ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ওয়ারীতে (৪১ নম্বর ওয়ার্ড) কার্যত নামসর্বস্ব লকডাউন চলছে। সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় ডাক্তার, নার্স, সংবাদকর্মী ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্য সবার ঘরে বসে থাকার কথা। কার্যত যারাই ইচ্ছে করছেন, তারাই ঘর থেকে বের হতে পারছেন। গতকাল দেখা গেল, আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি লকডাউনের মধ্যেই কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে দলবেঁধে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে গেলেন। অথচ মাইকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে ৫ জনের বেশি মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে যাবেন না। ঘরে ঘরে নামাজ আদায় করুন।
লকডাউনে ওয়ারীর সবগুলো রাস্তা বন্ধ করে মাত্র দুটি রাস্তা খোলা রাখা হয়েছিল যাতায়াতের জন্য। সে রাস্তা দিয়েও দেদার বের হচ্ছেন মানুষ। গেটে পুলিশ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা একটু-আধটু বাঁধা দিলেও বের হতে ইচ্ছুক ব্যক্তি একটু ঝাড়ি দিলেই তারা না করছেন না। ফলে নামকাওয়াস্তে লকডাউন চলছে।
জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, লকডাউন পরিকল্পিতভাবে করতে না পারলে সফলতা পাওয়া যাবে না। আপনাকে নাগরিককে সম্পৃক্ত করতে হবে। নাগরিকের চাহিদা কি তা বুঝতে হবে। গায়ের জোরে লকডাউন করে তা সফলভাবে কার্যকর করা যাবে না।
এদিকে ওয়ারী এলাকায় স্থাপিত করোনার নমুনা সংগ্রহ বুথ স্থাপন করা হয়েছে। গতকাল কারো রক্ত সংগ্রহ করা হয়নি। তবে এর আগে যারা নমুনা দিয়েছেন তাদের প্রায় ৫০ শতাংশই করোনা পজিটিভ হিসেবে ধরা পড়ছে। এ অবস্থায় ওয়ারী এলাকার লকডাউন শক্তভাবে পালন করার কথা।
ওয়ারীতে লকডাউনের সপ্তম দিন গতকাল দেখা গেছে একেবারেই ঢিলেঢালা ভাব, আগের ৬ দিনের মতোই। এলাকায় একটি ওষুধ কোম্পানির কারখানা চালু আছে। তিন শিফটে কাজ করছেন কর্মচারী-কর্মকর্তারা। বেশিরভাগ কর্মচারী অন্য এলাকার বাসিন্দা। সাধারণ মানুষ নিজেদের মতো করে চলাফেরা করছেন। তবে শুক্রবার হওয়ায় গতকাল রাস্তায় লোকসমাগম ছিল কম। তবে স্থানীয় কাউন্সিলর বিভিন্ন বাসাবাড়িতে প্রয়োজনীয় সবজি ও পণ্য পৌঁছে দিয়েছেন বলে কয়েকজন জানান।
টিপু সুলতান রোডের একজন বাসিন্দা বিক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, ছেলে কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সকলকে লকডাউন মানতে বাধ্য করছেন। অথচ তার বাবা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা লকডাউন মানছেন না। তিনি দলবল নিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যান। আর আমাদের ঘর থেকে বের হতে দেয়া হয় না। এ কেমন দ্বিমুখী নীতি?
উল্লেখ্য, ওয়ারী, টিপু সুলতান রোড, যোগীনগর রোড ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক (জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন), লারমিনি স্ট্রিট, হেয়ার স্ট্রিট, ওয়্যার স্ট্রিট, র্যাংকিং স্ট্রিট ও নবাব স্ট্রিটে লকডাউন চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন