বাংলাদেশের করোনা সার্টিফিকেট নিয়ে ইতালির গণমাধ্যমে জালিয়াতির খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সেখানে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন বাংলাদেশিরা। দেশটির সংবাদমাধ্যম গত দুদিন ধরে এ নিয়ে বেশ সরগরম। ফলে বড় ধরনের ইমেজ সংকটে পড়েছেন প্রবাসীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে। যাদের কারণেই দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার গুরুতর ঝুঁকেতে পড়েছে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি উঠেছে ফেইসবুকে।
ইতালিতে কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ৩৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। এরপর বাংলাদেশিদের ইতালিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। বুধবার রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট থেকে ১২৫ জন বাংলাদেশিকে নামতেই দেয়া হয়নি। তাদের আবারো ফেরত পাঠানো হয়।
ফেইসবুকে মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান লিখেছেন, ‘‘বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে খাটো করার অপরাধে রিজেন্টের মালিক সহ স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য সচিবের গ্রেফতার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জোর দাবি জানাচ্ছি। দেশটা কারো বাবার না।যে যখন ইচ্ছা খামখেয়ালি করে দেশটাকে বিশ্বের দরবারে ছোট করবে!’’
শ্যামল ক্রিষ্ণ মজুমদার লিখেছেন, ‘‘টেস্ট না করিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে গিয়ে ওখানে গিয়ে নামার পর ইতালি কতৃপক্ষ টেস্ট করে পজেটিভ পেয়েছে, তাদের কারনে সমগ্র বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ প্রশ্নের সম্মুখীন। দেশে ফেরায় পর প্রত্যেককে চরম শাস্তি দেয়া উচিৎ।’’
মুরতুজা চৌধুলী লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের করোনা পরীক্ষার ডাটাবেজ তৈরি হলোনা কেন? ডাটাব্যাজের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ভাবে নমুনা সংগ্রহ ও টেস্টের ফলাফল নিয়ন্ত্রণ ও তালিকা সংরক্ষণ করা হলে জালিয়াতি করার সুযোগ থাকতো না। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বলি কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগকে কেন ডিজিটালাইজ করা হলোনা?’’
মো. তাজ মোহাম্মাদ লিখেছেন, ‘‘সরকারের উচিত একটি নির্দিষ্ট হাসপাতালে প্রবাসীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণ করা। না হলে আস্তে আস্তে আমাদের প্রবাসীদের সব দেশের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।’’
রাসেল শেখ লিখেছেন, ‘‘চিন্তা করুন কতটা ভয়ঙ্কর মুখোশধারী এরা! এরকম মুখোশধারী সাহেদ একজন নয়।আমাদের চারপাশে এরকম শত হাজার মুখোশধারী সাহেদ আছে।যারা চেতনার দোহাই দিয়ে তেলাবাজি দালালির সুরে সুন্দর সুন্দর বয়ান করে উপরে ভাল মানুষ সেজে ভিতরে ভয়ঙ্কর মুখোশ পরিধান করে আছে।’’
বেলাল হোসাইন লিখেছেন, ‘‘ইতালি থেকে ফেরত আসা মাত্র উনাদেরকে জিজ্ঞেস করা হউক কে কোন মেডিকেল থেকে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়েছে?জড়িতদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হউক।’’
মো. বেলাল লিখেছেন, ‘‘সব শেশ করে দিল। আমার মনে হয় এগুলা দেখে অন্যদেশও এখন মুখ ফিরিয়ে নিবে সর্তক হয়ে যাবে। বাংলাদেশের শ্রর্ম বাজারটা ধ্বংসকারিদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হউক।’’
মোঃ কাইয়ূম সরকার লিখেছেন, ‘‘এ লজ্জা কার, একটা ব্যক্তির জন্য পুরা জাতির মাথা ছোট হয়েছে, এখন দেখার বিষয় সরকার এ ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেয়। এখানে আবার জামাত-বিএনপি গন্ধ খুঁজে পাবে কিনা যাক সময় বলে দিবে।’’
শাহানার বেগম লিখেছেন, ‘‘লজ্জা, লজ্জা! আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের সুনাম নষ্ট করল অথচ এখনও গ্রেফতার হয়নি। জড়িতদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হউক।’’
ইতালির গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র ৩৬ ইউরো বাংলাদেশী টাকায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা হলেই বাংলাদেশে মিলছে করোনামুক্তের ভুয়া সার্টিফিকেট। আর এসব সার্টিফিকেট নিয়েই কয়েক’শ বাংলাদেশী ইতোমধ্যে ইতালি এসেছেন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে এখানে বসবাসরত মানুষেরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন