বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

জঙ্গি দমনে ভারতের সহায়তার প্রস্তাব প্রসঙ্গে

প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আহমেদ জামিল
দেশে জঙ্গিবিরোধী জাতীয় ঐক্যের যে আহ্বান মূলধারার প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির তরফ হতে দেওয়া হয়েছিল সরকার বিশেষ করে ক্ষমতাসীন ১৪ দলের প্রধান শরিক ও আওয়ামী লীগের তরফ হতে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান নেতা হতে শুরু করে মন্ত্রী, নেতা, পাতি নেতা এবং জোট শরিকদের কেউ কেউ কোরাস গাইতে শুরু করেছেন বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার সাথে বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন ২০ দলের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীর ইন্ধন রয়েছে। উল্লিখিত ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকারবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বিএনপির জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে রাজনৈতিক উদারতাও প্রকাশ পেয়েছে। বিপরীতে প্রকাশ পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংকীর্ণতা।
সর্বোপরি অতীতের মতো গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর সরকার জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন শুরু করেছে। সমান তালে চলছে গ্রেফতার, গুম, গুপ্তহত্যা ও ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-। প্রকৃত জঙ্গি কতজন ধরা পড়ছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন অনেকের মনে। প্রশ্ন উঠেছে, জঙ্গি দমনে সরকার কতটা আন্তরিকÑসেটা নিয়েও। ব্রিটেনের দ্যা গার্ডিয়ান লিখেছে, জঙ্গি দমনের নামে বাংলাদেশের সরকার রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে। অন্যদিকে জঙ্গি দমনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাহায্য ও সহযোগিতার বিষয়েও সরকারের তরফ হতে তেমন আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। গত ১১ জুলাই ৩ দিনের বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। তিনি এদেশের এক ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকে বলেছিলেন, দেশি জঙ্গিদের সাথে বাইরের যোগাযোগ আছে।
অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন প্রশাসনসহ সে দেশের মিডিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন থিংক ট্যাংকের পক্ষ হতে বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব আছে বলে যে কথাবার্তা বলা হচ্ছিল মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের মাঝে পরোক্ষভাবে সে কথারই প্রতিধ্বনি যেন শোনা গেল। তবে বাংলাদেশ সরকার দেশে আইএসের অস্তিত্বের কথা বারংবার অস্বীকার করে আসছে। অন্যদিকে জঙ্গি ইস্যুতে সরকারের মন্ত্রীদের কোনো কোনো বক্তব্য বিতর্ক ও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। গত ১০ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলা হতে পারে এমন তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে ছিল। তাহলে সময়মতো জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হয়নি কেনÑএ প্রশ্ন রাজনৈতিক সচেতন মহলের।
তাই এ প্রসঙ্গটিরই পুনরাবৃত্তি করতে হয় যে, জঙ্গি দমনে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এবং জঙ্গি ইস্যুতে সরকার রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। সে কারণে রাজনৈতিক সচেতন মহল মনে করেন, জঙ্গি দমন ইস্যুতে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বাংলাদেশ সরকারের কাছ হতে তেমন ইতিবাচক সাড়া পাননি। বরং ক্ষমতাসীন মহলের কেউ কেউ এ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব আছে এ ধরনের কথা বলে কোনো একটি দেশ বাংলাদেশে সামরিক হামলার পাঁয়তারা করছে। আর এ দেশটি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হতে পারে তা বেশিরভাগ রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সচেতন মহলের ধারণা। সম্ভবত তার প্রেক্ষাপটেই গত ২০ জুলাই বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সামরিক অভিযান এবং দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার কোনো ইচ্ছা নেই যুক্তরাষ্ট্রের।
গুলশান হামলার তদন্তকাজে সরকার মার্কিনসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সাহায্য-সহযোগিতা নিতে অনাগ্রহ দেখিয়ে আসছে। আবার সরকার যে তদন্তকাজ চালাচ্ছে তাতে বিদেশি রাষ্ট্র বিশেষ করে গুলশান হামলায় নিহত নাগরিকদের দেশগুলো সন্তুষ্ট হতে পারছে না। জাপানি পর্যবেক্ষক টিমের তরফ হতে অভিযোগ করা হয়েছে, তদন্তের নামে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনেক আলামত নষ্ট করে ফেলেছে। ইতোমধ্যে জাপান সরকার বাংলাদেশ সরকারের কাছে রাজধানীর হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা তদন্তের পূর্ণাঙ্গ তথ্য চেয়েছে। তদন্তকাজের অগ্রগতির ব্যাপারে ইতালি সরকারও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য, গুলশানে নিহত বিদেশি নাগরিকদের বড় অংশই হলো ইতালি ও জাপানের। এই দুই দেশ যৌথভাবে তদন্তকাজ চালানোর যে অনুরোধ করেছিল তাতে বাংলাদেশ সরকার সাড়া দেয়নি।
জঙ্গি ইস্যুতে সরকারের ভূমিকা ও অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। যে কারণে বাংলাদেশ সরকারের ওপর নির্ভরতা এবং অনুমতির তোয়াক্কা না করে বেশ কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্র নিজ উদ্যোগে তদন্তকাজ শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে গত ১০ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘গোপন তদন্ত মিশনে ৫ দেশের কর্মকর্তা শিরোনামে’ এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, “গুলশান হামলার ঘটনায় গোপনে তথ্য সংগ্রহ করছে জাপান, ইতালি, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫ দেশ। মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই (ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) সদস্যরা ইতোমধ্যে এ ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে। জাপান, ইতালি, ভারত ও অস্ট্রেলীয় দূতাবাসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে নানান তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন। তারা একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছেন। বাংলাদেশ পুলিশের সাথেও তারা বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করেছেন এবং নানা তথ্য জানতে চেয়েছেন।”
যা হোক, এদেশের কোনো মানুষই প্রত্যাশা করে না যে, বিদেশিদের করা তদন্তে এমন কোনো স্পর্শকাতর তথ্য বেরিয়ে আসুক যা সরকারকে বিব্রত করার পাশাপাশি দেশের ভাবমর্যাদাও খর্ব করে এবং দেশের প্রতি বিদেশিদের আস্থা নষ্ট হয়। এর নেতিবাচক প্রভাব দেশের অর্থনীতির ওপর পড়বে। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, জঙ্গি হামলায় তৈরি পোশাক খাতে ২৫০ কোটি ডলার ক্ষতির আশঙ্কা করছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন। বাংলাদেশের পোশাক খাতের এই অনিশ্চয়তার সুযোগ নিতে চাইছে বন্ধুবেশী বৈরী প্রতিবেশী দেশ ভারত। অথচ শেখ হাসিনা সরকার জঙ্গি দমনে মার্কিনসহ অন্যান্য দেশের সহযোগিতার প্রস্তাবকে পাত্তা না দিলেও এ ক্ষেত্রে অতি ভারত নির্ভরতা লক্ষ করা যায়। অথচ এই ভারতের সেনাবাহিনীসহ এর অঙ্গীভূত বিভিন্ন সংস্থা নিজ দেশে সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থ। মুম্বাই ও পাঠানকোটে জঙ্গি হামলা মোকাবিলা করতে ভারতীয় বাহিনীকে কতটা হিমশিম খেতে হয়েছে তা টিভি পর্দায় আমরা অনেকেই দেখেছি।
তাছাড়া মাওবাদীদের হাতে অহরহ ভারতের সেনাসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিহত হওয়ার খবরাখবর আমরা পেয়ে থাকি। অতি সম্প্রতি মাওবাদীদের পোতা মাইন বিস্ফোরণে ১০ জন ভারতীয় সেনা সদস্যের নিহত হওয়ার খবর মিডিয়ায় এসেছে। সুতরাং যে ভারত নিজ দেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থ ও অযোগ্যতার পরিচয় দিয়ে আসছে আর সেই দেশটি কিনা জঙ্গি সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজেকে একা ভাববেন না।’ এ ছাড়া নৈতিক ও জাতীয় স্বার্থের দৃষ্টিকোণ হতেও জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে ভারতের সহায়তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কারণ এই ভারত প্রায় প্রতিনিয়ত সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষ হত্যা করছে। পানি আগ্রাসন চালিয়ে দেশকে মরুভূমিতে পরিণত করছে। যার নেতিবাচক প্রভাব মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর পড়ছে।
গত ২৪ জুলাই দৈনিক ইনকিলাব-এ ‘ফের বেপরোয়া বিএসএফ’ শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ‘চলতি জুলাই মাসে বিএসএফ ৫ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। গত ৭ মাসে নিহতের সংখ্যা ২১। আর ১০ বছরে সীমান্তে প্রাণহানি ৬৮৪।’ ভারত সরকার এবং বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময় সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা নিছক প্রতিশ্রুতি বা কথার কথা থেকে গেছে। বিশ্বের আন্তর্জাতিক সীমান্তে সবচেয়ে বেশি মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটে থাকে বাংলাদেশ- ভারত সীমান্তে। এ হত্যাকা-ের প্রায় ১০০ ভাগই ঘটে থাকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের তরফ হতে। বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষকে প্রতিনিয়ত হত্যাকারী ভারত কিনা জঙ্গি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাংলাদেশের জনগণের জীবন বাঁচাবে! একে নিষ্ঠুর পরিহাস ছাড়া আর কিইবা বলা যেতে পারে।
শুধু তাই নয়, ভারত শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সকল নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে (বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করছে) এবং ভরা মৌসুম অর্থাৎ বর্ষাকালে ব্যাপক পানি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশকে ডুবিয়ে মারছে। এতে করে শুধু পরিবেশগত বিপর্যয় নয়, মানুষ ও অন্যান্য প্রাণিকূলের অস্তিত্বও বিপন্ন হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতের প্রতি অতি নতজানু সরকার সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। ১৩২০ মেগাওয়াটের এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে বছরে উৎপাদিত হবে ৭৯ লক্ষ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড। যা প্রায় ৩৪ কোটি গাছ কেটে ফেলার সমান। এতে করে এ অঞ্চলে ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটবে। এই হলো বাংলাদেশের প্রতি বন্ধুপ্রতিম ভারতের বন্ধুত্বের প্রকৃত নমুনা।
সত্যি বলতে কি জঙ্গি দমনের ধুয়া তুলে এবং সরকারকে সহায়তার নামে ভারত এক সাথে দুটি কাজ সম্পন্ন করতে চাচ্ছে। এতে করে বাংলাদেশে ভারতের সামরিক অনুপ্রবেশ ঘটানোর একটা সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি দখলদারিত্ব কায়েমেরও মওকা মিলবে। অতি সম্প্রতি বিজেপি নিয়ন্ত্রিত আসাম বিধান সভার অধিবেশনে কংগ্রেস দলীয় এক সংসদ সদস্য বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদেরকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত সরকারকে যুদ্ধ ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ ধরনের প্রস্তাবকে বিচ্ছিন্ন কিছু ভাবা কিংবা খাটো করে দেখা সমীচীন নয়। এর মধ্য দিয়ে গোটা ভারতের ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাবহির্ভূত শাসক গোষ্ঠীর বাংলাদেশের প্রতি আসল দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। বাংলাদেশ সরকার এই আগ্রাসী বক্তব্যের আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিবাদ জানিয়েছে কিনা জানা নেই। অন্যদিকে জঙ্গি দমনের নামে সরকার দেশপ্রেমিক সব বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন ও নির্মূল করার যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কাজ শুরু করেছে ভারত তাতে শরিক হতে চায় আনুষ্ঠানিকভাবে। তাই আজ সময় এসেছে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সব দেশপ্রেমিক জনগণ ও রাজনৈতিক শক্তিকে এককাতারে এসে দাঁড়ানোর। এ জন্য গড়তে হবে ইস্পাত কঠিন জাতীয় ঐক্য।
য় লেখক : কলামিস্ট

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
সাব্বির ২৯ জুলাই, ২০১৬, ১২:৪৪ পিএম says : 1
আমরা এক থাকলে কারো সহযোগিতা লাগবে না।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন