শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পরমাণু শক্তিধর চীন-ভারত সম্ভাব্য যুদ্ধের ঝুঁকিতে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

হিমালয় অঞ্চলে চীন ও ভারতের মধ্যে সঙ্ঘটিত বিগত কয়েক দশকের প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষ এখনও বিশ্বের বৃহত্তম এবং সজ্জিত দু’টি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে একটি বৃহত্তর যুদ্ধের সূচনা করতে পারে। এ মাসে লাদাখে চীনা ও ভারতীয় সেনাদের মধ্যে ৬ ঘণ্টাব্যাপী মধ্যযুগীয় কায়দার মল্লযুদ্ধে ২০ জন ভারতীয় ও ১৬ জন চায়নিজ সেনার মৃত্যু ঘটেছে। ১৯৭৫ সালের পর প্রথমবারের মতো দুই পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত দেশ তাদের কয়েক দশক ধরে চলমান সীমান্ত বিবাদে রক্ত ঝরিয়েছে। যদিও উভয় পক্ষই এই অঞ্চলে উত্তেজনা লাঘব করার জন্য কাজ করছে, তবে ঘটনার পরের দিন থেকে দু’দেশই সীমান্তে লক্ষাধিক সৈন্য মোতায়েন করেছে। চীন ও ভারত এ অঞ্চলে তাদের ঘাঁটিগুলোতে উন্নত যুদ্ধ বিমান মোতায়েন করেছে এবং নতুন ঘাঁটি তৈরির কাজ শুরু করেছে।

দু’টি দেশ একসাথে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৩৭ শতাংশ এবং যথাক্রমে ২য় এবং ৫ম বৃহত্তম অর্থনীতি। তারা প্রতিরক্ষাতেও ২য় এবং ৩য় বৃহত্তম ব্যয়কারী এবং গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স-জিএফআই তালিকার ৪র্থ এবং ৫ম স্থানে রয়েছে, যা তাদের সম্ভাব্য সামরিক শক্তি সম্পর্কে ধারণা দেয়। চীন ও ভারতের ২টি বৃহত্তম সক্রিয় সেনাবাহিনী রয়েছে। চীনের প্রায় ২১ লাখ সক্রিয় কর্মী রয়েছে এবং ভারতের রয়েছে প্রায় ১৪ লাখ। তবে, সামগ্রিকভাবে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি-পিএলএ’কে ভারতের সেনাবাহিনীর চেয়ে প্রযুক্তিগতভাবে আরও উন্নত হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

চীনের অস্ত্রাগারে স্টিলথ যুদ্ধ বিমান, প্রচুর পরিমাণে পারমাণবিক সাবমেরিন, আরও বেশি সামরিক উপগ্রহ, ব্যাপক সংখ্যক আধুনিক যানবাহন এবং ছোট মাপের অস্ত্র রয়েছে। সেসবের কিছু অস্ত্র ব্যবস্থা হিমালয়ের মতো জায়গাকে বিবেচনায় রেখে করা হয়েছে। বিপরীতে, উন্নত সরঞ্জামের জন্য ভারতকে বরাবরই বিদেশী সরবরাহকারীদের উপর নির্ভর করতে হয়েছে এবং তার দেশীয় শিল্প চীনের সাথে প্রতিদ্ব›দ্বী করার মতো প্রয়োজনীয় অনুপাতে সরঞ্জাম তৈরি করতে সক্ষম হয়নি। পাশাপাশি, তাৎক্ষণিক হুমকি মোকাবেলায় ভারতের আরো রসদ প্রয়োজন।

চীন জিবুতিতে একটি নৌ-ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করেছে, পাকিস্তানে আরেকটি নির্মাণ করতে পারে এবং শ্রীলঙ্কার একটি বন্দর নিয়ন্ত্রণ করে। চীন ও ভারতের মধ্যে সমুদ্রসীমা না থাকলেও তারা উভয়েই ভারত মহাসাগর, বিশেষত ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরকে সংযোগকারী মালাক্কা প্রণালীতে লক্ষ্য নিবদ্ধ করেছে। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের মতো চীনের তেল আমদানির সিংহভাগও এই প্রণালী দিয়ে প্রবাহিত হয়। চীন এর গুরুত্ব সম্পর্কে গভীরভাবে সচেতন এবং ভারত মহাসাগরে তার উপস্থিতি আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ভারতের কাছেও এই প্রণালীটি সমান গূরুত্বপূর্ণ।

নিঃসন্দেহে তাই সবচেয়ে বড় ভয়, চীন ও ভারতের মধ্যে যেকোনও দ্ব›দ্ব পরমাণু যুদ্ধে পরিণত হবে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অনুমান করেছে যে, চীনে কাছে ৩শ’ ২০টি এবং ভারতের কাছে ১শ’ ৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। যদিও চীনের আরও উন্নত ডেলিভারি সিস্টেম এবং ওয়ারহেড রয়েছে, তবে দু›দেশের রক্তপাতের অর্থ হ’ল এমনকি প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমানগুলিও চীনা ও ভারতীয় শহরগুলোতে ব্যাপক ধ্বংসকান্ড ঘটাতে পারে।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার অযৌক্তিক উত্তেজনা এবং দীর্ঘ মেয়াদি সঙ্ঘাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। তবে, উষর কঠোর হিমালয় অঞ্চলের অনুর্বর ও জনশূন্য ভূমি দখলের জন্য ভারত-চীন বিরোধে এত ব্যাপক ক্ষতির ঝুঁকির নেয়াটা কতোটা যুক্তি সঙ্গত, তা এখন বিশেষজ্ঞদের প্রশ্নের সম্মুখীন। সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Md Saiful ২৭ জুন, ২০২০, ১:৩৬ এএম says : 0
ভারত যুদ্ধ করার মত দেশ না। ওরা তো ভূটানরেও ডরায়। তারা জিতে খালি বলিউড মুভির ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে
Total Reply(0)
KaZi Al AmIn ২৭ জুন, ২০২০, ১:৩৮ এএম says : 0
এই অঞ্চলে বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের মৈত্রী নাই বললেই চলে আর বাংলাদেশ থাকা আর না থাকা একই কারন বাংলাদেশের সাথে ভারতের রাজনৈতিক ও ব্যাবসায়িক মৈত্রী , কোন সামরিক মৈত্রি নাই , আর বাংলাদেশ যদি সেটা করতে চাই তবে বড় ভুল হবে , কারন ভারতের সাথে গেলে চায়না মায়ানমার কে উস্কে দিবে আর চায়নার সাথে গেলে ভারত উস্কাবে , আমেরিকা এ অঞ্চলে আসবেনা , রাশিয়া ,উত্তর কোরিয়া চিন , পাকিস্তানের মাঝে আসবে না , ,, আর ইউরোপীয়রা উপনেবেশিকতা ছাড়া কিছু বুঝে না তারা ও এখানে আর আসবে না , কারন ভারত আর আগের মত নাই যে সাহায্যের নামে আবার উপনেবেশিকতা করবে , আর চিনে ও সম্ভব না , আপাতত এটাই চাওয়া যুদ্ধ ছাড়া আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হোক
Total Reply(0)
Md Akramul Islam ২৭ জুন, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইবে ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তাদের সাহায্য চাইবে। সাথে সাথে রাশিয়া তো ভারতে দুঃখের দিনের পাশে ছিলো, তবে মোদির দ্বিমুখী নীতি তাদেরও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থায় নিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সরাসরি সমর্থন দিলে রাশিয়া চীনের পক্ষ নিতে পারে। বাংলাদেশ ছাড়া কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতকে সমর্থন করবে না।
Total Reply(0)
Ali Hyder ২৭ জুন, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
দুই দেশর সৈন্য ও সরকার কে বলছি এযুদ্ধে যেন কোন সাধারন মানুষের ক্ষতি না হয়। লড়াই করতে হলে সৈন্য সৈন্যে হোক।
Total Reply(0)
Acm Acha ২৭ জুন, ২০২০, ১:৪১ এএম says : 0
যুদ্ধ মানে ধবংশ তাই যুদ্ধ করা ঠিক না শান্তিতে মিমাংশা করাতা উত্তম
Total Reply(0)
দেবব্রত বিশ্বাস কংকন ২৭ জুন, ২০২০, ১:৪১ এএম says : 0
পারমাণবিক শক্তি ধর দুই দেশ অন্য কিছুর প্রয়োজন নাই।
Total Reply(0)
Shahin Alam ২৭ জুন, ২০২০, ১:৪১ এএম says : 0
ভারতের সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা বাংলাদেশের বর্ডারে।
Total Reply(0)
ash ২৭ জুন, ২০২০, ৯:৩১ এএম says : 0
HOPE INDIAR AKTA VALO SHIKHA HOY, INDIAR DADA GIRI KHUB BERE GASE ! HOPE PAKISTAN CHINA MILE VAROTER BACK BONE TA VEGGE DAY
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন