শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুড়িগ্রামে বন্যায় ৩ কোটি টাকার মাছের ক্ষতি

ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত ৮৮জন: ৪টি স্কুল নদীগর্ভে

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০২০, ১১:৪৬ এএম

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি বিপদসীমার নীচে নামলেও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। সোমবার ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া প৪য়েন্টে বিপদসীমার ২০ সে.মি. এবং চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৯ সে.মি. নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ধরলার পানি কুড়িগ্রাম ব্রীজ পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ফলে কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মৎস ও কৃষি খাতে। বন্যার পানিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৮জন। নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও ৮৮জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। 

কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ এই প্রতিবেদককে সর্বশেষ তথ্য জানান। তাদের তথ্যমতে,
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা: হাবিবুর রহমান জানান, বন্যার ফলে ৮জন মারা গেছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। এছাড়াও পানিবাহীত রোগ দেখা দেয়ায় ৮৮জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
জেলা মৎস কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, জেলায় ১৩৭ হেক্টর আয়তনের ৮৫৪টি পুকুর পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়েছে। এরফলে ১৯০টন মাছ ও ৩৮ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকার পোনা ভেসে গেছে। প্রায় ২০ লক্ষ টাকার পুকুর পাড়ের ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকার। বন্যার ফলে জেলার নিবন্ধিত ১৮হাজার মৎমজীবীর হ্যাচারী উৎপাদন ও বিপনন হুমকীর মুখে পড়েছে।
তিনি আরো জানান,জেলার ২২২টি বিলের মধ্যে ২০টি বিলে মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান প্রধান জানান, আমন ধানের বীজতলার ক্ষতি পুষিয়ে আনতে কৃষক পর্যায়ে কমিউনিটি বীজতলা স্থাপন করা হবে। বীজতলা তৈরীতে কৃষকের মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে ১৯৩৫ টাকা করে খুব শীঘ্রই প্রদান করা হবে বলে।

জেলার ১৯টি পয়েন্টে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে বলে জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম। তিনি জানান, উলিপুর-চিলমারী ও রৌমারী-রাজিবপুরে দুটি স্থায়ী তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ করোনার কারণে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। এখনো ঠিকাদারদের ৭০ কোটি টাকার বিল বাকী রয়েছে। এছাড়াও চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নে ভাঙন ঠেকাতে ৪ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ পাঠানো হয়েছে । পাশাপাশি সাহেবের আলগা ও কর্তিমারীতে ভাঙন ঠেকাতে মেরামতকরণ কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।

এদিকে জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম জানান, চলতি বন্যায় ৪৩টি স্কুল পানিবন্দী হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ১০টি স্কুল।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বন্যায় ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। আরো একটি ভাঙনের মুখে রয়েছে। এছাড়াও ১৫২টি বিদ্যালয়ের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ২৪টি স্কুল বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভাঙনকৃত স্কুলগুলোর মধ্যে দুটি উলিপুর ও অপর দুটি রৌমারী উপজেলার। স্কুল ৪টি হল চর বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়াডারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বলদমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ফলুয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও উলিপুরের সুখেরবাতির চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে রয়েছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কুড়িগ্রাম -৪ আসনের সংসদ সদস্য মো: জাকির হোসেন জানান, কুড়িগ্রামের মানুষের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আলাদা দৃষ্টি রয়েছে। তিনি জানান, জেলার ৩১৫ কিলোমিটার নদীর তীর স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য কাজ করা হচ্ছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা পেলে সরকার সহায়তার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেবে। আশা করি আগামি ৫/৭বছরের মধ্যে আমরা ভাল ফলাফল পাবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন