অতিরিক্ত গরম আর ক্লান্তিতে বাসের মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল উনিশ বছরের মেয়ে আংশিকা। আর তাতেই করোনা সন্দেহে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় মেয়ে এবং মাকে। এরপর মারা যায় আংশিকা। এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে ভারতের উত্তরপ্রদেশের মথুরায়।
আংশিকা বাসের মধ্যে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে বাসের চালক ও হেল্পারসহ বাসযাত্রী সকলেই করোনা সন্দেহে কানাষুষা শুরু করে দেয়। মা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, তাঁর মেয়ে সুস্থ আছে, অতিরিক্ত গরমে ক্লান্তিতে জ্ঞান হারিয়েছে। চোখে-মুখে পানি দিলেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কোন কথা না শুনেই মা এবং মেয়েকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হলো বাস থেকে। পরে রাস্তার ধারেই বসে অসহায় মা দেখলেন, তার মেয়ে আংশিকার দেহে প্রাণপাখি আর নেই।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। আংশিকার হৃদপিণ্ড আকারে বড়, আর তা থেকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট স্বাভাবিক ঘটনা।
এদিকে মথুরা পুলিশের দাবি, করোনা আতঙ্কের কারণেই অসুস্থ আংশিকাকে বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনও কথা কাটাকাটি হয়নি। বরং তারা যাতে অন্য বাস ধরতে পারেন, সেই কারণেই টোল প্লাজার সামনে নামানো হয়েছিল মা-মেয়েকে।
আংশিকার বাবা পটপরগঞ্জে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করেন। নয়ডায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে বলেই মেয়েকে এবং স্ত্রীকে দেশের বাড়ি শিকোহাবাদে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। আর সেই জন্য নয়ডার সেক্টর ৩৭ থেকে উত্তরপ্রদেশের সরকারি বাস ধরেন আংশিকা এবং তার মা সর্বেশ দেবী।
আংশিকার পরিবারের দাবি, বাসকর্মী ও সহযাত্রীদের ওরকম ব্যবহার সহ্য করতে পারেননি আংশিকা। আংশিকার ভাই শিব জানায়, রওনা দেওয়ার সময় তার দিদি সুস্থ ছিল। ওর কোনও অসুস্থতা বা করোনার উপসর্গ ছিল না। বাসকর্মীদের অমানবিক আচরণই আংশিকাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন তার ভাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন