসের অনার্স বোর্ডের ব্যাপারটিই আলাদা। লর্ডসের অনার্স বোর্ড নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আনন্দের বড় উপলক্ষ এনে দিয়েছিলেন এই তামীমই। ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে প্রথম টেস্টে। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওই বোর্ডে নাম তুলেছিলেন পেসার শাহাদাত হোসেন। তবে ইংল্যান্ডের রান ছাড়িয়ে গিয়েছিল পাঁচশ, শাহাদাত রান দিয়েছিলেন একশ ছুঁইছুঁই।
তামীমের ইনিংসটি ‘স্পেশাল’ ছিল অনেক কারণেই। ভাঙা আঙুল নিয়ে খেলেছিলেন। ৯৪ বলে করেছিলেন শতক, সেই সময়ে যা টেস্টে বাংলাদেশের দ্রুততম। সেই শতক আবার করেছিলেন ম্যাচের আগেই অনার্স বোর্ডে নাম লেখানোর ঘোষণা দিয়ে! পরের টেস্টে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডেও শতক করেছিলেন তামিম। লর্ডসের মতো বিখ্যাত না হলেও অনার্স বোর্ড আছে ম্যানচেস্টারের এই মাঠেও। সেবারের পর আর ইংল্যান্ডে টেস্ট খেলা হয়নি বাংলাদেশের। অনার্স বোর্ডেও নাম ওঠেনি আর কারও।
লর্ডস, ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের মত অনার্স বোর্ড আছে অ্যাডিলেড ওভালে, আরও দু-একটি মাঠে। মিরপুরে কেন নয়? গতকাল বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তামিম সেই প্রশ্নে রোমাঞ্চ জাগালেন, ‘লর্ডস যেমন ইংল্যান্ডের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের জন্য শের-ই-বাংলা সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বাচ্চাদের স্বপ্ন থাকে ওরা একদিন শের-ই-বাংলায় খেলবে। আমার জন্য সব মাঠই গুরুত্বপূর্ণ তবে আমার দেশের নিজের মাটি একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যদি একটা বোর্ড করা হয়, কেউ যদি বড় অর্জন কিছু করে, ওগুলো যদি লেখা হয়; সেটা যত দিন খেলব ততদিন হয়ত মূল্য বুঝবো না, যখন ক্রিকেট ছেড়ে দিব তখন বুঝব। হয়তো তখন আমি আমার ছেলেকে দেখাতে পারবো আমি এখানে কিছু একটা করেছিলাম। আমি নিশ্চিত, অন্য সবাই তাদের পরিবারের সদস্যদের দেখাতে পারবে।’
অনার্স বোর্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশের টেস্ট সহ-অধিনায়ক দাবি তুললেন একটি ক্রিকেট জাদুঘর গড়ে তোলার, ‘এখন যে সুবিধা আছে এটা পাঁচ বছর আগে ছিল না। আমাদের ক্রিকেট আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে, বিসিবিও উপরের দিকে উঠছে। যখন সঠিক সময় হবে, আমি নিশ্চিত বিসিবি এটাও করবে। আমাদের সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন