বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জেএমবি কমান্ডার মাসুদের হাত ধরে জঙ্গি হয় রায়হান

প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হালিম আনছারী, রংপুর থেকে : ঢাকার কল্যাণপুরে যৌথ অভিযানে নিহত ৯ জঙ্গির মধ্যে রায়হানুল কবির জেএমবি রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানার হাত ধরেই জঙ্গি হয়ে ওঠে। আর এই জঙ্গির মৃত্যুর খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারি ইউনিয়নের পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়া গ্রামের শাহজাহান কবিরের ছেলে রায়হানুল কবির। সে মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করেছে। পুলিশ তার নাম রায়হানুল কবির বললেও এলাকাবাসী তাকে শাহীনুল ইসলাম নামেই চেনে। মাদরাসার সুপার গিয়াস উদ্দিন আশরাফী জানান, রায়হানুল কবির মাদরাসা থেকে ২০১৩ সালে এ গ্রেড পেয়ে দাখিল পাস করে। এলাকাবাসী জানায়, জেএমবির অন্যতম নেতা বাংলা ভাইয়ের সহযোগিতায় নিহত রায়হানুল কবিরের ওই এলাকায় একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই মসজিদের পাশেই জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানার বাড়ি। তার বাড়ি ঘেঁষেই রায়হানুল কবিরের বাড়ি। মাসুদ রানার সাথে তার বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। এ কারণেই রায়হানুলের মৃত্যুর খবর শুনে স্থানীয়রা ধারণা করছেন, তার জঙ্গি হয়ে ওঠার জন্য জেএমবি কমান্ডার মাসুদ রানাই দায়ী। মাসুদ রানা রংপুরে চাঞ্চল্যকর জাপানি নাগরিক হোসি কুনিও, মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা ও বাহাই নেতা রুহুল আমিনকে গুলি করে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি এবং জামাআতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার। বর্তমানে সে কারাগারে। এছাড়াও ওই তিন মামলার অপর এক আসামি জেএমবি সদস্য ইছাহাক আলীর বাড়িও একই এলাকায়।
এদিকে, নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে ওই বাড়িতে পুলিশি পাহারা জোরদার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত জঙ্গি রায়হানুল কবিরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার মা রাহেলা বেগম শয্যাশায়ী হয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি তিনি। বাড়িতে রায়হানুল কবিরের বাবা শাহজাহান কবিরকে দেখা যায়নি। পুলিশ তাকে পলাতক বললেও বাড়ির পাশের আমিনা বেগম নামে একজন বলেন, শাহজাহান অসুস্থজনিত কারণে দুই দিন আগে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। এদিকে রায়হানুল কবিরের চাচা আব্দুর রউফ জানান, ছোট বয়স থেকেই নম্র স্বভাবের রায়হান পড়ালেখা করত স্থানীয় দামুরচাকলা দেওয়ান সালেহ আহম্মেদ দাখিল মাদরাসায়। সেখান থেকে দাখিল পাস করার পর দেউতি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয় সে। বেশিদিন কলেজে পড়ালেখা করেনি রায়হান। প্রায় দুই বছর আগে পোশাক কারখানায় কাজ করার কথা বলে ঢাকা চলে যায়। মাঝে মাঝে বাড়িতে আসত এবং যোগাযোগ রাখত। তিনি আরো জানান, সর্বশেষ গত রমজানের দু’দিন আগে বাড়িতে আসার পর পয়লা রোজার দিন ঢাকা যাওয়ার কথা বলে চলে যায় রায়হান। এর পর থেকে আর পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেনি রায়হানুল কবির। সম্প্রতি ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযানে নিহতের তালিকায় রায়হানের নাম ও ছবি দেখে তারা নিশ্চিত হন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন