রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রবাস জীবন

চাকরি হারিয়ে আবুধাবি থেকে ফিরছে প্রবাসী কর্মীরা

কোম্পানীগুলোতে ঝুলছে তালা

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০২০, ৯:০১ পিএম

মরণঘাতী করোনা মহামারীর ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তেল সমৃদ্ধ দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন কোম্পানীগুলোতে তালা ঝুলছে। অনেক কোম্পানীতে কাজ না থাকায় বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি চাকরি হারিয়ে দেশে ফেরার ঝুঁকিতে রয়েছে। এতে দেশটিতে ঘরবন্দি লাখ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী চরম হতাশায় ভুগছেন। এসব প্রবাসী কর্মীদের পরিবার পরিজনরাও চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সূত্র আজ রোববার এতথ্য জানিয়েছে।
আবুধাবি থেকে চাকরি হারিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি-৪১১০) যোগে আজ রোববার ৪১২ জন কর্মী খালি হাতে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছেছে। বিমানবন্দরস্থ কল্যাণ ডেস্কের এডি ফখরুল আলম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দেশটির কোম্পানীতে কাজ না থাকায় আরো বহু প্রবাসী কর্মী দেশে ফেরার জন্য অপেক্ষা করছে। ঢাকায় প্রত্যাগত একাধিক কর্মী এতথ্য জানিয়েছে।
বিএমইটির সূত্র মতে, ১৯৭৬ সালে ১ হাজার ৯৮৯ জন কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে জনশক্তি রফতানি শুরু হয়। শুরু থেকে গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দেশটিতে ২৩ লাখ ৭২ হাজার ৩৯৮ জন কর্মী চাকরি লাভ করেছে। ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে গত মে মাস পর্যন্ত দেশটি থেকে প্রবাসী কর্মী ও প্রবাসী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ২২৬৪ দশমিক ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছে। দেশটির অনেক কোম্পানীতে কাজ না থাকায় তারা অভিবাসীদের ছাঁটাই করে স্ব স্ব দেশে পাঠাচ্ছে। কর্মহীন প্রবাসী বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে দেশটির সরকার বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশটি থেকে বেশ কিছু প্রবাসী কর্মী চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরছে।
এদিকে, করোনা মহামারীর কারণে বাংলাদেশি কর্মীরা যেন চাকরিচ্যুত হয়ে দেশে ফেরত না আসে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সাথে ফোনালাপকালে অতিসম্প্রতি তিনি এ অনুরোধ জানান। আমিরাতের উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিরা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, কেউ চাকুরিচ্যুত হলেও যেন কমপক্ষে ৬ মাসের সমপরিমাণ ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পায়। তিনি সেদেশে অবস্থানরত প্রবাসী কর্মীদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য ইউএইর পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। জবাবে এ সব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্ত্রী নাহিয়ান আশ্বস্ত করেন। ড. মোমেন উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে কোয়ারেন্টিনের সুবিধা নিশ্চিত করতে কোন প্রবাসী কর্মী সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে যদি ফেরত আসতে চায় তবে তারা যেন করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেটসহ ধাপে ধাপে আসতে পারে। তাছাড়া সেদেশে কৃষির উন্নয়নে বাংলাদেশের কৃষি কর্মীদের কাজে লাগাতে পারবে বলেও ড. মোমেন উল্লেখ করেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র উল্লেখ করে ড. মোমেন দেশটির উন্নয়নে আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের বাবার দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন