দীর্ঘ এক দশকেও চালু হচ্ছেনা পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার। ব্যবহারের অভাবে নষ্ট হওয়ার পথে অপারেশন থিয়েটারের মূল্যবান যন্ত্র সামগ্রী। অপারেশন থিয়েটার চালু না হওয়ায় সরকারি স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন অভাবি পরিবারের প্রসূতি মায়েরা। তাই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার চালুর দাবীতে মানববন্ধনও করেছন স্থানীয় সচেতন সমাজ।
জানাযায়, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার। গাইনী, অর্থপোডিক্স কনসালটেন্ট এবং অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার অভাব জনিত কারণে অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ধুলাবালি আর মরিচা পড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে অপারেশন থিয়েটারের অনেক যন্ত্রপাতি। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই উপজেলার অপারেশন থিয়েটারের চালু হচ্ছেনা বলে মনে করছেন উপজেলার সচেতনজনেরা।
তবে পিরোজপুর সিভিল সার্জন ডা: হাসানাত ইউসুফ জাকি বলেন, নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারশেন থিয়েটারটি চালু করার জন্য তিনি প্রতি মাসেই উপরে রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন। কিন্তু অগ্রগতি কোন ফল আসছে না।
জেলার সাতটি উপজেলার মধ্য বেশ জনবহুল এলাকা পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা। প্রতিদিন এখানকার মানুষসহ সীমান্তবর্তী নাজিরপুর,বানারীপাড়া ও কাউখালি উপজেলার নানা রোগীরা আসে এখানে চিকিৎসা নিতে। এসব মানুষের মধ্য অধিকাংশই রয়েছেন সিজারিয়ান ও ভাঙাচোড়া রোগী। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারটি বন্ধ থাকায় তারা বাধ্য হয়ে ছুটছেন এখানকার বেসরকারি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। কেউ কেউ প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার ভয়ে পাড়ি দিচ্ছেন, বিভাগীয় শহরের সরকারি হাসপাতালে। আর ওটি বন্ধ থাকার কারনেই ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সার্জারি ও গাইনি রোগীরা কোনো সেবা পাচ্ছেন না।
তবে উপজেলা এ হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার আসাদুজ্জামান বলেছেন, হাসপাতালে অপারেশন করার প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও লোকবলের অভাবে এখানকার ওটি বিভাগ চালু হচ্ছেনা। ওটি চালু হলে বিশেষকরে অনেক দরিদ্র মানুষের কষ্ট লাগব হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, অপারেশন থিয়েটার চালু করার জন্য তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ওটিতে যা আছে তা দিয়ে ওটি করা সম্ভব। কিন্তু গাইনি কনসালটেন্ট, অর্থপেডিক কনসালটেন্ট এবং অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার না থাকায় তারা ওটি চালু করতে পারছেন না।
জানাযায়, ১৯৬৫ সালে তিনতলা ভবনে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট নেছারাবাদ উপজেলার স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সেটি চালু হয়।পরে ২০০৭ সালে হাসপাতালটির পুরানো ভবনের পাশে ১৯ বেডের একটি নতুন ভবন তৈরী করে হাসপাতালটি ৫০ বেডে উন্নীত করা হয়।সে থেকে ক্রমেই এ হাসপাতালে পদচারনা বাড়ে প্রসূতী মা সহ অনেক ভাঙ্গাচোড়া রোগীর। কিন্তু এখানে এক দশকেও ওটি বিভাগ চালু না হওয়ার সুযোগ নিয়ে মাত্র কয়েক বছরে হাসপাতালের আশপাশ সহ ভিবিন্ন এলাকায় বাড়ছে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক সংখ্যা। গড়ে ওঠা এসব ক্লিনিক ও হাসপাতালের অধিকাংশেরই সেবার মান নিয়ে রয়েছে মানুষজনর নানান প্রশ্ন। তবে উপজেলার সন্ধ্যা নদীর পশ্চিমপাড়স্থ অধিকাংশ প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সেবার মান নিয়ে মানুষের ক্ষোভের যেন অন্ত নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন