ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় আঞ্চলিক মহাসড়কের উপরে জমজমাট ধানের হাট বসায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রী ও জনসাধারণ। এতে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। গতকাল ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কের ভূলন্টী বাজারে ধানের হাট বসায় মহাসড়কের প্রায় ১ কিলোমিটার যানবাহনের জট তৈরি হয়।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহে দু’দিন ধানসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর হাট বসে। হাটের নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় বছরের পর বছর মহাসড়কে ধানের হাট বসছে। অটোরিকশা, ভ্যান, ভটভটি, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে ধান উঠা-নামা করে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ রংপুর বিভাগীয় শহরের বহু যানবাহনসহ স্থানীয় বাসিন্দারা চলাচল করে। এ ছাড়া দেশের বৃহত্তম তেঁতুলিয়া স্থলবন্দরের আমদানি ও রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক এই পথ দিয়ে চলাচল করে। ফলে ভূল্লী বাজার মহাসড়কে ধানের হাট বসার কারণে মানুষ ও যান চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এতে প্রায় ঘটে দুর্ঘটনা।
ট্রাকচালক মনির হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ভ‚লন্টী বাজার মহাসড়কে ধানের হাট বসায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। এই কারণে মালামাল নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্য স্থলে পৌঁছতে পারি না। তেঁতুলিয়া স্থলবন্দরের কারণে প্রতিদিন প্রায় কয়েক শত ট্রাক এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে, এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় আটকে থাকতে হয়। এছাড়াও সড়কের উপর চলছে খড় শুকানো ও ধান মাড়াইয়ের কাজ। দুর্ঘটনার আতঙ্কের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয়। কয়েকজন কৃষক জানান, এই মৌসুমে বাড়িতে কাঁচা মাটিতে ধান-খড় শুকাতে বেশি সময় লাগে। তা ছাড়া বৃষ্টি বাদল, ঝড়ে ক্ষতিও হয়। তাই পাকা সড়কে ধান এবং খড় শুকিয়ে থাকেন। পথচারিরা বলেন, নিয়ম-কানুন তোয়াক্কা না করে সড়কের উপর খড় শুকাচ্ছেন স্থানীয় কৃষক-কৃষাণীরা।
এ বিষয়ে ভ‚লন্টী বাজারের ইজারাদার ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী মুক্তি বলেন, ভূলন্টী বাজারে মহাসড়কের উপর ধানের হাট বসায় যাত্রী ও জনসাধারণের চলাচলে অনেক সমস্যা হচ্ছে। ইউএনওর নির্দেশে দ্রুত কুমারপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ধান হাট স্থানান্তর করতে কাজ শুরু করেছি।
এই বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঠাকুরগাঁত্তয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মনসুরুল আজিজ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মহাসড়কে ধানের হাট বা কোনো কিছু রাখা যাবে না। এই বিষয়টি জানতাম না। অতিদ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এরপরও যদি ধানের হাট বসে সে বিষয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল করিম বলেন, জনগণের ক্ষতি হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। মাইকিং করে দিবো, কিছু মানুষ আছে যারা সড়কে খড় শুকানো কাজ করছেন। ঠাকুরগাঁও জেলার সকল আঞ্চলিক সড়কগুলোতে ধানের খড় শুকানো-মাড়াই করার ফলে সড়ক দুর্ঘটনা ঝুঁকি বেড়েই চলছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন এলাকাবাসী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন