শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি হুমকি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আর্টিক্যাল নাইনটিন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে কেবল মত প্রকাশের জের ধরে দেশজুড়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যাপকহারে মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আর্টিকেল নাইনটিন। একইসঙ্গে গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংস্থার বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল শুরু থেকেই। নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে তৃণমূলে ত্রাণ বিতরণ পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা, অস্বচ্ছতা ও অব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো দিনে দিনে স্পষ্ট হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, সরকার এসব দুর্বলতা কাটানোর প্রতি মনোযোগী হবে। অথচ এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভিন্নমত ও সমালোচনা দমনের নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করায় নবম শ্রেণির কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য লজ্জাজনক দৃষ্টান্ত।

উল্লেখ্য, মোবাইলে কথা বলার ওপর কর বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনায় ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে কটূক্তির অভিযোগে গত ২০ জুন ময়নসিংহের ভালুকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রকে গ্রেফতারের পর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কেবল মত প্রকাশের কারনে স¤প্রতি লেখক, কার্টুনিস্ট, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক-সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

ফারুখ ফয়সল বলেন, স্থিতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠা ও টেকসই উন্নয়নের স্বার্থেই স্বাধীন মতপ্রকাশের চর্চা নির্বিঘ্ন হওয়া প্রয়োজন। অথচ জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের দেয়া এ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতিগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইন প্রয়োগের নিয়মিত আহ্বান সত্তে¡ও, সরকার বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সংশোধন করতে কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না ।

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে কারাবন্দীদের জামিনে মুক্তি দেয়া এবং ভার্চুয়াল আদালতে ৩০ দিনে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ৪৫ হাজার ব্যক্তির জামিনের বিষয় উল্লেখ করে ফারুখ ফয়সল বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযুক্তরা খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো ভয়ঙ্কর কোন মামলার আসামি নন। তবুও তাদের জামিন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের জামিন আবেদন এ পর্যন্ত আটবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।

ফারুখ ফয়সাল কাজল ও ওই স্কুলছাত্রসহ মতপ্রকাশের কারণে ডিজিটাল আইনে গ্রেফতার সব অভিযুক্তকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। আর্টিকেল নাইনটিনের হিসাবে, মতপ্রকাশজনিত ঘটনায় ২০১৮ সালে ৭১টি ও ২০১৯ সালে ৬৩টি মামলা হয়েছে। অথচ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই দায়ের হয়েছে ১১৩টি মামলা। মত প্রকাশের কারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২০৮ জন ব্যক্তি এসব মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৫৩ জনই সাংবাদিক। অভিযুক্তদের মধ্যে ১১৪ জনকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই এখনো জামিনের প্রতীক্ষায় আছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Jack Ali ৪ জুলাই, ২০২০, ৯:৪১ পিএম says : 0
O'Muslim still there is time to rule our beloved country by the Law of Allah so that enemy of Allah cannot harm us..
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন