বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

অন্তর্নিহিত যাতনা ও তরুণ্যের উদ্যম আন্দোলনের শক্তি

মার্কিন ইতিহাস ও স্মৃতিস্তম্ভের পুনর্বিচার-সমাপ্ত

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

কনফেডারেট জোটের প্রতীক এবং এর দাস প্রথার উত্তরাধিকার দীর্ঘকাল ধরে ঐতিহাসিক মার্কিনি বর্ণবাদকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছিল। তবে, দক্ষিণী দারিদ্র্য আইন কেন্দ্রের ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লস্টনে একটি ঐতিহাসিক আফ্রিকান-আমেরিকান গির্জায় এক সাদা আধিপত্যবাদী ৯ জনকে হত্যার পরের বছরগুলোতে জনরোষ ধামাচাপা দিতে কমপক্ষে ১শ’ ১৪টি কনফেডারেট প্রতীক সরিয়ে দেয়া হয়েছে। মিনিয়াপোলিসে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকান্ড সেই আন্দোলনকে বিশ্ব জুড়ে পুনরায় জোরদার করেছে।
বার্মিংহামের আলা’তে ৫২ ফুটের একটি কনফেডারেট স্মারকস্তম্ভ বিক্ষোভকারীরা টুকরো টুকরো করে দিয়েছে এবং ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডে কনফেডারেশনের সভাপতি জেফারসন ডেভিসের একটি মূর্তি উপড়ে ফেলেছে। ফিলাডেলফিয়ায়, বৈষম্যমূলক নীতির জন্য পরিচিত প্রাক্তন মেয়র ফ্রাঙ্ক এল. রিজ্জোর মূর্তিটি এ মাসে মধ্যরাতে শহর থেকে অপসারণের পর কলম্বাসের একটি মূর্তি অপসারণ ঠেকানোর জন্য সমর্থকদের আদালতের দারস্থ হতে হয়। গত সোমবার রাতে আলবুকার্কে নেট’র স্মৃতিস্তম্ভ অপসারণ নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। কেউ কেউ নিষ্ঠুর স্প্যানিশ গভর্নরকে নিপিড়নের প্রতীক হিসাবে দেখেন। আবার কেউ কেউ তাকে অ্যাংলোদের আগমনের আগের এক সময়ের দক্ষিণপশ্চিমের আধিপত্যের ইতিবাচক প্রতীক হিসাবে দেখেন। তার মূর্তি রক্ষার জন্য একটি স্বপ্রণোদিত মিশনে শ্বেত মিলিশিয়া সদস্যদের একটি সশস্ত্র দল হাজির হয়। সেই দাঙ্গার মধ্যে প্রতিবাদকারীদের একজনকে গুলি করে গুরুতর আহত করা হয়।
প্রতিমাগুলোর বিষয়ে বিতর্কটি আবারও মনোযোগ নিবদ্ধ করেছে কলম্বাসের দিকে, যিনি অষ্টাদশ দশকের শেষদিকে আমেরিকান ইতিহাসে ইটালিয়ানদের অবদানের প্রতীক হিসাবে আবির্ভ‚ত হয়েছিলেন। তবে, সাম্প্রতিক দিনগুলিতে অনেকে একথা বলছেন যে, কীভাবে তার আগমন সহিংস ইউরোপীয় উপনিবেশের সূচনা করেছিল, যার ফলে আটলান্টিক জুড়ে দাস ব্যবসা এবং বহু আদিবাসীদের গণহত্যা ও বাস্তুচ্যুতি ঘটেছিল। বোস্টন থেকে মিয়ামি পর্যন্ত কলম্বাসের মূর্তিগুলো বিক্ষোভকারীরা নামিয়ে ফেলেছে বা বিকৃত করে ফেলেছে। উইসকনসিনের কেনোশায় লাল গ্রাফিতির সাহায্যে একটি বৃহদাকার কলম্বাসের মূর্তি বিকৃত করে দেয়া হয় এবং নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু এম. কুওমো ম্যানহাটনের কলম্বাস চত্বরে পর্যটকের বিশাল স্মৃতিসৌধটি রক্ষা করেন।
মিনিয়াপোলিসে ফ্লয়েডের মৃত্যু ঘিরে বিক্ষোভ কয়েক ডজন শহরে নতুন করে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ব্লাক লাইভ্স ম্যাটার শীর্ষক প্রতিবাদ আন্দোলনকে চাঙ্গা করে তোলে। অনেকে বলেছেন, তারা কখনও তাদের এই আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক বিষয়ে পরিণত হওয়ার প্রত্যাশা করেননি। তবুও সম্প্রতি পুলিশের হাতে আবারো এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনা পূর্ববর্তী বিক্ষোভগুলোর চেয়ে আরও দীর্ঘস্থায়ী কিছু ঘটানোর শক্তি জুগিয়েছে। ফ্লয়েড হত্যা ঘটনার নিকটবর্তী স্থানে দাঁড়িয়ে ৪৯ বছর বয়সী টেরন কার্টার বলেছেন, ‘একটি ক্ষতের উপর আবরণ পড়লেও তা ক্ষতই থেকে যায় এবং যদি আপনি খুঁচিয়ে আবরণটি উঠিয়ে ফেলেন, তবে তা ক্ষতটিকে আবারো উন্মুক্ত করে দেয়।’
কার্টার এই বর্ধমান আন্দোলনের শক্তি হিসেবে অন্তর্নিহিত যাতনা এবং তরুণ্যের উদ্যমকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন যারা প্রতিনিয়ত কনফেডারেট এবং অন্যান্য নেতিবাচক স্মৃতিস্তম্ভের সাথে চলতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, ‘এটি কেবল একটি বিচ্ছিন্ন শহুরে ঘটনা নয়। এখন সকলেই সুযোগটি দেখে বলছেন যে, আমরা যদি সেখানে না গিয়ে মিনিয়াপোলিসের মতো করে প্রতিবাদ না করি, তবে আমাদের কথা ধর্তব্যের বাইরেই থেকে যাবে। ’ (সমাপ্ত)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Azad Khan ২২ জুন, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
ফিলিস্তিনিরা মানুষ নয় মুসলিম!তাই এক চোখা মানবাধিকার সংগঠন!এক চোখা হলুদ মিডিয়ার নজরে আসে না!!
Total Reply(0)
Md Asad ২২ জুন, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
সারা বিশ্বে প্রতিবাদে শুধু কালো রাই অংশ নিচ্ছে?বর্ন বাদ কি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরেছে?
Total Reply(0)
Shahid Ul-Mulk ২২ জুন, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
কেও মানেন আর নাই মানেন ইতিহাস জানবেন মার্কিন রা আমাদের থেকে মানবিকতার দিক থেকে অনেক বর্বর।
Total Reply(0)
মাহমুদুর রহমান ২২ জুন, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা একে একে মুসলিম তেল সমৃদ্ধ দেশগুলো ধ্বংস করার সময় এতো প্রতীবাদ চোখে পড়েনি৷
Total Reply(0)
Raihan Sayeed ২২ জুন, ২০২০, ১:২২ এএম says : 0
প্রতি বছর হাজার হাজার মার্কিন পুলিশ কর্মকর্তা ইস্রায়েলের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ পান receive এবং তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একই কৌশল প্রয়োগ করছে। জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ড আমাদের দেখিয়েছিল যে বর্বরতা বহু দশক পেরিয়ে গেছে ফিলিস্তিনিরা। ইহুদিবাদী সামরিক দখলের অধীনে অধিকৃত ফিলিস্তিনে এটি খুব সাধারণ দৃশ্য। ফিলিস্তিনের একই রকম কৃষ্ণাঙ্গদের যন্ত্রণা ও কষ্ট অনুভব করা উচিত।
Total Reply(0)
Md Sirajul Islam ২২ জুন, ২০২০, ১:২৩ এএম says : 0
ভারতের মোদী ইশারায় মুসলমানদের হত্যা করছে সেইখালে এই রকম বিক্ষোভ করা দরকার।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন