বাংলাদেশি রফতানি পণ্য গ্রহণ না করার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো।
ফলে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় শতশত পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকা পড়ে আছে বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে। বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ৫টি সংগঠন, বাংলাদেশি রফতানি পণ্য গ্রহণ না করা পর্যন্ত ভারত থেকে সকল ধরনের পণ্য আমদানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে গত ৩ মাসে ভারতের সাথে রফতানি বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা।
বেনাপোল বন্দরে আটকা পড়েছে ৫০০ ট্রাক রফতানি বোঝাই পণ্য। গত তিন মাস ধরে এসব ট্রাক আটকে আছে বেনাপোল বন্দরে। দীর্ঘ ৩ মাস বন্ধ থাকার পর গত ৭ জুন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্য চালু হলেও বাংলাদেশি রফতানি পণ্য গ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করে ভারত।
ভারত সরকার ও সে দেশের ব্যবসায়ীরা ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে রফতানির অনুমতি দিলেও বাংলাদেশি রফতানি পণ্য ভারতে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় রফতানি পণ্যের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় তৈরি পোশাক, গার্মেন্টস পণ্য ও পাটজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য থাকায় রোদ বৃষ্টিতে ভিজে পুড়ে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ মফিজুর রহমান সজন জানান, ভারত আমদানি পণ্য দিলেও তারা বাংলাদেশি রফতানি পণ্য গ্রহণ করছেন না। ফলে বন্দর ব্যবহারকারী ৫টি সংগঠন ভারত থেকে আসা আমদানি বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১১ টায় চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো স্থানীয় সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন মিলনায়তনে জরুরি সভায় মিলিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় বাংলাদেশি রফতানি পণ্য গ্রহণ না করা পর্যন্ত ভারত থেকে সকল ধরণের পণ্য আমদানি বন্ধ থাকবে। রফতানি পণ্য ভারতে ঢুকতে না পেরে মোটা অংকের ট্রাক ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে বাংলাদেশি রফতানি কারকদের।
বেনাপোল কাস্টমস-এর সহকারী কমিশনার আকরাম হোসেন জানান, গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো আমদানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে ভারত থেকে। বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো বাংলাদেশি রফতানি পণ্য গ্রহণ না করার প্রতিবাদে গত ১ জুলাই থেকে ভারতীয় পণ্য আমদানি বন্ধ করে দেয়। তবে বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমস হাউসে কাজকর্ম চলছে স্বাভাবিকভাবে।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক মামুন কবীর তরফদার জানান, বাংলাদেশি রফতানি পণ্য ভারত গ্রহণ না করার প্রতিবাদে বাংলাদেশি বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন গত বুধবার থেকে ভারতীয় পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।
ফলে গত ২ দিন ধরে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে বন্দরে কাজ কর্ম স্বাভাবিক রয়েছে। বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি অব্যাহত আছে। ওপারে শতশত আমদানি পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে আছে যত্রতত্র। বেনাপোল বন্দর এলাকায় ৪/৫ শ’ রফতানি পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন