শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

এবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে সরকারি বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২০, ৪:২০ পিএম

কয়েক দিন আগেই বিজেপির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বলেছিলেন, তিনি ইন্দিরা গান্ধীর নাতনি। অন্য কিছু বিরোধী নেতার মতো বিজেপির অঘোষিত মুখপাত্র নন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত বহুজন সমাজবাদী পার্টি নেত্রী মায়াবতীকে লক্ষ্য করেই এই অভিযোগ করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা। এর পরেই বুধবার সরকারি বাংলোও ছাড়তে বলা হলো তাকে। এর কয়েক মাস আগে তার এসপিজি সুরক্ষা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে, ১ আগস্টের মধ্যে সরকারি বাংলো খালি করে দিতে হবে, না হলে প্রচুর জরিমানার মধ্যে পড়বেন তিনি। প্রিয়াঙ্কা সাংসদ নন, দলের সভাপতিও নন, কোনও সরকারি উঁচু পদও তার নেই। তা সত্ত্বেও গত ২৩ বছর ধরে ইন্দিরা গান্ধীর নাতনি যে দিল্লিতে সরকারি বাংলোতে আছেন, সেটা সুরক্ষার কারণে। রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের পর তার পরিবারের সবাইকে এসপিজি নিরাপত্তা দেয়া হয়েছিল। তাই বিয়ের পর প্রিয়াঙ্কাও এসপিজি নিরাপত্তার কারণেই সরকারি বাংলো পেয়েছেন। তিনি তার স্বামী রবার্টের বাড়িতে যেতে চাইলেও এসপিজি তা মানেনি। এসপিজি সুরক্ষা সরে যাওয়ার পর তিনি আর সরকারি বাড়ি পাওয়ার অধিকারী নন। তাই এই নোটিশ।

অবশ্য বিজেপি-র দুই প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং মুরলী মনোহর জোশীও আর সাংসদ নন। ২০১৯-এ তাঁদের প্রার্থী করা হয়নি। তারা কোনও সরকারি পদেও নেই। তাদের এসপিজি সুরক্ষাও নেই। তা সত্ত্বেও তারা সরকারি বাংলোতে আছেন। সূত্র জানাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে কোনও মন্ত্রী বা প্রবীণ সাংসদের নামে বাংলো থাকলে তিনি যদি তা দিয়ে দেন, তা হলে তারা থাকতে পারেন।

তবে প্রিয়াঙ্কা বা কংগ্রেস এই সব প্রশ্নের মধ্যে এখনও যায়নি। তারা এই প্রশ্নও করেনি, এসপিজি সুরক্ষা সরিয়ে নেয়ার সময়ই কেন বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিল না মোদি সরকার। প্রিয়াঙ্কা বরং দিল্লি ছেড়ে লখনউতে বাড়ি নিয়ে থাকতে চাইছেন। কারণ, গান্ধী পরিবার তথা কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত, প্রিয়াঙ্কা উত্তর প্রদেশ সামলাবেন। সেখানে দলকে চাঙ্গা করবেন। সেই লক্ষ্য নিয়ে গত বছর দেড়েক ধরে প্রিয়াঙ্কা এগোচ্ছেন। কিন্তু কংগ্রেসকর্মীরা মনে করেন, দিল্লিতে বসে উত্তর প্রদেশের রাজনীতি করা যায় না।

তাই তিনি লখনউতে বাড়ি নিতে চান। সেখানে থেকে যোগীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চান। আর গান্ধী পরিবারের দুই খাসতালুক আমেঠি ও রায়বেরিলিকেও রক্ষা করতে চান। গত ভোটে আমেঠি হাতছাড়া হয়েছে। রাহুল হেরেছেন। এ বার আমেঠির পাশাপাশি উত্তর প্রদেশে দলকে চাঙ্গা করার কাজটা মন দিয়ে করতে চান প্রিয়াঙ্কা। তার উপর ২০২২-এ উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। সে কথা মাথায় রেখেই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশে এবার লখনউতেই থাকা শুরু করতে চলেছেন কংগ্রেস নেত্রী।

কিন্তু নয়াদিল্লির রাজনৈতিক ইতিহাসে এ ধরনের সংকীর্ণতা অতীতে ছিল না। বাজপেয়ী জমানায় কংগ্রেসের নেতারা সংসদের সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও সরকারি বাংলোতে থাকার সুযোগ পেয়েছেন। আবার কংগ্রেস জমানায় বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও সরকারি বাংলোতে থেকেছেন। কংগ্রেসের তরফে তাই অভিযোগ, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। গান্ধী পরিবারের প্রতি ঘৃণা থেকেই এই ‘অপমানজনক’ পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা এটাকে লড়াই হিসেবেই দেখছেন।

তবে, কাজটা খুবই কঠিন। উত্তর প্রদেশে দলের সংগঠন বলে প্রায় কিছুই নেই। নেতারা এখনও কিছু অবশিষ্ট আছেন। তবে মূলত নিষ্ক্রিয়। অবশ্য এটাও ঠিক, মায়াবতী, অখিলেশ যাদব যেমন বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর মাঠে নেমে আন্দোলন বা প্রতিবাদ খুব একটা করছেন না। সেখানে একা প্রিয়াঙ্কাকেই দেখা যাচ্ছে প্রতিবাদ করতে। ফলে বিরোধীদের জমিটা খালি আছে। সেই জমি দখল করার কাজটা করতে চান তিনি। সূত্র: দ্য ওয়াল।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন