কুষ্টিয়ায় কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় চারজন রোগী মারা গেছেন। এর মধ্যে তিনজন নারী ও একজন পুরুষ। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার জেলায় কোভিড রোগী ৮০০ ছাড়িয়েছে। গতকাল রাতে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে কুষ্টিয়ার ১০১টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ২৭ জনকে করোনা পজিটিভ বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৮১৫।
এদিকে আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে কুষ্টিয়া ও ভেড়ামারা পৌরসভায় ১৪ দিনের লকডাউন শেষে সব ধরনের দোকানপাট ও শপিং মল খুলে দেওয়া হয়েছে। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা শেষে গতকাল রাতে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন এ সিদ্ধান্ত দেন। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী এতথ্য নিশ্চিত করেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, মারা যাওয়া চারজনই কুষ্টিয়া পৌরসভার ত্রিমোহনী, কমলাপুর, স্টেডিয়ামপাড়া বা কালীশংকরপুরের বাসিন্দা। তাঁরা প্রত্যেকেই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এ পর্যন্ত জেলায় ১৯ জন কোভিডে মারা গেলেন। আক্রান্ত অনুপাতে মৃত্যু হার ২ দশমিক ৩৩।
নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ১৮ জন( পূর্ব মজমপুর ১ জন, চৌড়হাস ৩ জন, কুমারগাড়া ১ জন, হাউজিং ব্লক ডি ১ জন, আড়ুয়াপাড়া ১ জন, কোর্টপাড়া ২ জন, উদিবাড়িয়া ১ জন, কেজেএইচ ২ জন, থানাপাড়া ২ জন, পিয়ারাতলা ১ জন, পুলিশ লাইন ১ জন, কাস্টমস মোড় ১ জন, মঙ্গলবাড়িয়া ১ জন), কুমারখালী উপজেলায় ৬ জন (কুণ্ডপাড়া ১ জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১ জন, খয়েরচারা ১ জন, উত্তর কয়া ১ জন, বানিয়াপাড়া ১ জন, ছেউড়িয়া ১ জন, সারকান্দি ১ জন), মিরপুরে ১ জন( উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) ও খোকসা উপজেলার দুজন ( আমবাড়িয়া)। সব মিলিয়ে এযাবৎ জেলায় ৮১৬ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হলেন। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ছাড় পেয়েছেন ৩৮৩ জন। বাড়িতে আইসোলেশনে (বিচ্ছিন্ন থেকে) চিকিৎসাধীন ৩৭৮ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪০ জন। মারা গেছেন ১৭ জন। গত সোমবার রাতে কুমারখালী কুণ্ডুপাড়ার এক বাসিন্দা ৭২ বছর বয়স্ক একজন পুরুষ রোগী মৃত্যুবরণ করেন। গতকাল দুপুরে শহরের চৌড়হাস এলাকায় এক নারী ও রাত সাড়ে আটটায় ত্রিমোহনী এলাকায় এক নারী মারা যান।
জুলাই মাসের গত সাত দিনে জেলায় ১৯৪ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ছয়জন। দুটি পৌরসভায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হলেও ভেড়ামারায় তা অনেকটা কার্যকর হয়েছে। সেখানে ১৪ দিনে রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কমেছে। তবে কুষ্টিয়া পৌরসভায় আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটিই বেড়েছে। এরই মধ্যে আজ সকাল থেকে লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সুশীল মহল ও সচেতন জনগণের অনেকে আবার এ সিদ্ধান্তের বিপরীতে মত দিয়ে বলেছেন এখনই লকডাউন প্রতাহার না করে আরো কিছু দিন লকডাউনের মেয়াদ বাড়ালে সুফল পাওয়া যেত । তাদের আশঙ্কা লকডাউনের মেয়াদ না বাড়ালে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন