শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

স্বাস্থ্যখাত নয়, সরকারের আগ্রহ মেগা প্রকল্প মেগা দুর্নীতিতে -মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০২০, ৬:৩০ পিএম

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতের পরিবর্তে সরকার মেগা প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাত তাদেও (সরকার) প্রায়োরিটিতে নেই। তাদের প্রধান্য একটাই যে, তারা মেগা প্রকল্প তৈরি করবে এবং মেগা প্রকল্পে মেগালুট করবে এবং দুর্নীতির একটা মহোৎসব চলছে। কারণ এটা একটা একদলীয় ফ্যাসিস্ট সরকার। একদলীয় ফ্যাসিস্ট সরকার কখনোই জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করে না। গণতান্ত্রিক একটি সরকার, গণতান্ত্রিক একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা এটাই একমাত্র এই ধরনের যে বিশ্ব মহামারী সেই মহামারীকে মোকাবিলা করার উপযুক্ত হতে পারে।

সোমবার (২২ জুন) দুপুর ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ড্যাবের উদ্যোগে চিকিৎসক ও তাদের পরিবারকে সহযোগিতার জন্য অ্যাম্বুলেন্স সেবা সার্ভিস, মুমূর্ষু রোগীদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবারহ, প্লাজমা ডোনার তালিকা প্রণয়ন, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা কার্য্ক্রম উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। বিএনপি মহাসচিব ইন্টারনেটের মাধ্যমে বক্তব্যের পর ড্যাবের মগবাজার অফিসের সামনে থাকা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসসহ অন্যান্য কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেখেছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবিত কিট এখনো সরকার অনুমোদন দেয়নি। সব কিছুর পেছনে তাদেও (সরকার) উদ্দেশ্য হচ্ছে দুর্নীতি। জনগণের সমস্যা সমাধান করার কোনো কাজ তারা করতে চাননি কখনো এবং করবেনও না।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসকদের চিকিৎসা করবার জন্য যে সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারেনি। আক্রান্তের ব্যাপারে দেখেছেন এই পরীক্ষা এতোটুকু পর্যাপ্ত নয়। এতো অপর্যাপ্ত যে সেটার সঠিক চিত্র তুলে ধরছে না। যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে দেখা যাচ্ছে যে তার মধ্যে দেখা যাচ্ছে- শতকতরা ২৩ জন শনাক্ত হচ্ছে। পরীক্ষায় সরকারের কোনো সক্ষমতা নেই। যেহারে সংক্রামণ বেড়েছে এবং বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এটা সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা যেতো যদি সরকার প্রথম থেকে আন্তরিক হতো এবং সকলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতো।

দেশের অর্থনীতি ও জীবিকা সচল রাখতে বিএনপির দেয়া প্যাকেজ প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি প্যাকেজ দিয়েছি প্রথম দিকে যাতে করে অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখা যায় এবং একই সঙ্গে জীবনকেও রক্ষা করা যায়। দুর্ভাগ্য আমাদের সরকার সেই বিষয়গুলোতে কোনো মতেই তারা কোনো বলা যায় যে কোনো নজরই দেননি এবং তারা কোনো গোচরেও আনার চেষ্টা করেননি। কারণ প্রথম দিকে তারা ত্রাণে চুরির মহোৎসব শুরু করেছে। কে কত চুরি করবে সেই কম্পিটিশন চলছিলো। এমন কি আপনার বিছানার তলে খাটের নিচে সোয়াবিন তেলের একেবারে আড়ৎ বসিয়ে দেয়া এই ধরনের ঘটনা আমরা পত্র-পত্রিকার মধ্যে দেখেছি।

সংসদে উপস্থাপিত ২০২০-২১ সালের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা গোটা জাতি আশা করেছিলাম এবারকার বাজেটটা আপদকালীন বাজেট। মানুষকে বাঁচানোর জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য বিভাগ ও হাসপাতালগুলোকে ইকুপ্ট করা হবে। কেননা অক্সিজেনের জন্য মানুষ পাগল হয়েছে আছে কোথায় অক্সিজেন পাওয়া যাবে। সিলিন্ডার নেই, আইসিইউ নেই, ভেন্টিলেটার নেই। এসব প্রথম থেকে বলা হয়েছে যে, এসব জরুরীভিত্তিতে যোগাড় করা হোক, ব্যবস্থা করা হোক। তারা সেটার দিকে কেনো গরজ করেনি।

করোনাভাইরাস সংক্রামণ পরিস্থিতির মধ্যে জনগনের পাশে দাঁড়ানোর ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা ত্রাণ কার্য পরিচালনা করেছি। আমাদের সীমিত সাধ্যের মধ্যে আমরা প্রায় দুই কোটির উপরে মানুষের কাছে আমাদের সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে পেরেছি। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি, জনগণের পাশে থাকবো। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই ভয়াবহ যে একটা অদৃশ্য যে শত্রু, সেই শত্রুকে মোকাবিলা করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং যাবো।

ড্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ডা. আবদুস সেলিমের পরিচালনায় ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে ড্যাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সালাম, কোষাধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম শাকিলসহ চিকিতসক নেতারা বক্তব্য রাখেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Shah Alam Khan ২২ জুন, ২০২০, ১০:০০ পিএম says : 0
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখানে যেসব কথা বলেছেন সেগুলো একজন বিরোধী দলীয় দলের নেতা হিসাবে সঠিক বলেছেন কারন বাংলাদেশের প্রথা অনুযায়ী বিরোধী দলের কাজই হচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে বিষদ্গার করা। তিনি বলেছেন, “দেশের স্বাস্থ্যখাত তাদের (সরকার) প্রায়োরিটিতে নেই।“ আমি ওনার এই কথার সাথে একমত নই কারন একটা দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য খাতের সাথে উন্নয়নের বিষয়টাও প্রয়োজন কারন এখানে খেটে খাওয়া মানুষের শ্রম জড়িত। সেবদিকে আবশ্য বিরোধী নেতারা যাবেন না কারন এতে জনগণ খুশী হবে না। আমি দেখেছি বাঙালীরা সরকারের প্রতিটি কাজের সমালোচনা সেটা ভাল কাজের জন্যেও যদি খারাপ সমালোচনা হয় বা খারাপ কাজের জন্যে হয় এতে কোন আসুবিধা নেই সরকারের সামালোচনা হলেই জনগণ সেটা শুনতে পছন্দ করে। তাই আমি দেখেছি বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতারা কখনও সরকারের ভাল কাজকেও মিথ্যায় আশ্রয় নিয়ে খারপ বানায়ে জনগণের সামনে তুলে ধরে বাহবা নেয়। ফলে ইদানিং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের বিরোধী দলের বক্তব্যকে অতটা প্রাধান্য দেয় না। পরিশেষে বলতে চাই এখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খুবই যুক্তি যুক্ত ভাবে সরকারের সমালোচনা করেছেন যানাকি পড়তেও মন চায়। ওনার এবং ওনার মতই কয়েকজন নেতার যোগ্যতার কারনেই আজও বিএনপি টিম টিম করে আলো জ্বালাচ্ছে। বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিরোধী দলের বিশেষ প্রয়োজন। আল্লাহ্‌ যেন বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেতাদেরকে (মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নেতা) একটি শক্তিশালী বিরোধী দল দাড়া করানোর যোগ্যতা দান করেন। আমিন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন