মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনীতে ব্যাপক পরিবর্তন সেনাবাহিনীর দুই জেনারেলের পদত্যাগ

প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর তুরস্কের সামরিক বাহিনীর তিন প্রধানের পদ পরিবর্তন না হলেও অন্যান্য স্থানে ব্যাপক সংস্কার আনা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম মিলিটারি কাউন্সিলের (ইয়েস) সভায় এসব পরিবর্তন আনা হয়। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন এ তথ্য জানিয়েছেন। গত ১৫ জুলাই অভ্যুত্থান চেষ্টার পর এটাই ছিল তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইয়েস সভা। প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের কাছে পাঠানো হয়। তুরস্কের চিফ অব জেনারেল স্টাফ হিসেবে জেনারেল হুলুসি আকার তার পদে বহাল থাকছেন। টার্কিশ ল্যান্ড ফোর্সেস-এর কমান্ডার হিসেবে জেনারেল সালিহ জেকি কোলাক, বিমানবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল আবিদিন উনাল এবং নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল রিসেপ বুলেন্ত বস্তানোগ্লুও তাদের পদে বহাল থাকছেন।
আধা সামরিক বাহিনী গেন্ডারমেরি জেনারেল কমান্ড ও জেনারেল স্টাফ ডেপুটি চিফ পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই দুই পদে এসেছেন যথাক্রমে জেনারেল ইয়াসের গুলার এবং জেনারেল উমিত দান্দার। জেনারেল মুসা অ্যাভেসার এখন নতুন ফার্স্ট আর্মির কমান্ডার, জেনারেল ইসমাইল মেতিন তেমেল সেকেন্ড আর্মির কমান্ডার হয়েছেন। ওদিকে, ৯৯ জন কর্নেলকে জেনারেল ও অ্যাডমিরাল হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। আর ২০ জেনারেল ও অ্যাডমিরালের চাকরি এক বছর বাড়ানো হয়েছে। বৈঠকের আগে অভ্যুত্থান চেষ্টার সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ১৪৯ জেনারেলসহ ১,৬৮৪ সৈনিককে বরখাস্ত করা হয়। গত সপ্তাহে ৮৭ জেনারেল, ৭২৮ কমিশনপ্রাপ্ত অফিসার, ২৫৬ সার্জেন্টকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর আগে, তুরস্কের সেনাবাহিনীর দুইজন জেনারেল চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের অব্যাহতির কারণ জানা যায়নি। গত ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে। গত ১৫ জুলাইয়ে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর তুরস্কে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার ব্যক্তিকে চাকরিচ্যুত ও গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে সেনাসদস্যরা।
এদিকে, তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্র রক্ষায় সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশটির বিরোধী দলগুলো। পাশাপাশি ব্যর্থ অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক দমন-পীড়নেরও সমালোচনা করেছে তারা। গত ২৪ জুলাই ২০১৬ তারিখে পুরনো অস্বস্তি পেছনে ফেলে কাঁধে কাঁধ রেখে ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধী দল সিএইচপির সমাবেশে যোগ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল একেপি। রিপাবলিক অ্যান্ড ডেমোক্রেসি শীর্ষক এই সমাবেশে অংশ নেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। একেপি আর সিএইচপি সমর্থক হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে পুরো সমাবেশে যেন এক ভিন্নমাত্রা যোগ হয়। উপস্থিত লোকজনের হাতে থাকা পতাকা যেন পুরো তাকসিম স্কয়ারকেই তুর্কি পতাকার এক বিশাল সমুদ্রে পরিণত করে। রাজনৈতিক আদর্শের দ্বন্দ্ব মেনে নিয়েই সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার পক্ষে আওয়াজ তোলেন সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা।
সিএইচপি প্রধান কামাল খেলেচদারওলো বলেন, তুর্কি জনগণ, পার্লামেন্ট এবং এই স্কয়ারে জড়ো হওয়া মানুষেরা গর্বের সঙ্গে গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছি। এতে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। তিনি বলেন, আজ অভ্যুত্থান এবং স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন, মানুষের কথা শোনার দিন। সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে আমরা আজ ইতিহাস সৃষ্টি করলাম। সিএইচপি প্রধান বলেন, আমরা গণতন্ত্রকে সমর্থন করি। এদেশে বহুবার সেনাবাহিনীর অভ্যুথান হয়েছে। যার জন্য মূল্য দিতে হয়েছে পুরো তুরস্ককে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ইস্তানবুল-এর তাকসিম স্কয়ারে জড়ো হন সরকারি ও বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী। ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্রের প্রতি নিজেদের আস্থার জানান দিয়েছেন তারা। সম্মিলিতভাবে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। ১৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম বিরোধী দলের আয়োজিত কোন সমাবেশে অংশ নিলো তুরস্কের শাসকদল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি)। তাকসিম স্কয়ারে ওই সমাবেশের ডাক দেয় তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি। পরে একেপির পক্ষ থেকে জানানো হয় তারাও ওই সমাবেশে যোগ দেবেন। গত শুক্রবার সিএইচপি জানায়, সব রাজনৈতিক দল ও গ্রুপকে নিয়ে তারা সভার আয়োজন করবে। ওই দিনই একে পার্টির মুখপাত্র ইয়াসিন আকতাই ঘোষণা করেন, তারা এতে যোগ দেবেন। ডেইলি সাবাহ ও ওয়েবসাইট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন