মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিদেশি শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাসে উপস্থিতির শর্ত ট্রাম্পের

অনলাইন শিক্ষার্থীদের দেশ ত্যাগের নির্দেশ, অন্যথায় চরম পরিণতি ভোগের হুঁশিয়ারি

সিএনএন | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনা মহামারিতে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইনে পড়াশুনার জন্যে অবস্থানকারী বিদেশি শিক্ষার্থীদের দেশত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এসব শিক্ষার্থীর ভিসা ফিরিয়ে নেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গেল সোমবার দেশটির ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসিই ঘোষণা করেছে, যেসব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে ডিগ্রি অর্জন করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক কোর্স শেষ হলে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে, অন্যথায় বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে অবস্থান করতে হবে।

আইসিই’র তরফ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, নন-ইমিগ্র্যান্ট এফ-১ ও এম-১ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা কেবলমাত্র অনলাইনে ক্লাস করছেন তাঁদের ভিসা ফিরিয়ে নেয়া হবে। তারা জানিয়েছে, এ জাতীয় শিক্ষার্থীর আমেরিকায় প্রবেশের জন্যে নতুন করে আর ভিসা তো দেয়া হবেই না, পাশাপাশি, যেসব বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে অনলাইনে পড়াশুনা করছেন তাদেরও আমেরিকা ছেড়ে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে হবে। সেইসঙ্গে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে একথাও বলা হয়েছে যে, যদি ছাত্র-ছাত্রীরা এই নির্দেশ না মানেন তবে তাদের চরম পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে।

আইসিই আরো বলেছে, যেসব শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট ভিসার আওতায় পড়েন তারা সম্পূর্ণ অনলাইন কোর্সের বোঝা গ্রহণ না করে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতে পারেন।’ তারা আরো যোগ করেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর পরবর্তী সেমিস্টারগুলোর জন্য সম্পূর্ণভাবে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষাকার্যক্রম চালানো প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদান করবে না এবং মার্কিন শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ এই শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেবে না।’ সংস্থাটি সুপারিশ করেছে যে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত পদক্ষেপে স্কুলগুলিতে স্বশরীরে স্থানান্তরিত হওয়ার মতো অন্যান্য ব্যবস্থা বিবেচনা করুক। তবে, অনলাইনে এবং সশরীরে শ্রেণীকক্ষে উপস্থিতির সমন্বয়ে হাইব্রিড শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনাকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য নিয়মের ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে অভিবাসী উকিল, শিল্পসংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন ঘটাতে এবং বৈধ অভিবাসন কমাতে করোনা মহামারীর সুযোগ গ্রহণ করেছে। ট্রাম্প সরকার যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার এক নীতি তৈরি করেছে এবং করোনা মহামারির দোহাই দিয়ে অভিবাসীদের দেশটিতে প্রবেশে নিষেধ করেছে। এর আগে, গত মাসে হোয়াইট হাউস যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসন কমাতে অভিবাসী কর্মসংস্থানে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটি ঘোষণা জারি করে। এর মাধ্যমে বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের ভবিষ্যত পরিকল্পনাগুলিতে সফল করতে কয়েকশ’ অভিবাসী এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বেকায়দায় ফেলা হয়। ঘোষণায় প্রশাসন যুক্তি দিয়েছিল যে, করোনাভাইরাস সৃষ্ট নজিরবিহীন পরিস্থিতির কারণে কর্মসংস্থানভিত্তিক ভিসা স্থগিত করা হয়েছে।

করোনাভাইরাস জনিত মহামারির কারণে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে পাঠ্যক্রম স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে। যদিও শিক্ষার্থীদের কাছে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে পাঠ্যক্রমে অংশগ্রহণের বিকল্প থাকতে পারে, তবে করোনাভাইরাস নিয়ে ক্রমাগত উদ্বেগের মধ্যে তাদের উপস্থিতিতে অসুবিধা হতে পারে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য এক্ষেত্রে তাদের পরবর্তী সেমিস্টারের পরিকল্পনার বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি। বেশিরভাগ কলেজ যদিও হাইব্রিড মডেলে পাঠদানের ঘোষণা করেছিল, তবে হার্ভার্ডের মতো কিছু বড় বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করার ঘোষণা দিয়েছে। ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশ অনুসারে, ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লাখেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী অবস্থান করছে, যাদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সউদী আরব এবং কানাডার শিক্ষার্থীরাও রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
EUROPE ৮ জুলাই, ২০২০, ৬:৪২ এএম says : 0
European countries have been saying to America and Africa that Bangladesh is richest country. Actually, Muslim doesn't have money across the world.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন