শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কাল বাজেট পাস অর্থ বিল আজ

আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় বাড়তি সতর্কতা

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

নানা সতর্কতা সত্তে¡ও একের পর এক এমপি ও মন্ত্রীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়ে যাতে কেউ করোনা আক্রান্ত না হন, সেজন্য বাড়তি সতর্কতা নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অধিবেশনে যোগ দিবেন, এমন সংসদ সদস্যদের করোনাভাইরাসের নমুনা টেস্ট করানো হয়েছে। বাজেট পাস হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদেরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

জাতীয় সংসদ সূত্রে জানা গেছে, দেশের ইতিহাসে সংক্ষিপ্ততম বাজেট অধিবেশন মাত্র ৮ কার্যদিবসে শেষ হচ্ছে। গত ১০ জুন শুরু হওয়া অধিবেশন এ পর্যন্ত ৫ কার্যদিবস বসেছে। আজ অর্থ বিল পাস ও পরদিন ৩০ জুন বাজেট পাস হবে। এরপর একদিন সমাপনী হবে। অতীতে বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এটি হচ্ছে সংক্ষিপ্ততম অধিবেশন। যে অধিবেশনে মাত্র একদিন প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত এই অধিবেশনে অন্তত ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা আলোচনার পরিকল্পনা থাকলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওযায় তা কমিয়ে আনা হয়। অতীতে বাজেটের ওপর ৬০ থেকে ৬৫ ঘণ্টা আলোচনার রেকর্ড রয়েছে। এদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ দূরের কথা, অনেকে অধিবেশনে যোগ দিতে পারছেন না। আবার নমুনা টেস্টে উত্তীর্ণ (করোনা নেগেটিভ) এমপিদের গৃহবন্দি থাকতে হচ্ছে। এজন্য মন্ত্রী-এমপিদের অনেকে অধিবেশনে যোগ দেয়ার জন্য হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন বলে সরকারি দলের একাধিক সংসদ সদস্য জানিয়েছেন। তারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। অধিবেশনে স্বল্প সংখ্যক এমপির উপস্থিতি ও আলোচনায় এবার বাজেট পাসের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, অধিবেশন কক্ষসহ সংসদ ভবনে করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অধিবেশন আরো সংক্ষিপ্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আগামী ২৯ ও ৩০ জুন দুই কার্যদিবস চলবে। এরপর অধিবেশন মুলতবি করে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে কোন একদিন সমাপনী করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করার পাশাপাশি উপস্থিতিও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ জন সংসদ সদস্য উপস্থিত থাকছেন। বিদ্যমান আসন বিন্যাস পরিবর্তন করে তিন থেকে চার ফুট দূরত্ব বজায় রেখে আপৎকালীন নতুন আসন বিন্যাস করা হয়েছে। এছাড়া প্রবীণ ও অসুস্থ সদস্যদের অধিবেশনে যোগ না দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে সংসদ অধিবেশনকে ঘিরে বাড়তি সতর্কতা ছিলো শুরু থেকেই। অধিবেশন শুরুর আগে সংসদে দায়িত্ব পালন করবেন এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা টেস্ট করানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। টেস্টে করোনা নেগেটিভ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইসোলশনে রাখা হয়। কিন্তু তারপরও মন্ত্রী-এমপি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা আক্রান্তের খবর এবং সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ’র মৃত্যুর পর সংসদ সদস্যদের নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়। অধিবেশনে যোগ দিবেন এমন ১৭০ জন সংসদ সদস্যকে টেস্ট করাতে বলা হয়। তাদেরকে ভবনের মেডিকেল সেন্টারে নমুনা পরীক্ষার জন্য সময়ও বেঁধে দেয়া হয়। তবে অনেকেই ঢাকার বাইরে থাকায় তারা নিজ নিজ এলাকায় নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত ২০ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত সেখানে ৯৮ জন সংসদ সদস্য নমুনা দিয়েছেন। সেখানে সর্বশেষ সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ফেরদৌসি ইসলাম জেসি’র করোনা পজেটিভ এসেছে। তিনি বর্তমানে মানিক মিয়া এভিনিউস্থ ন্যাম ভবনের বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন। এর আগে করোনা পজেটিভ ফলাফল পেয়েছেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি এনামুল হক। তিনি বর্তমানে রাজধানীর আদাবরে নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ পর্যন্ত ১৮ জন মন্ত্রী-এমপি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া নমুনা পরীক্ষায় চলতি মাসে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পজেটিভ এসেছে। আর সংসদ ভবনে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার বাহিনীর প্রায় দুশ’ সদস্য করোনা আক্রান্ত হন। যাদের বেশিরভাগই ইতোমধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে আছেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক প্রধান হুইপ উপাধ্যক্ষ মো. আবদুস শহীদ, সাবেক হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার, রেল মন্ত্রণালয় বিষয়ক কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এবং সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়, মোসলেম উদ্দিন, ফরিদুল হক খান দুলাল, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল, মোকাব্বির খান ও মাশরাফি বিন মুর্তজা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
MD Abdul Kayuaim Hossain ২৯ জুন, ২০২০, ১:০০ এএম says : 0
জবরদস্তির বাজেট। জনগণের স্বার্থরক্ষা হয়নি,তাই আমি এই বাজেট কে প্রত্যাখ্যান করলাম।
Total Reply(0)
Maruf Kamrul ২৯ জুন, ২০২০, ১:০৪ এএম says : 0
বাজেট নিয়া যতদূর লেখা পড়া জানা আছে, বাংলাদেশের বাজেট সব ভুলিয়ে দিয়েছে৷ সো এটা নিয়া মন্তব্য করা ভয়ংকর!
Total Reply(0)
Runa Khatun ২৯ জুন, ২০২০, ১:০৪ এএম says : 0
দেশের এই পরিস্থিতিতে সরকার জনগণের জন্য যে বাজেট প্রণয়ন করেছে তা খুবই প্রশংসনীয়।
Total Reply(0)
Parvez Khan ২৯ জুন, ২০২০, ১:০৪ এএম says : 0
অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, এবারের বাজেটে মানুষকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। মানুষ না থাকলে বাজেট কার জন্য? বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে।
Total Reply(0)
মারিয়া আক্তার সুমি ২৯ জুন, ২০২০, ১:০৫ এএম says : 0
আমার মনে হয় সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছে তাই আগের চেয়ে কৃষিতে ভুতকী বেশি যাবে।চর এর প্রধান উদ্দেশ্য করোনা একটা দির্ঘ সময় থাকবে আর এই দির্ঘ সময়ে যেন কোনো প্রকার খাদ্য ঝুকিতে না পড়ে তাই কৃষিকে আরো আধুনিক এবং ভারি যন্ত্রের ব্যাবহারের জন্যই ভুর্তকী বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।সো অর্থনীতি উদ্ধারের তালিকায় কৃষি যাওয়াটা অসাভাবিক কিছুনা
Total Reply(0)
Md Ohidul Islam ২৯ জুন, ২০২০, ১:০৬ এএম says : 0
বর্তমান সরকার সবকিছু ভেবেচিন্তেই দেশের এই দুঃসময়ে বাজেট করেছে এবার যে বাজেট হয়েছে সেটি জনগণের জন্য করা হয়েছে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন