শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুষ্টিয়ায় চিকিৎসক কোভিডে আক্রান্ত হয়েও ৮জন প্রসূতির অস্ত্রোপচার!!!

উচ্চ ঝুঁকিতে মা ও শিশু

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২০, ৪:০১ পিএম

কুষ্টিয়ায় একজন চিকিৎসক কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়ার পরে ও গত বৃহস্পতিবার সারাদিন বিভিন্ন ক্লিনিকে ৮টি প্রসূতি মায়েদের অস্ত্রোপচার করেন বলে জানা যায়। এতে ওই সব মা ও নবজাতকের করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।

সফর আলী নামের ওই চিকিৎসক গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (গাইনী বিভাগ)।তার বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায়।

এই ব্যাপারে চিকিৎসকের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন 'পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পরপরই আমি অস্ত্রোপচার কক্ষ ছেড়ে বাড়িতে চলে আসি। তবে কোনোো কোভিড উপসর্গ ছিল না। অস্ত্রোপচার করা রোগীরা ভালো আছেন তাদের কোনো অসুবিধা নেই। '

সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানা যায় চিকিৎসক সফর আলী গত বুধবার দৌলতপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোভিড পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। পরদিন রাতেই তার ফলাফল পজিটিভ আসে ও সাথে সাথে তাকে মোবাইলফোন এ বিষয়ে অবহিত করা হয়।

বিভিন্ন ক্লিনিকের সূত্রে জানা যায়, নমুনা দেওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন ক্লিনিকে অন্তত ৮টি প্রসূতি মায়েদের অস্ত্রোপচার করেন। দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ৩ টি ক্লিনিক সহ ঝাঊদিয়া বাজার ও আল্লাহরদর্গা বাজার এলাকার ক্লিনিকে অস্ত্রোপচার করেন।

দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের 'মায়ের হাসি' ক্লিনিকের মালিক বলেন, ' বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় ও রাত ৯টায় এ ক্লিনিকে তিনি দুজন প্রসূতির অস্ত্রোপচার করেন। সে সব মায়ের ও নবজাতকেরা সংক্রামণের ঝুঁকিতে রয়েছে। কোভিড পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়ার পর তার অস্ত্রোপচারে আসা ঠিক হয়নি।'

অভিযোগে আরো জানা যায় তিনি গোপালগঞ্জে কর্মরত থাকলেও তিনি প্রায় সময় দৌলতপুরে থাকেন। দৌলতপুরে বিভিন্ন ক্লিনিকের সাথে তিনি চুক্তিবদ্ধ রয়েছেন।

শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেন বলেন ' এ কলেজে নিদিষ্ট কয়েক দিন দায়িত্ব পালনের পরে চিকিৎসকদের কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। সেটা হোটেল বা বাসায় হয়ে থাকে।ডাঃ সফর আলী বাসায় গিয়ে থাকলেও তার কোয়ারেন্টিন অমান্য করে ক্লিনিকে অস্ত্রোপচার করা ঠিক হয়নি। এটা তিনি করতে পারেন না৷'

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন 'ওই সব মা ও শিশু এবং ক্লিনিকগুলোর নার্স-স্টাফরা তীব্র আতঙ্কে ও ঝুঁকিতে রয়েছে।'

ভুক্তভোগী মা ও পরিবারের সদস্যগণ ডাক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

কারা এর দায়ভার গ্রহণ করবে বলে জানতে চাইলে, কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন আশ্বাস দেন এ বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কুষ্টিয়ায় কোভিডে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন ও ৭০৮ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন