বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

টেস্ট মর্যাদার দুই দশক পূর্তিতে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০২০, ৭:০০ পিএম

২০০০ সালের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান। (ডানে) প্রথম টেস্ট ম্যাচে সেঞ্চুরি (১৪৫ রান) করার পর আমিনুল ইসলাম বুলবুল- ফাইল ফটো


আজ থেকে ঠিক ২০ বছর আগে টেস্ট ক্রিকেট অঙ্গনে পা দিয়েছিল বাংলাদেশ। ৯টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের ভোটে দশম সদস্য হিসেবে ২০০০ সালের ২৬ জুন টেস্ট ক্রিকেটে নাম লেখায় বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের লর্ডসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) বোর্ড সভায় তৎকালীন সভাপতি ম্যালকম গ্রে বাংলাদেশকে পূর্ণ মর্যাদার টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে ঘোষণা দেন। তবে শুধু মাত্র মাঠের পারফরম্যান্স বিচারে টেস্ট মর্যাদা পায়নি বাংলাদেশ, টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির মিশনে ছিল অনেক কূটনৈতিক যুদ্ধও। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তৎকালীন সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী দায়িত্বে বসেছিলেন ১৯৯৬ সালে। তার দায়িত্বগ্রহণের পর মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় টেস্ট মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য স্থির করেছিল বিসিবি। সেই লক্ষ্যপূরণ যথাসময়েই করেন সাবের হোসেন চৌধুরী। তাই তো টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তি নিয়ে বিসিবির সাবেক সভাপতি ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোকে বলেন,‘আমাদের অবিশ্বাস্য কিছু করতে হতো। আমরা পাঁচ বছরের পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। সহযোগী দেশ হলেও শীর্ষে পৌঁছানোর স্বপ্ন ছিল আমার। জিম্বাবুয়ে টেস্ট স্ট্যাটাস চাওয়ার আগে তিনবার আইসিসি ট্রফি জিতেছিল। টেস্ট স্ট্যাটাস না পেলে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট মারা যেত। যে মুহূর্তে আমরা আইসিসি ট্রফি জয় করেছিলাম, ঠিক তখনই ডেভিড রিচার্ডকে আমি বলেছিলাম, আমরা টেস্ট স্ট্যাটাস নিয়ে কথা বলতে চাই। তিনিও আমাদের কথা শুনেছেন এবং আমাদের সাহায্য করেছেন।’

তবে টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির দুই দশকে একটা কথা বলতেই হয়, আর তা হলো- বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের লড়াইটাও কম ছিলনা। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় টাইগারদের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। সাবের হোসেন চৌধুরী আইসিসি সভার ভোটাভুটিতে জয় নিশ্চিত করতে তৎকালীন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি জাগমোহন ডালমিয়ার কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। এশিয়ার মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের ভোটের ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন তিনি। সেই থেকে এখন- হাঁটি হাঁটি পা পা করে টেস্ট ক্রিকেটে দুই দশক পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশের। ২০০০ সালের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট খেলার পর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ খেলেছে ১১৯টি ম্যাচ। যেখানে ১৪ জয়ের সঙ্গে ১৬ ড্র রয়েছে বাংলাদেশের। বাকি ৮৯ ম্যাচে হার। সাফল্যের বিচারে প্রাপ্তি নগন্য বাংলাদেশের। বিশেষ করে, দেশের বাইরে তারা ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তবে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য শ্রীলঙ্কায় নিজেদের শততম টেস্ট জয়।

গত ২০ বছরে আয়ারল্যান্ড ছাড়া সব দেশের বিপক্ষেই টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বেশি ২০ ম্যাচ খেলেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এরপর জিম্বাবুয়ে ১৭, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬, নিউজিল্যান্ড ১৫, দক্ষিণ আফ্রিকা ১২ এবং ১১টি করে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। এছাড়া ১০টি ইংল্যান্ড, ৬টি অস্ট্রেলিয়া ও একটি ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ৭ জয় পেয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ৪টি ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং একটি করে শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছে টাইগাররা।

বর্তমান করোনাকালে টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২০ বছর পূর্তির দিনে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা উচ্ছসিত হলেও তাদের কাছে হয়তো বড় কষ্ট করোনাভাইরাসে কারণে তারা এখন মাঠের বাইরে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন