রাজধানীর কুরবানির পশুর হাটের ইজারা নিয়ে এখনো দোদুল্যমান ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। উত্তর সিটি মাত্র তিনটি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করলেও দক্ষিণে এখনো চূড়ান্ত হয়নি একটিও। করোনায় অর্থ সংকট ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা স্বীকার করছেন ইজারাদাররা। তারপরেও ইজারার জন্য দুই সিটি করপোরেশন ভবনেই ইজারাদারের দেখা মেলে প্রতিদিনই। করোনায় দোহাই দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম টাকায় হাট ইজারা নেয়ার তদ্বিরে ব্যস্ত অনেকেই। ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীতে ২৪-২৫টি পশুর হাট বসে। এবার ঢাকা দক্ষিণে ১৪ ও উত্তরে ১০টি পশুর হাট বসানোর জন্য সিটি করপোরেশন তালিকা চূড়ান্ত করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঢাকায় এত পশুর হাট বসলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার ভেতরে শাজাহানপুর ও আরমানিটোলায় অস্থায়ী পশুর হাট বসে প্রতি বছরই। বর্তমানে এলাকা দুটি করোনার রেড জোনের আওতায় রয়েছে। এছাড়া আরমানিটোলা হাটের অদূরে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত মহানগর হাসপাতালের অবস্থান। এমন পরিস্থিতিতে এ এলাকায় পশুর হাট বসলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যবিদরা।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, সামনেই পবিত্র ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। মাসের শুরুতেই পশুর হাটের ইজারা নির্ধারণ করার পরই শুরু হয় হাটের প্রস্তুতি। কিন্তু এবার মহামারি করোনার কারণে এখনো দুই সিটি চূড়ান্ত করতে পারেনি পশুর হাটের ইজারা। উত্তর সিটি করপোরেশনের ১২টি হাটের প্রস্তাবনা থাকলেও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় পশুর হাট কমানোর কথা জানান মেয়র।
ইতোমধ্যে উত্তর সিটির সবচে বড় পশুর হাট আফতাবনগর ও তেজগাঁও গরুর হাটের ইজারা বাতিল করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এ প্রসঙ্গে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, গতবারের চেয়ে এবারে আমাদের হাটের সংখ্যা কমবেই। যে জায়গাতে হাট করে আমরা বেশি ইনকাম করতাম সেখানে আমরা হাট করছি না। জানা গেছে, উত্তর সিটির মোহাম্মদপুরের বসিলা, উত্তরার কাওলা ও খিলক্ষেতের ডুমনি এ তিনটি হাটের ইজারা দেয়া হয়েছে অনেকটা নামমাত্রে।
করোনায় পাইকার, ফড়িয়া ও ক্রেতা নিয়ে অনেকটা সংশয়ে ইজারাদাররা। ইজারাদার আবুল হোসেন সরকার বলেন, আশা করি আমরা দূরত্ব বজায় রেখেই করতে পারব। তারপরেও গরুর হাট যত দূরত্বে রাখেন না কেন গরুর কাছে তো যেতে হবে। তবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ১৪টি হাটের মধ্যে চারটি পশুর হাটের সুপারিশ করলেও চূড়ান্ত হয়নি একটিও। অবশ্য করোনাকালে সংক্রমণ রোধে প্রথাগত হাটের বিকল্প ভাবনা নগরবিদদের। এ প্রসঙ্গে নগরবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, যদি এবারো ইজারার গরুর হাটের ব্যবসা করা হয়, তবে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য হবে হুমকি স্বরূপ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন