বর্ষা মওমুমের আগে থেকেই নিয়মিত ভারি বর্ষনের কারনে উত্তরের সব নদনদীই এখন পানিতে টই টম্বুর !

বর্ষার অন্তত পক্ষকাল আগে উত্তরের পদ্মা, যমুনা ,ব্রম্ভ্রপুত্র , তিস্তার মত বৃহত্তম নদী গুলোর পাশাপাশি , ঘাগট , বাঙালী , ছোট যমুনা, করতোয়ায় , নাগর প্রভৃতি ছোট ছোট নদনদী গুলি পানিতে টই টম্বুর হয়ে প্রবাহিত হতে পারে গত দেড় যুগে এমন কোন রেকর্ড নেই ।
ফারাক্কা ,গজলডোবা সহ অন্তুত ৫০টি নদনদীর প্রবেশ মুখে ভারতের বাঁধ, স্পার, রেগুরেটর ইত্যাদীর মাধ্যমে উজানে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারনে উত্তরাঞ্চলের দেড় শতাধিক নদনদীর মধ্যে প্রায় ৫০টির মত নদনদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে বা মরে গেছে। বাকি নদনদী গুলোর বেশিরভাগই সারাবছর পানি প্রবাহ থাকেনা বললেই চলে ।
কেবল ভরা বর্ষা মওশুমে যখন ব্যাপকহারে বৃষ্টিপাত হয় বা নদনদী গুলোর ভারতীয় অংশে যখন বন্যা বা ভুমিধ্বস দেখা দেয় তখন ভারতীয়রা বাঁধ ,স্পার বা রেগুলেটরের মুখ খুলে দেয় । আর কেবল তখনই উত্তরাঞ্চলের নদনদীগুলোতে বন্যার আকারে ধেয়ে আসে পানির ফোয়ারা !
যা আসলে শেষ পর্যন্ত সর্বনাশা বন্যার রুপে ভাসিয়ে নিয়ে যায় , ঘরবাড়ি , স্কুল ,কলেজ , মসজিদ ,মাদ্রাসার মত উন্নয়নের অবকাঠামো । ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয় ব্যাপক। গত প্রায় দেড় যুগে উত্তরাঞ্চলের নদনদীর এই ছবিটাই ফুটে উঠেছে প্রিন্ট ও ইলেক্টুনিক মিডিয়ার রিপোর্টিং এ। তবে এবার তার ব্যতিক্রমই চিত্রই লক্ষ্য করা যাচ্ছে বর্ষা শুরুর আগে থেকেই। বগুড়া থেকে জয়পুরহাট, নওগাঁ,গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম,নীলফামারী জেলার ছোটবড় প্রায় সব নদনদীতেই এবছর জৈষ্ট মাসের শুরু থেকেই রয়েছে পানিতে টই টম্বুর !
মুলত এবছর খরা মওশুমের প্রথম থেকেই নিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে উত্তরপুর্ব ভারতের আসাম,মেঘালয়, দার্জিলিং সন্নিহিত পাহাড়ী অঞ্চল সমুহে। ওই বৃষ্টির ধারা উত্তরের রংপুর বিভাগীয় জেলা সমুহ ছাড়াও রাজমাহী বিভাগের নওগাঁ, জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলাতেও প্রচুর পরিমানে বৃষ্টি হয়েছে । ফলে প্রচুর বারিপাতের কারনে এবার শুস্ক মওশুমেও ভারতের পানি আটকানোর প্রয়োজন পড়েনি । আর এখনতো ভরা বর্ষা মওশুম । প্রত্যাশা মতোই বা তার চেয়েও বেশি মাত্রাই বৃষ্টি হচ্ছে , দর্জিলিং, মেঘালয় , আসাম বেল্টে ফলে উত্তরের বাংলাদেশ সীমান্তের প্রবেশমুখে পানি আটকালে নিশ্চিতভাবেই বন্যা দেখা দেবে ভারতে। ফলে ভারত পানি না অটকানোর কারনে অবাধে স্বচ্ছ পানির ফোয়ারা ধারা প্রবেশ করছে বাংলাদেশের ছোটবড় সব নদনদীতেই।
উত্তরাঞ্চল যেন ফিরে গেছে গেছে সেই পুরনো দিন গুলোতে যখন ভারত উজানের কোনো নদীতেই বাঁধ স্পার বা রেগুরেটর নির্মান করেনি !