শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পলাতক সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রধান সহযোগী গ্রেফতার ভায়রাকে জিজ্ঞাসাবাদ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

নানা অনিয়ম, প্রতারণা, সরকারের সাথে চুক্তি ভঙ্গ ও করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগে রিজেন্ট গ্রæপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে র‌্যাব। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। গতকাল পুলিশের পক্ষ থেকে ইমিগ্রেশন বিভাগকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়, প্রতারণা মামলার আসামি সাহেদের বিরুদ্ধে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনি যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে। গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। পরে রিজেন্টের প্রধান কার্যালয়, উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়। গত ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। এতে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখা থেকে আটক ৭ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে তাদের ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‌্যাব। এছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ নয়জনকে পলাতক আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সাহেদের বিষয়ে অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, অনিয়ম, অপরাধ ও প্রতারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো চেয়ারম্যান (সাহেদ) নিজেই ডিল করেছেন, অন্যান্য কয়েকজন কর্মীও ছিলেন। এখন চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছেন। তাকে এবং জড়িত সবাইকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।
সাহেদের সহযোগী গ্রেফতার
রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদের অন্যতম সহযোগী তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গত বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি সুজয় সরকার জানান, রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

সাহেদের ভায়রাকে জিজ্ঞাসাবাদ
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে চিকিৎসার নামে প্রতারণার ঘটনায় ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদের ভায়রা মোহাম্মদ আলী বশিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র‌্যাব। র‌্যাব সদর দফতরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আশিক বিল্লাহ বলেন, গত বুধবার রাতে বনানী থেকে নাটক প্রযোজনার প্রতিষ্ঠান ‘টেলিহোমের’ মালিক মোহাম্মদ আলী বশিরকে র‌্যাব সদর দফতরে নেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মূল আসামি রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদকে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।

র‌্যাবের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, রিজেন্টের চেয়ারম্যানের সাহেদ গংদের বিরুদ্ধে বিস্তর নানা অপকর্মের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য র‌্যাব তদন্ত করে দেখছে। এর মধ্যে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের ২/এ সড়কের ১৪ নম্বর বাড়িটির দুইটি ফ্লোর ভাড়া নিয়েছেন সাহেদ। সেখানেই তিনি তার গ্রæপের অফিস করেছেন। এই অফিসের ভাড়াও নিয়মিত দেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। ভবনটির তৃতীয় ফ্লোরের মালিক এক নারী। ওই নারী বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। তার মা জাহানারা কবির বলেন, আমার স্বামী লুৎফুল কবির পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ছিলেন। আমার মেয়েকে ১৪ নম্বর বাড়িতে একটি ইউনিট কিনে দিয়েছি। আমার মেয়ে সেটি ভাড়া দিয়েছে। কিন্তু সাহেদ নিয়মতি ভাড়া দেয় না। সে নিজেকে অনেক ক্ষমতাধর বলেও পরিচয় দেয়। দুই বছর ধরে সে ওই বাড়িতে আছে। আমরা তাকে তিনবার নোটিশ দিয়েছি, তারপরও বাড়ি ছাড়ে না। ভাড়াও দেয় না।
র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, জুলফিকার আলী ভুট্টো নামে একজন পাথর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৪৫ লাখ টাকার পাথর নিয়ে তার টাকা পরিশোধ করেননি সাহেদ। উল্টো তাকে অফিসে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেছেন। জুলফিকার আলী ভুট্টো র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করেন, আমি তার কাছে টাকার জন্য গেলাম। তখন আমার সঙ্গে তার লোকজন খারাপ ব্যবহার করছে। আমাকে হুমকি দেয়।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন