বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সিংড়ায় সমাজচ্যুত ৪টি পরিবার!

কথা বললে জরিমানা ৫’শ টাকা

সিংড়া (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০২০, ৮:৩৪ পিএম

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের বুড়িকদমা গ্রামের চারটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।ওই সমাজচ্যুত পরিবার গুলোর সাথে কথা বললে ৫’শ টাকা জরিমানা গুণতে হবে প্রতিবেশীদের। মাতব্বরদের অত্যাচারে ঘর-বাড়ি ছেড়ে স্ত্রী-সন্তান সহ শাশুড়িকে নিয়ে পাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন ফটিক নামের এক ব্যক্তি।
জানা যায়, প্রায় ৮ মাস আগে উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের বুড়িকদমা এলাকায় জিল্লুর রহমান নামের এক প্রভাবশালী সরকারী জমি দখল করে ঘর-বাড়ি তৈরী করে। ওই গ্রামের মান্নান নামের এক ব্যক্তি জিল্লুর রহমানের দখলকৃত জমিতে মাদ্রাসা নির্মানের প্রস্তাব দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েক প্রভাবশালী মান্নানের ভোগদখলকৃত জমিতে ঈদগাহ মাঠ নির্মাণের পাল্টা প্রস্তাব দেয়।ওই প্রস্তাবে মান্নান ও তাঁর ভাইয়েরা অস্বীকৃতি জানালে মান্নানের দখলকৃত জমির গাছপালা ও সবজি বাগান বিনষ্ট করা হয়। প্রতিবাদ করলে মান্নান ও তাঁর ভাইদের মারপিট করে। বিষয়টি সিংড়া থানার ওসি ও সার্কেল এএসপি জামিল আক্তারকে অবহিত করে মান্নান ও তাঁর ভাইয়েরা। পরে ইটালী ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম দু’পক্ষকে নিয়ে শালিসে বৈঠক করে।
ওই বৈঠকে মাটিভরাট ও গাছের ক্ষতিপূরণ বাবদ মান্নান পাবে ৭৫ হাজার টাকা এবং নতুন ঈদগাহ মাঠ নির্মাণে মান্নানের ভোগদখলকৃত জমি ছেড়ে দিতে বলা হয়। মান্নান চেয়ারম্যানের প্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় মান্নান ও তাঁর ভাইদের গ্রাম থেকে বিতাড়িত করতে সমাজচ্যুত করে মান্নান জানিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামে কবরস্থান-মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠ থাকা সত্বেও এলাকার মাতব্বর রেজাউল, আব্দুর রশিদ, আনিসুর, হাবিল, হামিদুল,রশিদ,আনসার ও রনির নেতৃত্বে মান্নানের জমিতে আরেকটি ঈদগাহ মাঠ করে। অসহায় মান্নান বলেন,বাড়ির পাশে মসজিদে নির্মানে আমরা দু’শতক জমি দান করে করেছি। অবশিষ্ট জমিতে মাদ্রাসা নির্মাণের পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু গ্রামের কয়েক প্রভাবশালী জোর করে ওই জমি দখল করে আমাদেরকে একঘরে করে রেখেছে। প্রতিবেশি জাহিদুল ইসলাম বলেন,আব্দুল মান্নান ও তাঁর ভাইয়েরা খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের উপর অন্যায়, জুলুম করা হচ্ছে। আমি সত্য কথা বলায় আমার বাড়ির সামনে দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। গ্রাম থেকে বিতাড়িত ফটিক বলেন, আমি নিরুপায় হয়ে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। মান্নানের পক্ষে কথা বলায় আমাকে মারপিটের হুমকি দেয়া হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মান্নান ও তাদের পরিবারকে একঘরে করে রেখেছে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি। ইটালী ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, তাদের একঘরে করে রাখার বিষয়টি আমি কখনো শুনিনি। তবে সত্যতা পাওয়া গেলে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করবো।
সিংড়া থানার ওসি নুর-এ আলম সিদ্দীকি জানান,সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এর আগে মান্নানের ভাইকে মারপিটের একটি মামলা হয়েছিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন